ব্যাংক ব্যবসায় মুনাফা কমেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জনগণ। কিন্তু ব্যাংক মালিকদের লাভ বেড়েছে বহুগুণ। কারণ এক ব্যাংক মালিক অন্য ব্যাংক মালিকের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু কেউ কাউকো ঋণের অর্থ পরিশোধ করেন না। এ মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট(পিআরাআই) নির্বাহী পরিচালক ড.আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম(ইআরএফ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি ও এলডিসি উত্তোরণ’শীর্ষক এক কর্মশালায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।
ইআরএফ ও পিআরআই যৌথভাবে কর্মশালা আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার, গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আহসান মনসুর বলেন, গত দশ বছরে ব্যাংকিংখাতে ‘রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট’ ১০ ভাগে নেমে এসেছে। এই অবস্থা জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, শেয়ার বাজারে ব্যাংকের শেয়ার বিনিয়োগের হার কমে এসেছে। কিন্তু একই সময় দেখা গেছে মালিকদের মুনাফা বেড়েছে। কারণ একজন ব্যাংক মালিক নিজের ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে না পারলেও অন্য ব্যাংক থেকে ঠিকই ঋণ নিচ্ছেন। নিজেদের ব্যবসায় খাটাচ্ছেন। কিন্তুএই ঋণ আবার তারা পরিশোধও করছেন না।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পরিচালকদের ঋণ ভাগাভাগির যে তথ্য উঠে এসেছে আমার মনে হয় এর বাস্তব চিত্র এর দ্বিগুণ হবে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯ শতাংশ বলা হলেও প্রকৃত খেলাপি ২৩ শতাংশ। কারণ সরকার পুনঃতফসিল ও অবলোপন করে ঋণের হার কমিয়ে আনছে। এই প্রক্রিয়া সরকার ইচ্ছে করলেও খেলাপি ঋণের হার ‘শূণ্য’তে নামিয়ে আনাও সম্ভব।
প্রশ্নোত্তর পর্বে পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সম্প্রতি ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানোর যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা মোটেও যৌক্তিক নয়। এটি বাস্তবায়নের কিছুদিনের মধ্যেই অর্থনীতিতে ভয়াবহ চিত্র দেখা যাবে। ক্ষুদ্র ও মাঝাড়ি শিল্পে ব্যাংকগুলো ঋণ দেবে না। কারণ এই ঋণের পরিচালন ব্যয় বেশি। তখন ইচ্ছা করেই ব্যাংকগুলো এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ করবে না। একদিকে খেলাপি, মূল্যস্ফীতি অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানির অবনমন অর্থনীতিকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পিআরআই গবেষণা পরিচালক ড. এম এ রাজ্জাক এলডিসি উত্তোরনের পর তিন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেন। এগুলো হলো- বাণিজ্যিক চাপ সৃষ্টি, নীতিমালা তৈরিতে সুযোগ সংকোচন এবং উন্নয়ন সাহায্য কমে আসা। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগে থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।
ড. রাজ্জাক বলেন, স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ হবার কারণে পণ্য রফতানিতে জিরো ডিউটি বা শূন্য শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ।কিন্তু ২০২৪ সালের পর ন্যূনতম ২.৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক গুনতে হবে আমাদের। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সম্প্রতি ব্রেক্সিট এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাংলাদেশ।কারণ এর আগে বাংলাদেশের একটি পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দেশ থেকে অন্য দেশে পৌঁছানো সম্ভব ছিল।কিন্তু ব্রেক্সিট এর ফলে এখন এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
তিনি আরো জানান, তখন চাইলেই আমদানি রফতানি নীতিমালা পরিবর্তন করতে পারবে না বাংলাদেশ।দেশের জন্য ক্ষতিকারক হলেও ওয়াল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডাব্লিউটিও) এর নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। দেয়া যাবে না কেন রফতানি ভর্তুকি।এছাড়া বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে উন্নয়ন সহযোগিতার পরিমাণ কমে আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা