০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এইডসে দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু

এইডসে দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে গত এক বছরে এক হাজার ২৭৬ জন নতুন এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। আর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক বছরে মৃত্যু হয়েছে ২৬৬ জনের। বাংলাদেশে এইডস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এক বছরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি অনুষ্ঠানে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।

বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা: মো: মাহফুজুর রহমান সরকার এ বছরের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। গত ৩৪ বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে এইডস রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৯৮৪ জন। সাড়ে তিন দশকে মৃত্যু হয়েছে ২০৮৬ জনের।

১৯৮৯ সালে দেশে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এক বছরে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর এই সংখ্যাকে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘জাতীয় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে বাংলাদেশে নতুন করে এইডস শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৭৬ জনের, এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৯৪৭। আর এই সময়ে এইডসে আক্রান্তদের মধ্যে ২৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের বছর এ রোগে মারা যান ২৩২ জন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, গত এক বছরে আক্রান্তদের মধ্যে বাংলাদেশি ১ হাজার ১১৮ জন, বাকিরা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা। এক বছরে আক্রান্ত বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৪২ জন রোগী ঢাকার। এছাড়া চট্টগ্রামে ২৪৬, রাজশাহীতে ১৭৫, খুলনায় ১৪১, বরিশালে ৭৯, সিলেটে ৬১, ময়মনসিংহে ৪০ এবং রংপুর জেলায় ৩৪ জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে ৮৫০ জন পুরুষ; ২৭৮ জন নারী। আর ৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরুষ যৌনকর্মীদের মধ্যে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া পুরুষ সমকামীদের মধ্যেও এই রোগ ছড়াচ্ছে। যারা ইনজেকশন ব্যবহার করে শিরায় মাদক নেন, সেইসব মাদকসেবীরাও এইডসে আক্রান্ত হচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর ও আবদুন নূর তুষার।

ডা: এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘এইডস আক্রান্তদের দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না। সরকার এইডসের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ওষুধসহ সব ধরনের সেবা দিচ্ছে। আমাদের এখানে অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসায় রি-ইউজেবল অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়। ওই জিনিসগুলো জীবাণুমুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। না হলে দেখা যাবে একজন নির্দোষ ব্যক্তি যিনি একটি কোলনস্কপি, এন্ডোস্কপি বা যে কোনো এক একটা পরীক্ষা করাতে এসে আক্রান্ত হয়ে গেলেন।’

মৃত্যুর বেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য দুইটি কারণ উল্লেখ করে ডা: আহমেদুল কবীর বলেন, মানুষ সারাবিশ্বে এখন অবাধ যাতায়াত করছে। ফলে সংক্রামক রোগও দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছড়িয়ে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement