০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার টিকা নিবন্ধনে সহায়তা করবে স্বাস্থ্যকর্মীরা

প্রথম ধাপে ১৭টি ক্যাটাগরির পেশার মানুষের বাইরে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিরা টিকা নিতে পারবেন। - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে যারা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারছেন না, তাদের বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকার নিবন্ধনে সহায়তা করবেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা: নাসিমা সুলতানা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘অনেকে হয়তো ঠিকমতো অনলাইনে টিকা নেয়ার আবেদন করতে পারছেন না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন বিভিন্ন টিকার কার্যক্রমে বা স্বাস্থ্যসেবা দিতে যে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যান, তারা এদের টিকার নিবন্ধন করতে সহায়তা করবেন।’

তিনি জানান, এর বাইরে গ্রাম বা ইউনিয়নের তথ্যকেন্দ্রে যারা কাজ করেন, তারাও টিকার নিবন্ধনে সহায়তা করবেন।

বাংলাদেশে গত ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে ১৭টি ক্যাটাগরির পেশার মানুষের বাইরে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিরা টিকা নিতে পারবেন।

এ জন্য https://www.surokkha.gov.bd/ নামের ওয়েবসাইটে টিকা নিতে আগ্রহীদের নাম নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং একটি মোবাইল নম্বর লাগবে।

তিনি জানান, প্রথম দিকে নিবন্ধনের হার কিছুটা কম থাকলেও গত কয়েকদিনে তা বেড়েছে। বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ৮০ হাজার নিবন্ধন হয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা: নাসিমা সুলতানা।

টিকার নিবন্ধন হওয়ার হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে। এ কারণে হয়তো অনেকে মনে করতে পারেন, তার আর করোনা হবে না। এই জন্য টিকা নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তবে সবাইকে টিকা নেয়ার জন্য আমরা উৎসাহিত করছি।’

গত ২১ জানুয়ারি ভারত থেকে শুভেচ্ছা হিসাবে পাঠানো ২০ লাখ ডোজ টিকা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ২৫ জানুয়ারি ভারত থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ টিকাও বাংলাদেশে এসেছে।

অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের কোভিশিল্ড নামের টিকাটি ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট তৈরি করছে। সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে তিন কোটি টিকা কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।

টিকা প্রদানের বিভিন্ন ধাপ :
নিবন্ধন : জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে ব্যক্তি নিবন্ধন
ভ্যাকসিন কার্ড : ওয়েব পোর্টাল থেকে ভ্যাকসিন কার্ড সংগ্রহ
এসএমএস বার্তা প্রেরণ : ভ্যাকসিন প্রদানের তারিখ ও তথ্য প্রেরণ
প্রথম ডোজ : নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে প্রদান
দ্বিতীয় ডোজ : নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে প্রদান
ভ্যাকসিন সনদ : দুইটি ডোজ নেওয়ার পর পোর্টাল থেকে সংগ্রহ

রোগী শনাক্ত কমেছে
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস দৈনিক রোগী শনাক্তের হার তিন শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৯৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

তাতে দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৯২ শতাংশ।

বাংলাদেশে মোট রোগীর সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৫ জন।

রোগী শনাক্তের সংখ্যা কম হওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা: নাসিমা সুলতানা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘টানা ১৫ দিন এটা পাঁচ শতাংশের নিচে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তা তিন শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।’

‘স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, টানা একমাস যদি করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে থাকে, তাহলে সে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত বিশ্বে সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানোর জন্য যেভাবে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সে তুলনায় বাংলাদেশে তেমন কিছুই করা হয়নি। এই বিষয়টি কৌতূহল তৈরি করেছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: বেনজীর আহমেদের মনে।

এর দুইটি কারণ থাকতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন।

‘হয়তো তাপমাত্রা এটা কমাতে সাহায্য করেছে। সেই সাথে করোনাভাইরাসের যে ধরনটা বাংলাদেশে রয়েছে, সেটা হয়তো ততো বেশি সংক্রামক নয়,’ তিনি বলছেন।

তবে গবেষণা ছাড়া কোনোকিছুই নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement