১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫
`


দুই মন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার বিশ্লেষণ

দুই মন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার বিশ্লেষণ - ছবি : সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের ভারত সফর আটকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোদি সরকারকে কড়া বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে কলকাতার জনপ্রিয় পত্রিকা আনন্দবাজার পত্রিকা।

শুক্রবার ‘পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর আটকে বার্তা হাসিনার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে পত্রিকাটি।

দিল্লি ডায়ালগ ও ইন্ডিয়ান ওশান ডায়ালগ উপলক্ষে তিন দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। তার আগে দুপুরে হঠাৎ করেই এই সফর বাতিলের কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার আমন্ত্রণে শুক্রবার সকাল ১১টায় সিলেটের তামাবিল হয়ে মেঘালয়ে যাওয়ার কথা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তার আগের দিন রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু মন্ত্রীর এই সফর স্থগিতের কথা জানান।

ভারতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যেই বাংলাদেশের দুই মন্ত্রীর দেশটি সফর বাতিলের এ সিদ্ধান্ত আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নয়াদিল্লির বিমানে ওঠার কয়েক ঘণ্টা আগে সফর বাতিল করলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ভারত ওশিয়ান সংলাপে যোগ দিতে তিন দিনের এই সফর বাতিলের কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) এবং বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস (১৩ ডিসেম্বর) সামনেই। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত থাকতে হবে তাকে। একই সময়ে ওশিয়ান সংলাপের তারিখ পড়ায় তার আসা হল না।

শুক্রবার মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার আমন্ত্রণে শিলংয়ে যাওয়ার কথা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের। রাতে তার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরে ‘উপযুক্ত সময়’ মন্ত্রী এই সফরে যাবেন।

প্রশ্ন উঠেছে, যে সব অনুষ্ঠানের কারণ দেখিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বাতিল করা হলো, সেগুলো বহু বছর ধরে ওই দিনেই হয়! ওশিয়ান সংলাপের দিনও স্থির হয়েছে মাসখানেক আগে। তা হলে সম্মতি দিয়েও শেষ মুহূর্তে কেন বিমানে উঠলেন না মোমেন?’ কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘এই সিদ্ধান্ত সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বুধবার রাতে মোমেন হাসিনার বাসভবনে দেখা করতে গিয়েই এই নির্দেশ নিয়ে ফিরেছেন।

সম্প্রতি সংসদে পাশ হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি যে ঢাকার রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিসরে গভীর অসন্তোষ তৈরি করেছে তা, এই সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হয়ে গেল। মোদি সরকারকে এতটা কড়া বার্তা দিতে সাম্প্রতিক কালে দেখা যায়নি বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।’

তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বাতিল ও নাগরিকত্ব বিল পাসের বিষয়টিকে পৃথক ভাবে দেখছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে আনন্দবাজারের ওই প্রতিবেদনে।

রবীশ কুমারের বক্তব্য, অমিত শাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ভারত সরকার মনে করে সামরিক শাসন এবং খালেদা জিয়ার সময়েই সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসাই করেছেন অমিত শাহ।

আনন্দবাজার আরও জানায়, ঘটনার গতি থেকে স্পষ্ট যে বাংলাদেশের অসন্তোষ গভীরে। গতকাল রাতে নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়ার পর এই মোমেনই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছিলেন, ‘ভারতের নিজের দেশে অনেক সমস্যা রয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই করুক, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। বন্ধু দেশ হিসাবে আমরা আশা করছি ভারত এমন কিছু করবে না, যাতে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়।’

তার কথায়, ‘বাংলাদেশের মতো খুব কম দেশই রয়েছে যেখানে এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে। উনি (অমিত শাহ) আমাদের দেশে কয়েক মাস থাকলেই দেখতে পাবেন, এখানকার সম্প্রীতি নজির হতে পারে।’

বাংলাদেশ সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিল পাসের সময় যে ভাবে বার বার পাকিস্তানের সঙ্গে একই বন্ধনীতে বাংলাদেশকে রেখে সংখ্যালঘু নিপীড়নের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে, তা হাসিনা সরকারের জন্য বিড়ম্বনার।

এতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু ও হাসিনার প্রশংসা করার পাশাপাশি অমিত শাহ বলেছেন, ‘একাত্তরের পরেও সে-দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।’

ঢাকা মনে করে, কার সময়ে কী ঘটেছে সেই কাদা বার বার ছোঁড়ায় সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সার্বিক ভাবে একটি বার্তা গেছে। আওয়ামী লীগের কট্টর ইসলামি অংশকে ভারত-বিরোধিতার জিগির তোলায় উদ্বুদ্ধ করার পক্ষে তা যথেষ্ট। ভারত-বিদ্বেষী প্রচারের ইন্ধন জোগাতে শুরু করেছে বিএনপিও।

আনন্দবাজার আরও জানায়, গত অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যে কূটনৈতিক কর্মকর্তারা ভারতে এসেছিলেন, তাদের মতে— আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুসলিমদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের জনমানসে।

ঘরোয়া রাজনীতিতে তা হাসিনার পক্ষে অনুকূল নয়। আওয়ামী লীগের ইসলামপন্থী অংশ ভারত-বিরোধী প্রচার শুরু করলে ভারত-বাংলাদেশ কৌশলগত ও বাণিজ্যিক আদানপ্রদান বাধার মুখে পড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। মাঝখান থেকে চীনের প্রতি নির্ভরতা বাড়বে ঢাকার। সূত্র : আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement
রাজশাহীতে যানবাহন থেকে চাঁদা তোলা চক্রের ২১ সদস্য গ্রেফতার কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ সরকার সহিংসতা করে দায় বিএনপির ওপর চাপিয়েছে : নজরুল ইসলাম খান দুর্নীতির অভিযোগে শেরপুর পৌরসভায় আরো ২ জন সাময়িক বরখাস্ত নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বেলকুচিতে নিহত ১ এসএসসি পাশ করেছে মোটরসাইকেল না পেয়ে আত্মহত্যাকারী সোহান বজ্রপাত প্রতিরোধে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে ফ্রান্স লিফটে আটকে রোগীর মৃত্যু : স্বজনদের বিরুদ্ধে দরজা ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ মিয়ানমার সীমান্তে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরিয়ে আনতে বিজিবি কাজ করেছে : মহাপরিচালক ৫৭ বছর বয়সে ট্রাফিক পুলিশের এসএসসি পাস নানার বাড়িতে এসএসসি পাসের মিষ্টি দিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না চঞ্চলের

সকল