২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সায়ীদ আবুবকর সৃজিত নবিনামা

-

কবি সায়ীদ আবুবকর ‘নবিনামা’ মহাকাব্য লিখে দুঃসাহসিকতার চূড়া ছাড়িয়ে গেছেন। তবে এটিই তার প্রথম প্রয়াস নয়। এর আগে কবি সায়ীদ আবুবকর ‘মুজিবনামা’ মহাকাব্য রচনা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন বাংলা কবিতার পাঠকসমাজকে। ‘নবিনামা’ মহাকাব্য বিষয়গত দিক থেকে উচ্চমার্গীয়। এই কাব্যের প্রধান চরিত্র নবি মুহাম্মদ সা: এর জীবন। নবি মুহাম্মদ সা: এর আবির্ভাব, বেড়ে ওঠা, দ্বীন ইসলামের প্রচার এবং একটি বর্বর জাতিকে সভ্য জাতিতে রূপান্তরে তাঁর যে অবদান তা মহাকাব্যিকভাবে তুলে ধরেছেন এই গ্রন্থে। ২৩টি পর্বে বিভাজিত এই কাব্যে রয়েছে ছন্দের বিচিত্র ব্যবহার। যারা কবিতার ছন্দ উপভোগ করতে ভালো বাসেন তাদের জন্য অবশ্যই পাঠ্য।
তবে যে বিষয়টি আমাকে ভাবিত করে কাব্যটি পড়তে গিয়ে তা হলো, তিনি মহাকাব্য লেখার এই দুঃসাহস কোথায় পেলেন? তার জীবনী পড়ে দেখলাম তিনি ইংরেজির অধ্যাপক। আবার পাশাপাশি কবি মধুসূদনের ইংরেজি কবিতার অনুবাদকও। ফলে তাকে মধুসূদন চর্চার জন্য তার রচনাবলি পড়তে হয়েছে আর এই সূত্রে তিনি ভালো করেই আয়ত্ত করেছেন মেঘনাদবধ কাব্য। আর সেই প্রমাণ তার নবিনামার মধ্যে দেখা যায় তিনি যখন অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহারে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। পাশাপাশি যেহেতু তিনি ইংরেজির অধ্যাপক ফলে তাকে পড়তে হয়েছে ‘প্যারাডাইস লস্টে’র মতো মহাকাব্য। যা থেকে তিনি ধর্মীয় বিষয়কে মহাকাব্যিক রূপ দেয়ার সাহস অর্জন করেছেন। তবে যে বিষয়টি পাঠককে চমক দিবে সেটা হলো প্রচলিত মহাকাব্যতে সূচনা হয় দেব-দেবীর বন্দনা দিয়ে এবং দেবতা কর্তৃক স্বপ্নযোগে আদেশ পেয়েই কবিরা মূলত কাব্য লেখা শুরু করেন। এই ক্ষেত্রে তাকে প্রচলিত ভারতীয় দেবতাস্তুতির মিথ ভেঙে একজন আল্লাহ বিশ^াসী মানুষ হিসেবে তিনি যে ধারার প্রচলন করলেন তা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।
নবি মুহাম্মদকে নিয়ে জীবনী রচনা প্রয়াস বাংলা কাব্য সাহিত্যে নতুন নয়। বরং উত্তরাধিকার সূত্রেই এই ধারাকে আরো বলিষ্ঠ করেছেন কবি সায়ীদ আবুবকর। আমরা কবি কাজী নজরুল ইসলামকে দেখি মরু-ভাস্কর নামে রসূল জীবনী লিখতে। যদিও তিনি তা শেষ করতে পারেননি। কবি নজরুল মরু-ভাস্কর শেষ করতে পারলে আমরা নিঃসন্দেহে বাংলা কবিতার পাঠক একটি উৎকৃষ্ট কাব্যগ্রন্থ পেতাম সেটা নতুন করে বলার মতো কিছু নয়। তবে কবি সায়ীদ আবুবকর নবিনামায় রাসূল সা: এর পুরো জীবনকে মহাকাব্যিকভাবে তুলে এনে বাংলা কবিতার ধারাকে শানিত করলেন। পুরো কাব্যটি পড়ার ভার পাঠকদের ওপরে ন্যস্ত করে শেষ পর্ব থেকে কিছু অংশ তুলে ধরছি। যাতে প্রমাণ মিলবে আমার আলোচনার:
হৃদয় বিদীর্ণকারী এ-দুঃসংবাদ
ছড়িয়ে পড়লো চতুর্দিকে মুহূর্তের
মধ্যে, যেভাবে বিজলি ঝড়ের রাত্রিতে
অন্ধকার চিরে চিরে চোখের পলকে
পৌঁছে যায় দিগি¦দিক। মুসলিম-
উম্মাহর মাথায় যেন পড়লো হঠাৎ
বাজ, যেন বজ্রের আঘাতে তারা সব
হয়ে গেল স্তব্ধ, যেন এমনটি তাঁরা
ভাবেনি কখনোÑ নবি তাঁদেরকে ছেড়ে
চলে যেতে পারে দূরলোকে চিরতরে,
যেমন মাছেরা ভাবতে পারে নাÑ পানি
তাদেরকে ছেড়ে পারে থাকতে কোথাও।
নবির মৃত্যুর ঘটনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার চিত্র অঙ্কন করেছেন এভাবে। ‘নবিনামা’ মহাকাব্য হিসেবে কতটা সফল তা বিচার করবেন সাহিত্যের বোদ্ধাপাঠক ও সমালোচক। তবে এর বাইরেও সাধারণ কাব্যিক যে আবেদন তাতে করেই কাব্যটি হয়ে উঠতে পারে এই সময়ের সেরা সৃষ্টি। ফরিদী নুমানের তৈরি নান্দনিক প্রচ্ছদে মহাকাব্যটি প্রকাশ করেছেন সরলরেখা প্রকাশনা সংস্থা। ‘নবিনামা’ কাব্যটির বহুলপ্রচার কামনা করছি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু

সকল