৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শাওয়াল মাসের ছয় রোজা

-

রমজান মাসের পরের এ মাসটির রোজা রাখাও হবে বুদ্ধিমান মুমিনের কাজ। মুমিনরা ইবাদতের ব্যাপারে সুযোগসন্ধানী হয়ে থাকে। কখন কিভাবে ইবাদত করে অগ্রসর হওয়া যায়, সেই ফিকিরে থাকে। তাই ফরজ, সুন্নাত, নফল সব আমলের প্রতি অধিক হারে যতœবান হওয়া বুদ্ধিমান মুমিনের কাজ
রমজান মাস শেষ হয়ে এখন চলছে শাওয়াল মাস। ইবাদতের এক মৌসুম শেষ হয়ে আরেক মৌসুম শুরু হয়েছে। রমজান মাস শেষ হয়ে গেলেও রমজানের গুরুত্ব, রোজার গুরুত্ব মুমিনের জীবনে অপরিসীম। মুমিন রমজান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে রমজান-পরবর্তী মাসেও তা নিজ জীবনে বাস্তবায়ন করতে শুরু করে। যার ফলে জীবন গড়ে ওঠে আল্লাহভীতির আদর্শের রঙে। তাই তারা রমজানের রোজার মতো নফল রোজা পালনেও থাকে যতœবান। আর আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মদির ওপর বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন। অল্প আমল করে বেশি সওয়াব বেশি মর্যাদা অর্জন করার তাওফিক দিয়েছেন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
‘যে ব্যক্তি কোনো পুণ্য নিয়ে আসবে, তার জন্য অনুরূপ তার দশগুণ (সওয়াব) রয়েছে। আর যে ব্যক্তি কোনো অসৎকর্ম নিয়ে আসবে, তাকে কেবল তারই সমান প্রতিফল দেয়া হবে। আর তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না।’ (সূরা আনআম : ১৬০)
অধিক সম্মান ও মর্যাদার দিক দিয়ে শাওয়াল মাসের রোজা অন্যতম। শাওয়ালের ছয়টি রোজাকে এক তাৎপর্যময় আমল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মাধ্যমে রমজানের রোজার শুকরিয়া আদায় করা হয় এবং রমজানের শিক্ষা স্বীয় জীবনে ধরে রাখাও সম্ভব হয়। হাদিসে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘রমজান মাসের সিয়াম পালন করার পরে শাওয়াল মাসে ছয় দিন সিয়াম পালন করা, সারা বছর সিয়াম পালন করার মতো।’ (মুসলিম : ১১৬৪)
অপর এক বর্ণনায় এর ব্যাখ্যা এভাবে এসেছে, ‘আল্লাহ তায়ালা এক নেকিকে ১০ নেকির সমান করেছেন। সুতরাং (রমজানের) এক মাস (রোজা রাখা) ১০ মাসের সমান। আর সাথে ঈদুল ফিতরের পরে ছয় দিন রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমান।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস ২৮৭৪)
হজরত উবাইদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, একদিন রাসূলুল্লাহ সা:-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখো, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি : ১/১৫৭)
তাই রমজান মাসের পরের এ মাসটির রোজা রাখাও হবে বুদ্ধিমান মুমিনের কাজ। মুমিনরা ইবাদতের ব্যাপারে সুযোগসন্ধানী হয়ে থাকে। কখন কিভাবে ইবাদত করে অগ্রসর হওয়া যায়, সেই ফিকিরে থাকে। তাই ফরজ, সুন্নাত, নফল সব আমলের প্রতি অধিক হারে যতœবান হওয়া বুদ্ধিমান মুমিনের কাজ।
লেখক : তরুণ আলেম ও প্রাবন্ধিক

 


আরো সংবাদ



premium cement