২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ, বাড়িওয়ালা গ্রেফতার

পুলিশের হাতে গ্রেফতার দেলোয়ার হোসেন - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঢাকার আশুলিয়ায় ৩০ বছরের এক নারী গৃহকর্মীকে ধর্ষণ, আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় বাড়ির মালিক দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই গৃহকর্মীর স্বামী আশুলিয়া থানায় দেলোয়ারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ। শুক্রবার থানা পুলিশ এ তথ্য নয়া দিগন্তকে জানায়।

গ্রেফতার দেলোয়ার হোসেন আশুলিয়ার গাজীরচট সোনিয়া মার্কেট এলাকার মৃত শাহজাহান হাজীর ছেলে।

এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওই গৃহকর্মীকে ঘরে একা পেয়ে বাড়িওয়ালা দেলোয়ার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে দেলোয়ারের স্ত্রী লিপি বেগম ও তার ছোট বোন লিমা শারীরিক নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেন ওই গৃহকর্মীকে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার চাপাদহ পূর্বপাড়া এলাকায়। স্বামীর সাথে আশুলিয়ার দক্ষিণ চাড়ালপাড়া এলাকার বানোয়ার হোসেনের ভাড়াবাড়িতে থাকেন ওই নারী। স্বামী রিকশাচালক। স্ত্রী দিনমজুরের কাজ করেন ও মাঝে মাঝে গৃহকর্মী হিসেবে বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও কাজ করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার গাজীরচট সোনিয়া মার্কেট এলাকার দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে কাজ করতে যান ওই নারী। কাজ করার একপর্যায়ে দেলোয়ারের স্ত্রী ও ছোট বোন বাড়ি থেকে বাইরে গেলে গৃহকর্মীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন দেলোয়ার। এ সময় তিনি চিৎকার করলে দেলোয়ারের স্ত্রী লিপি বেগম ও তার ছোট বোন লিমা ঘরে আসে বিষয়টি শুনে উল্টো গৃহকর্মীকে দোষারোপ করে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে একটি ঘরে আটকে রেখে লিপি ও লিমা ওই নারী মাথার চুল প্রথমে কাচি দিয়ে পরে ব্লেড দিয়ে ন্যাড়া করে দেন।

ওইদিন সন্ধ্যার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হলে রিকশাযোগে বাসায় ফেরেন ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী। পরে স্বামীকে বিস্তারিত জানান তিনি। এ অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি ওই রাতেই আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারীর স্বামী।

আশুলিয়া থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে ওই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে ও অভিযুক্ত বাড়িওয়ালাকে গ্রেফতার করে।

এ দিকে বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে অভিযুক্ত দেলোয়ারকে আটক করা হয়।

ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নূর রিফফাত আরা বলেন, ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। যা গুলো মারধরের।
রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে তাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ধর্ষণের বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

শুক্রবার আশুলিয়া থানার এসআই ইউনছ আলী জানান, ধর্ষণ ও নির্যাতনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই নারীকে উদ্ধার করে ধামরাই উজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়া থানায় বাড়িওয়ালা দেলোয়ার ও তার স্ত্রী লিপি বেগমসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। এরই মধ্যে ঘটনার মূলহোতা দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement