মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি গ্রামের বিল্লাল মিয়ার খামারে ঈদুল আযহার হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ৫৪ মণ ওজনের ষাঁড় সিনবাদ। এ বছরের মতো গত ঈদের আগেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল সিনবাদ নামের ষাঁড়টি। গেল বছর ৪০ মণ ওজনের ষাঁড়টির ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পরম যত্নে আরেকটি বছর লালন পালন করেছেন খামারি। কিন্তু এ বছর উপযুক্ত দাম না পেলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এই খামারি। ৫৪ মণ ওজনের সিনবাদই দেশের সবচেয়ে বেশি ওজনের ষাঁড় বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস।
দুই বছর আগে কিনে আনা সিনবাদের ওজন ৫৪ মণ। এ ষাঁড়টির খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদিন সাটুরিয়াসহ আশে পাশের উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষজন দেখতে ভিড় করছে খামারির বাড়িতে।
সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে পরম যত্নে লালন পালন করা হয়েছে এ ষাঁড়টিকে। কাঁচা ঘাষ, গমের ভূসি, শুকনা খড়, ভুট্টা, ধান ও গম ভাঙ্গা, ছোলা, চিড়া, আখের গুর, মালটা, কলা, পেয়ারা, মিষ্টি লাউ, নালী খাওয়ানো হয়। প্রায় তিনি মাস ধরে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে খাওয়া বাবদ খরচ হচ্ছে।
সিনবাদের জন্য সবসময় ৫ টি ফ্যান ঘোরে। খুবই শান্তিপ্রিয় সিনবাদ। তবে মেজাজ চড়া হলে পানি ছিটিয়ে দিলেই শান্ত হয়ে যায়। প্রতিদিন বিশেষ শ্যাম্পু দিয়ে দিনে ১০- ১২ বার গোসল করানো হয়। সিনবাদকে দেখভাল করার জন্য ১ জন রাখাল ২ বছরের চুক্তিতে রাখা হয়েছে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে।
সিনবাদকে দেখতে আসা নূরুল হক বলেন, আমার ভাতিজা ফেসবুকে ছবি দেখিয়েছেন সিনবাদ নামে ষাঁড়ের ওজন ৫৪ মণ, তাই আমি বালিয়াটী থেকে দেখতে এসেছি।
বিল্লাল মিয়ার খামারে গিয়ে দেখা যায়, সিনবাদকে রাস্তায় পাশে বেঁধে রাখা হয়েছে। ২০-২৫ জন মানুষের জটলা । দর্শনার্থীরা সিনবাদের ছবি তুলছেন। কেউবা সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করছেন।
খামারী বিল্লাল বলেন, আমি আমার সন্তানদের মতো মমতা দিয়ে সিনবাদকে লালন পালন করেছি। গেল বছর ঈদের আগে ওজন ছিল ৪০ মণ। বাড়ি থেকে প্রচুর ক্রেতা এলেও উপযুক্ত দাম না পাওয়াতে বিক্রি করিনি। ঋণ করে আরেকটি বছর লালন করেছি। এবছর উপযুক্ত দামে বিক্রি না করতে পারলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাব। আগ্রহী ক্রেতারা সরাসরি খামারির মোবাইল নাম্বারে ০১৭২৬ ৬২২৫৭৩ যোগাযোগ করতে পারেন।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ভেটেনারি সার্জন ডা. মো. সেলিম জাহান বলেন, সিনবাদ ষাঁড়টি হলিস্টিন ফ্র্রিজিয়ান জাতের, বর্তমান উচ্চতা ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি, দাঁত রয়েছে ৪টি, বয়স ৪ বছর ৭ মাস। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি ৫৪ মন ওজনের ষাঁড়টি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ওজনের ষাঁড়।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ খুরশেদ আলম বলেন, বিল্লাল হোসেনের সিনবাদ গত বছরে ওজন ছিল ৪০ মণ, ভালো দাম না পাওয়াতে এই বছর বিক্রি করার জন্য লালন পালন করেছে। এত বেশী ওজনের ষাঁড় লালন পালন করতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এ বছর ৫৪ মণ ওজনের ষাঁড়টি বিক্রি না করতে পারলে, ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটা তাজাকরণে খামারিরা নিরুৎসাহী হবেন। তবে তিনি তাদের মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট, ফেসবুকে প্রচার করলে বিক্রি করতে সহায়তা হতে পারে বলে জানান।