৩০ বছর পর শিকলবন্দি থেকে মুক্ত হলেন মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার উত্তর রামগোপালপুর গ্রামের বৃদ্ধ রামা সাহা। শনিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন শিকলবন্দি তালা ভেঙ্গে রামা সাহাকে উদ্ধার করে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দৈনিক নয়াদিগন্তে সংবাদ করার পূর্বে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএমের ফেইসবুক ইনবক্সে নিউজ ও ছবিটি দেয়া হয় এবং তালাবদ্ধ রামকৃষ্ণ সাহাকে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করা হয়। নিউজটি নয়াদিগন্তের অনলাইনে আপলোড হয় ফেসবুকে শেয়ার হয়। সেই তথ্যের আলোকে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম পিপিএমের নির্দেশে এবং মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের দিক নির্দেশনায় হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা রামকৃষ্ণ সাহাকে উদ্ধারে মাঠে নামে। রামকৃষ্ণ সাহার বাড়ি গিয়ে পরিত্যক্ত একটি জরাজীর্ণ ঘর থেকে তালা ভেঙ্গে রামা সাহাকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উদ্ধার করে। পরে তার স্বাস্থ্য পরিক্ষা করতে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম ফেরদৌস রামা সাহাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
চিকিৎসক জানান, দীর্ঘবছর বন্দিজীবন-যাপন করায় রামকৃষ্ণ সাহাকে কিছুটা মানষিকভাবে বিপর্যস্ত মনে হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং ওষুধ লিখে দেয়া হয়েছে।
হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে অভিযানে নেমে রামকৃষ্ণ সাহাকে শিকলমুক্ত করে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, সম্পত্তির লোভে ৩০ বছর ধরে শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ করেছেন রামকৃষ্ণ সাহা ওরফে রমা। কিশোর বয়সে পিতা গৌরাঙ্গ সাহা মারা গেলে সংসারের হাল ধরেন রামকৃষ্ণ সাহা। বরিশালের আঞ্জুরহাট থেকে ধান-ডাল এনে মিরকাদিম বন্দরের আড়তে তা বিক্রি করতেন রামা সাহা। সম্পত্তির কারণে জীবনের সোনালী সময় শিকলবন্দি থেকে তিনি এখন বৃদ্ধ।
রামা সাহার আত্মীয় স্বজনদের দাবি, বরিশালে ব্যবসা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে রামা সাহা মানসিক ভারসাম্য হারায়। ছেড়ে দিলে অত্যাচার ও উৎপাত করে। এই জন্য তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।