০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এক ইনিংসেই মিঠুনের ৭ উইকেট

মিঠুন এক ইনিংসে সাত উইকেট নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। - ছবি : বিবিসি

বাংলাদেশে চলছে এখন জাতীয় ক্রিকেট লিগ, যেখানে কিছুদিন আগে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া মোহাম্মদ মিঠুন এক ইনিংসে সাত উইকেট নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

চার দিনের ম্যাচের তৃতীয় দিন এই ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা ও খুলনার এই ম্যাচটি চলছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন নম্বর মাঠে, যেখানে গতকাল দেখা গেছে পেস বোলাররা ভালো বল করলেও বেশিক্ষণ বল করানো হয়নি।

খুলনার পেস বোলার আল আমিন হোসেন করেছেন চার ওভার, স্ট্রাইক বোলার হিসেবে বল করতে নামা সৌম্য সরকার করেছেন সাত ওভার।

বাঁ হাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় করেছেন মাত্র দুই ওভার।

বাঁ হাতি স্পিন বোলার টিপু সুলতান করেছেন ২৬ ওভার এবং মোহাম্মদ মিঠুন প্রায় ২১ ওভার বল করেছেন।

মিঠুন ৭৫ রান দিয়ে সাত উইকেট নিয়েছেন।

আব্দুল মজিদ, রনি তালুকদার, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, তাইবুর রহমান, শুভাগত হোম, নাদিফ চৌধুরী ও সুমন খানের উইকেট নিয়েছেন মিঠুন।

মোহাম্মদ মিঠুন এখন পর্যন্ত ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের হয়ে এখনো বল হাতে নেননি।

ওয়ানডে ম্যাচে এক ইনিংসে ১২ বল করেছেন তিনি।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মিঠুন ১২ ইনিংসে বল হাতে নিয়েছিলেন এর আগে, ছয়টি উইকেট পেয়েছিলেন, এবার এক ইনিংসেই পেলেন সাতটি উইকেট।

তবে সেখানে থেকে খেলা কভার করা ক্রিকেট সাংবাদিক ইকরাম হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘উইকেট মোটেও খুব বোলারবান্ধব নয়।’

‘গতকাল যারা আউট হয়েছেন হয় বাজে শট সিলেকশন কিংবা দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের কারণে (তারা) উইকেট পেয়েছেন,’ বলেন বিকেএসপি থেকে খেলা দেখা ইকরাম হোসেন।

বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্লেষক ও জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া প্রতিবেদক আরিফুর রহমান বাবুও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কারা এভাবে আউট হয়?’

তিনি মিঠুনের বোলিংয়ের কোনো ভবিষ্যৎ দেখছেন না, ‘মিঠুনকে যারা সাত উইকেট দিয়েছে তারা কারা? এখানে সে বোলার না- এটার কোনো প্রভাব থাকবে না বাংলাদেশের ক্রিকেটে। মিঠুন তো এমনিতেই বোলার না, এটা জাতীয় দলের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না।’

তিনি বলছেন, মিঠুন কখনোই নিয়মিত বোলার না। তাই এক ইনিংসে তার সাত উইকেট পাওয়া তার কৃতিত্বের কোনো ইঙ্গিত নয়, বরং এটা ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাকেই সামনে নিয়ে এসেছে।

আকরাম খান একবার জাপানের সাথে ছয় উইকেট পেয়েছিলেন সেই স্মৃতির কথাও মনে করছেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ ক্রিকেট সাংবাদিক আজাদ মজুমদার।

মিঠুনের এই বোলিং ফিগার বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যাটসম্যানদের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো বলছেন বিশ্লেষকরা।

গতকাল যখন ম্যাচ চলছিল, এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল ক্রিকেট বিষয়ক নানা ফেসবুক গ্রুপে, যেখানে সৌম্য সরকারকে একটা চার দিনের ম্যাচে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

টেস্ট ক্রিকেটেও বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের এই চর্চার ছাপ দেখা যায়, ঢাকায় বা চট্টগ্রামে অনেক টেস্ট ম্যাচেই বাংলাদেশ মাত্র একজন পেস বোলার নিয়ে মাঠে নেমেছে, তার হাতে বল তুলে দিয়েছে দুই একবার।

বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে পেস বোলারদের গুরুত্ব কতোটা কম তা বোঝা যায় একটা পরিসংখ্যান দিয়ে। ২০০৯ সালে শেষবারের মতো টেস্ট ম্যাচ খেলা মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা এখনো বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেয়া ফাস্ট বোলার।

গত ১২ বছরে এমন কোনো ফাস্ট বোলারই ৭৮টি টেস্ট উইকেট নেয়ার মতো নিয়মিত বল করেননি।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement