০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


জীববৈচিত্র্য রক্ষার দাবি

গাজীপুরে বনাঞ্চল দখলকারীদের উচ্ছেদ দাবিতে মানববন্ধন

-

বন ও জলবায়ু রক্ষায় গাজীপুরের বনাঞ্চল অবৈধ দখলদারমুক্ত করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন ও অবৈধ করাতকল ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে গাজীপুর পরিবেশ আন্দোলন (গাপা) ঢাকা বনবিভাগের অধিনস্থ রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। গাজীপুর পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি ফেডরিক মুকুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সহসভাপতি মোছাদ্দেকুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ আহমেদ, এনামুল হক, এস এম কামাল প্রমুখ। এতে সংগঠনের কর্মীরা ছাড়াও স্থানীয় আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও এলাকাবাসী বিভিন্ন সেøাগান সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গাজীপুরের সরকারি বনাঞ্চল একশ্রেণীর বনদস্যু দখল করে অবৈধভাবে নানা স্থাপনা, কলকারখানা গড়ে তুলছে। এতে এক দিকে বনভূমি উজাড় হচ্ছে, অন্য দিকে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলবায়ুর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ দখলকার্যে বনবিভাগের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আশপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ করাতকল। এসব করাতকলে বনের গাছ চেরাই করে কাঠ পাচার করা হচ্ছে। বক্তারা জানান, দখলকৃত বনভূমি দখলমুক্ত ও অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের দাবিতে সম্প্রতি গাজীপুর পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি জবরদখল উচ্ছেদে রুলনিশি জারিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বক্তারা আরো বলেন, গাজীপুর জেলায় জবরদখলকারীরা বন অধিদফতরের ঢাকা বনবিভাগ ও বন্যপ্রাণী বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ছয় হাজার ৮৬ দশমিক ৮৪ একর সংরক্ষিত বনভূমি ইতোমধ্যে দখল করে উজার করেছে। দখলকৃত এসব জায়গায় কলকারখানা, দোকানপাট, কটেজ, রিসোর্ট, ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করেছে। বনবিভাগ ৬৭ দফায় মোট ছয় হাজার ১২৮ দশমিক ১৯ একর সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধারের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনে উচ্ছেদ প্রস্তাব প্রেরণ করলেও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা তারা নেয়নি। ফলে জবরদখলকারীরা প্রতিনিয়ত বন উজাড় করছে। এতে গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী বনাঞ্চল উজাড় হয়ে জীববৈচিত্র্য বিলীন হচ্ছে। পাশাপাশি জীবন সঙ্কটে রয়েছে উদ্ভিদ, প্রাণী ও অনুজীব জগৎ। এ ছাড়াও নষ্ট হচ্ছে এ অঞ্চলের পরিবেশের ভারসাম্য, ঘটছে জলবায়ুর পরিবর্তন। তাই বনভূমি রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।


আরো সংবাদ



premium cement