২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ব্যুরো অফিস ও জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে শিব্বির মাহমুদ

প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব প্রমাণ করেছে নয়া দিগন্ত

নয়া দিগন্তের ব্যুরো প্রধান ও জেলা প্রতিনিধিদের ভার্চুয়ালি সম্মেলনে কর্মকর্তারা। উপরে দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদ : নয়া দিগন্ত -

শত প্রতিকূলতা ও বিপত্তির মধ্যেও যে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব- নয়া দিগন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকে সেটি প্রমাণ করেছেন। এর সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সারা দেশের প্রতিনিধিরা সেটিই দেখিয়ে যাচ্ছেন। তাদের জন্য আমরা তেমন কিছুই করতে পারিনি। আমরা শুধু তাদের নিরন্তর সংগ্রামই দেখছি।
গতকাল শনিবার নয়া দিগন্তের ব্যুরো অফিস ও জেলা প্রতিনিধিদের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদ এ কথা বলেন। তিনি নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নিজেদের শ্রেষ্ঠতা প্রমাণে প্রতিনিয়ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান। একই সাথে আগামী দিনগুলোতে ধৈর্যের সাথে কাজ চালিয়ে যাওয়ারও অনুরোধ করেন।
গতকাল নয়া দিগন্তের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল সম্মেলন সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ৩টায়। মফস্বল ইনচার্জ সৈয়দ সালেহ ইমরানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে ৫০ জনেরও বেশি ব্যুরো অফিস প্রধান এবং জেলা প্রতিনিধি যোগ দেন। সম্মেলনে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন- ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবর, নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী, সিটি এডিটর আবু সালেহ আকন, চিফ রিপোর্টার আশরাফুল ইসলাম, হেড অব মার্কেটিং আনোয়ারুল ইসলাম জয়, এইচআর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম, সার্কুলেশন ম্যানেজার মির্জা হেলাল ও অনলাইন এডিটর হাসান শরীফ। কুরআন তিলাওয়াত করেন অনলাইন বিভাগের মোতাসিম বিল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, আমি মনে করি পাঠকরা আমাদের বড় শক্তি। তাদের প্রতি আমার অসীম শ্রদ্ধা। এ পাঠকরাই আমাদের শক্তি, আমাদের সাহস। কারণ নয়া দিগন্ত সত্যি কথা বলে, মানুষের কথা বলে। মানুষের কাছে যেতে চায়। সত্যের সঙ্গে প্রতিদিন- এ স্লোগান নিয়ে শুরু করেছিল নয়া দিগন্ত, গত দেড় যুগে সেখান থেকে এক বিন্দু সরেনি। এ জন্য নয়া দিগন্তের দেশের বিশাল কর্মিবাহিনীর অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের কাজ সুস্থ সংবাদ পরিবেশন করা। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের সহায়তায় আমরা আরো এগিয়ে যাবো।


দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবর বলেন, নয়া দিগন্ত কোনো একটি বিশেষ দল বা মতের পত্রিকা নয়, এটি সবার পত্রিকা। পূর্ণাঙ্গ সংবাদপত্র। আমরা কোনো দল, বা সংগঠনের নিউজ, এমনকি ছোট সংগঠনের নিউজও ফেলে দিই না। আমরা সবার নিউজ কাভারেজ দেই। নিউজ ভ্যালু বুঝে কাভারেজ দেই। মফস্বল প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদেরকে আমরা মূল্যায়ন করছি, করে আসছি। নয়া দিগন্ত যে দিন থেকে প্রথম প্রকাশ হয়ে আসছে, সে দিন থেকেই আপনারা আমাদের সাথে আছেন, আমরা আশা করি সামনের দিনগুলোতেও আপনারা আমাদের সাথেই থাকবেন। আমাদের এটা গর্বের বিষয় যে, অর্ধশতাব্দীর কাজের অভিজ্ঞতা যার আছে, সেই রকম একজন সম্পাদক আমরা পেয়েছি। আমরা পক্ষপাতিত্বে বিশ্বাস করি না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবার সামগ্রিক প্রচেষ্ঠায় শত বাধা, প্রতিকূলতা পেরিয়ে নয়া দিগন্ত শুধু সামনেই দিকেই এগিয়ে যাবে।
নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী বলেন, সংবাদমাধ্যম একের পর এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দুঃসময় যেন শেষ হচ্ছে না। করোনা মহামারীর সময় সংবাদপত্র নিয়ে নানা অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বলা হয়েছে- পত্রিকার কাগজের মাধ্যমে করোনার ভয়াবহ বিস্তার ঘটছে। করোনার মহামারী বিজ্ঞাপনের বাজারকে ভয়াবহভাবে সঙ্কুচিত করে ফেলেছে। সেই দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নিউজপ্রিন্টের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ধকল আমরা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি। সেই সাথে সংবাদমাধ্যমের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতি আমাদেরকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। তিনি বিজ্ঞাপন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ডিএফপির মিডিয়া লিস্টের হাস্যকর দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নয়া দিগন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার যে নিরন্তর সংগ্রাম তা অবিস্মরণীয়। সারা দেশে আমাদের বিশাল কর্মিবাহিনীর যে অসাধারণ সংগ্রাম সেটিই নয়া দিগন্তকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে ব্যুরো ও অফিস প্রধান এবং জেলা প্রতিনিধিরা তাদের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তারা কাজের প্রতিকূল পরিস্থিতি, নানা প্রতিবন্ধকতা এবং সংবাদ ও বিজ্ঞাপন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নয়া দিগন্ত যে বিরূপ আচরণের মুখোমুখি হচ্ছে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেই সাথে পত্রিকার মানোন্নয়ন ও পাঠকপ্রিয়তা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য লাভের নানা দিক সম্পর্কে আলোকপাত করেন। সবাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, দুঃসময় কেটে যাবে এবং ক্রান্তিকাল যত দীর্ঘই হোক না কেন নয়া দিগন্তের পতাকা উড্ডীন রাখতে তারা নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাবেন।


সিটি এডিটর আবু সালেহ আকন বলেন, নয়া দিগন্তের শীর্ষ দায়িত্বে যারা আছেন তারা কখনো কর্মিবাহিনীকে ফেলে পালানোর লোক নন। তারা শেষ পর্যন্ত কর্মীদেরকে আগলে রাখবেন। তিনি ধৈর্যের সাথে সবাইকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
চিফ রিপোর্টার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার সাংবাদিকদের চেয়ে অনেক যোগ্য মফস্বল সাংবাদিকরা। ঢাকায় আমরা অনেক সংবাদ সহজেই পেয়ে যাই; কিন্তু মফস্বলের সাংবাদিকরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে সরাসরি মাঠ থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেন। সমাজের আসল চিত্র ফুটে ওঠে মফস্বলের সংবাদের মাধ্যমে। তিনি বলেন, সাংবাদিকতার একটি প্রধান উদ্দেশ্য হলো জাতীয় উন্নয়নে সহযোগিতা করা। মফস্বলের বিভিন্ন উন্নয়নের খবর অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলে।
হেড অব মার্কেটিং আনোয়ারুল ইসলাম জয় বলেন, পত্রিকার সব রসদ যোগাতে বিজ্ঞাপন বিভাগ নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এতে সবচেয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন সারা দেশের প্রতিনিধিরা। তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য আমাদের বিভাগ সবসময় প্রস্তুত আছে।
এইচআর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে সোশ্যাল মিডিয়া সম্পৃক্ত কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের আয়ের মূল উৎস হয়ে উঠেছে। সবাই এখন সে দিকেই নজর দিচ্ছে। আমাদের এ বিষয়টিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সার্কুলেশন ম্যানেজার মির্জা হেলাল বলেন, দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও আমাদের পত্রিকার প্রচার সংখ্যা কমেনি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে নয়া দিগন্ত পৌঁছে দিতে আমরা প্রতিদিন সচেষ্ট রয়েছি।
অনলাইন সম্পাদক হাসান শরীফ বু্যুরো অফিস, জেলা প্রতিনিধি ও উপজেলা সংবাদদাতাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে সংবাদ প্রেরণের অনুরোধ করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement