২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৫ ঘণ্টা অবস্থানের পর গ্রামীণফোনের টাওয়ার থেকে শিক্ষার্থী উদ্ধার

৫ ঘণ্টা অবস্থানের পর গ্রামীণফোনের টাওয়ার থেকে শিক্ষার্থী উদ্ধার -

গ্রামীণ টাওয়ারের ওপর পাঁচ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অবস্থানের পর বিভিন্ন কৌশলে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে মুহাম্মদ (১৪) নামের ক্ষুব্ধ এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে। গতকাল বুধবার দুপুরে নেত্রকোনা শহর এলাকার বড় রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে অবস্থিত গ্রামীণ টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মুহাম্মদ নামের ওই শিক্ষার্থী গ্রামীণ টাওয়ারের পাশে অবস্থিত জামিয়াতুল আরকাম মাদরাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। সে কলমাকান্দা উপজেলার মনতলা এলাকার মো: বাবুল বিশ্বাসের ছেলে। সে তিন ভাইয়ের মধ্যে মেঝো। গত রমজান মাসের প্রথম তারিখে সে ওই মাদরাসায় হিফজ বিভাগে ভর্তি হয়।
পুলিশ ও মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে মুহাম্মদ নামের ওই ছাত্র মাদরাসা প্রাঙ্গণে আতশবাজি ফোটায়। এতে শিক্ষকরা বুধবার সকালে তাকে বকাঝকা করলে সকাল ৭টা-সাড়ে ৭টার দিকে সে সবার অলক্ষ্যে মাদরাসাসংলগ্ন গ্রামীণ টাওয়ারের একদম উপরে উঠে বসে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে প্রথমে আশপাশের লোকজন জড়ো হতে শুরু করে। লোকজন টাওয়ারে ওঠার চেষ্টা করলে সে ঝাঁপ দিয়ে নিচে পড়ার হুমকি দিতে থাকে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ, আনসার, দমকল বাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। তাকে নামানোর জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অনুরোধ ও বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষে দমকল বাহিনীর দুই প্রশিক্ষিত সদস্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে টাওয়ারের ওপর উঠে মুহাম্মদকে সান্ত্বনা দিতে শুরু করেন। সে কিছুটা শান্ত হলে সেখানে তাকে স্যালাইন, ওষুধ খাওয়ানোর পর তার কোমরে দড়ি বেঁধে দুই সদস্যের একজন ওপরে অপরজন নিচে থেকে ধীরে ধীরে নামাতে শুরু করেন। দুপুর পৌনে ১২টায় নিরাপদে মুহাম্মদকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়। এ সময় সবার মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। তাকে একনজর দেখার জন্য মানুষের ঢল সামলাতে পুলিশকে প্রচণ্ড হিমশিম খেতে হয়।
নামার সাথে সাথে তাকে ট্রেচারে করে অপেক্ষমাণ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার মা রীনা খানম ও ভাই রিদওয়ানের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
তার মা রীনা খানম নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না কী কারণে সে টাওয়ারের ওপর উঠে ঝাঁপ দিতে উদ্যত হলো। মাদরাসা মুহতামিম মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, দুষ্টুমী করার কারণে তার মা-বাবার কাছে বিচার দেয়ার ভয় দেখানোর কারণে সে এ কাজে করেছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, বকাঝকার কারণেই সে টাওয়ারের ওপরে উঠে ঝাঁপ দিতে চেয়েছিল। উদ্ধারের পর তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement