২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
খুশি নগরবাসী, মেয়রের চমক বলছেন অনেকে

বরিশাল নগরীতে ভবনের নকশা অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা কেটেছে

-

একটা সময় বরিশাল নগরীতে ভবন নির্মাণপ্রত্যাশীরা প্ল্যান পাস করানোর জন্য নগর ভবনের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে চরম নাজেহাল হতেন, মাসের পর মাস ঘুরেও পেতেন না ভবনের নকশার অনুমোদন। অনেকে হতাশ হয়ে ভবন নির্মাণের আশাও ছেড়ে দেন। তবে ইদানীং পাল্টেছে দৃশ্যপট। দেশের সবচেয়ে কম সময়ে ভবনের নকশার অনুমোদন দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। মাত্র দুই সপ্তাহেই অনুমোদন দিচ্ছে নতুন ভবনের নকশা। প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি প্ল্যানের আবেদন জমা পড়ে সিটি করপোরেশনে। গত ৮ মাসে ৩০০ প্ল্যানের অনুমোদন দিয়েছে বিসিসি। দ্রুত সময়ে ভবনের নকশা অনুমোদনে নগরবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বলে মনে করেন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। আবেদন জমা হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যাচাই-বাছাই করে যাবতীয় কাজ শেষ করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ফলে এখন আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে আটকে নেই নকশার অনুমোদন। এত অল্প সময়ে নকশার অনুমোদন পেয়ে উচ্ছ্বসিত নগরবাসী। গত সপ্তাহে ভবনের নকশা অনুমোদন পাওয়া নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওবায়দুল্লাহ বলেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের পরিবারে দু’টি ভবনের নকশার অনুমোদন পেয়েছি। তবে সর্বশেষ নকশার অনুমোদন এত দ্রুত সময়ে পেয়েছি যা নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ এর আগে যে কতবার হয়রানি হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সিটি মেয়রের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। নগরসেবা এমনই হওয়া উচিত। দেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে তাই কাজের গতিও ডিজিটালাইজড হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
নগরীর আলেকান্দার আরেক বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান জানান, এক টেবিল থেকে আরেক টেবিল ফাইল ঘুরে বেড়ানোর একটা রেওয়াজ ছিল। যা এখনো সরকারি অফিসে আছে। তবে এখন মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে, যা এক বিরল দৃষ্টান্ত। বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও কারেন্ট মানিরও একটা ব্যাপার ছিল। কিছু টাকা দিলে দ্রুত কাজ হাসিল হতো। এখন আমার বাড়ির নকশার জন্য এক টাকাও কাউকে ঘুষ দিতে হয়নি।
বরিশাল নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে ভবনের নকশার অনুমোদন দেয়া হচ্ছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের একটা ভালো উদ্যোগ। এর জন্য মেয়রের প্রশংসা করতে হবে। তবে আমাদের খেয়াল করতে হবে নাগরিক হিসেবে আমরা যেন সব কগজপত্র যথা সময়ে সঠিক স্থানে তা জমা দিতে পারি।
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ইউনিক বিল্ডটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মিজান বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন বর্তমানে যে আধুনিক ভবন নির্মাণ নীতিমালা গ্রহণ করেছে তা অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য, বিষয়টি বরিশাল নগরবাসীর জন্য খুবই ইতিবাচক একটি দিক। তবে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নগরীতে ভবন নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত-তাদের সবার দক্ষতা ও কারিগরি সক্ষমতা নির্ণয় করে সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, নকশা বিভাগকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। তারই সুফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। রাজউকে গেলে একটা প্ল্যান পাস হতে ছয় মাসের বেশি সময় লাগে। সেখানে আমরা ১৫-২০ দিনের মধ্যে ভবনের নকশার অনুমোদন দিচ্ছি। একমাত্র বরিশাল সিটি করপোরেশনই দেশে সবচেয়ে কম সময়ে ও দ্রুত ভবনের নকশা অনুমোদন দিচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement