২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বেপরোয়া চাঁদাবাজি বাদামতলীতে

-

রাজধানীর কোতোয়ালি থানা এলাকার বাদামতলীতে চাঁদাবাজরা বেপরোয়া। ফলের ট্রাক, লরি ও কাভার্ডভ্যান থেকে ৩০০ থেকে দুই হাজার টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে। বট করিমের নির্দেশে এসব চাঁদা তুলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, বাদামতলীর একক নিয়ন্ত্রক এখন করিম শেখ ওরফে বট করিম। এক সময় লঞ্চে হকারি করলেও হাজী সেলিমের আশীর্বাদ পেয়ে ফল মার্কেটে চাঁদাবাজি করে কোটিপতি হন তিনি। বাদামতলীর বটগাছ এরিয়ায় কোনো পরিবহনে ফল লোড আনলোড হলেই তাকে গাড়িপ্রতি দুই হাজার টাকা চাঁদা দিতে হতো। গত ২০ বছর যাবত একক নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন দুই থেকে ৩০০ ফলবাহী গাড়ি থেকে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা চাঁদা তুলত করিম। এসব করে রাতারাতি কোটিপতি হন করিম। এর পর থেকে আর বেগপেতে হয়নি তার। একপর্যায়ে ফল ব্যবসা শুরু করতে থাকেন তিনি। বাদামতলীর একাধিক ফল ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকাশ্যে করিমের বিরুদ্ধে কিছু বলার কেউ সাহস রাখে না। কারণ হাজী সেলিমের ডান হাত বট করিম। তা ছাড়া এখানে তারা তিন ভাই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। পরিবহন চাঁদাবাজি, খেয়াঘাট ও ফলের ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে মাসে কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে। থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত মাসোহারা নেয়। তারা আরো জানান, ফলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০ হাজার করে মাসে চাঁদাবাজি করতেন করিম। মাস খানেক আগে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর পরিচালক গুলজার আহমেদ তা ভেঙে দেয়। এখন ফলের পরিবহনে চাঁদাবাজি করছেন করিম ও তার বাহিনী। বাচ্চু, লিটন ও কামরানের নেতৃত্বে বেশ ক’জন এ চাঁদা তুলে। গাড়িপ্রতি দুই হাজার করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলছে। ফলের বিভিন্ন পরিবহনের চালক এ প্রতিবেদককে বলেন, ঢাকার কোথাও চাঁদা দিতে হয় না। বাদামতলী এলাকায় ঢুকতেই প্রথমে বাবুবাজার ব্রিজের নিচে পুলিশকে ৫০০ টাকা দিতে হয়। এরপর ব্রিজের নিচে মিটফোর্ড হাসপাতালের কর্নারে একদল চাঁদাবাজদের ৫০০ টাকা ও বাদামতলীতে দুই হাজার টাকা দিতে হয়।
সালাম নামে এক লরি চালক জানান, বাদামতলীতে তিন ধাপে চাঁদা দিতে হয়। এক গ্রুপ নেয় দুই হাজার। সমিতির নামে সাড়ে ৩০০ ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর নামে ১০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। তিনি বলেন, আমাদের গাড়ির নম্বর পত্রিকায় প্রকাশ করবেন না। তাহলে পরবর্তীতে তাদের ওপর হামলা হতে পারে। এ বিষয়ে করিমের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া সমিতির কমিটি না থাকায় আহ্বায়ক কমিটির কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি।


আরো সংবাদ



premium cement