রাজশাহীতে বিকাশ প্রতারকের সাথে প্রেম জমিয়ে টাকা উদ্ধার

রাজশাহী নগরীর নিউ গভ: ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রী বিকাশে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। প্রতারকরা তার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছিল ৫১ হাজার টাকা। পরে পুলিশের পরামর্শে তিনি ওই প্রতারকের সাথেই শুরু করেন প্রেমের অভিনয়। প্রেম জমে উঠলে ওই প্রতারক কলেজছাত্রীর সাথে দেখা করতে আসে। আর তখনই এক সহযোগীসহ ওই প্রতারককে আটক করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
আটককৃতরা হলোÑ ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার জাঙ্গালপাশা মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল খানের ছেলে হাসান খান (১৯) এবং জাঙ্গালপাশা পূর্বপাড়া গ্রামের নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে মাহমুদ হাসান ওরফে বায়েজিদ (১৯)। পুলিশ জানায়, এরা পেশাদার প্রতারক। মুঠোফোনে কল দিয়ে তারা কৌশলে বিকাশের পিন নম্বর হাতিয়ে নেয়। এরপর সরিয়ে ফেলে বিকাশের টাকা।
প্রেমের ফাঁদে পড়ে কলেজছাত্রীর সাথে দেখা করতে এলে রোববার বিকেলে রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড় থেকে এদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আরএমপির ডিবি পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) আবু আহাম্মদ আল মামুন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী রাজশাহী নিউ গভ: ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন। গত ১৬ নভেম্বর তার মুঠোফোনে অচেনা একটি নম্বর থেকে কল আসে। ওই ব্যক্তি ছিল প্রতারক হাসান। তবে সে নিজেকে ওই শিক্ষার্থীর কলেজের শিক্ষক পরিচয় দেয়। সে বলে, করোনাকালে বিকাশের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে। কিন্তু যে নম্বরে বৃত্তি পাঠানো হবে সেই বিকাশে অন্তত ৫০ হাজার টাকা থাকতে হবে। তাহলেই এই নম্বরে সরকার টাকা পাঠাবে।
বিষয়টি আঁচ করতে না পেরে ওই শিক্ষার্থী তার অভিভাবকের সাথে কথা বলে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা তোলেন। আর তার বিকাশে আগে থেকেই কিছু টাকা ছিল। ওই ছাত্রী বিকাশে টাকা তোলার পর প্রতারক হাসান কৌশলে তার পিন নম্বরটি জেনে নেয়। এরপর সে ওই ছাত্রীর বিকাশ থেকে ৫১ হাজার টাকা সরিয়ে নেয়। পরে প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে ওই ছাত্রী ডিবি পুলিশের শরণাপন্ন হন।
ডিবি পুলিশের ডিসি আবু আহাম্মদ আল মামুন জানান, সবকিছু শোনার পর আমি ওই ছাত্রীকে পরামর্শ দিলাম যে, অন্য একটি নম্বর থেকে ওই প্রতারকের সাথে তুমি কথাবার্তা বলতে থাকো। যেহেতু আগে খুব বেশি কথা হয়নি, সে হয়তো বুঝতে পারবে না। এই কৌশলটাই কাজে দিয়েছে। তারপর প্রেমের অভিনয় করতে থাকে এবং এসবের আপডেট আমাদের জানাতে থাকে। এই ১২ দিনেই প্রেম জমে ওঠে।
তিনি আরো জানান, আটকের সময় দু’জনের কাছে মোট ৭৬ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা নগরীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল সোমবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।