২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহীতে ইউপি ভবনে আটকে রাখা যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

-

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনে আটকে রাখা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল ভোরে জানালার সাথে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় পুলিশ লাশটি ঝুলতে দেখেন। তাকে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা। নিহত যুবকের নাম মোফাজ্জল হোসেন (২৬)। তিনি একজন দিনমজুর। হরিপুর ইউনিয়নের নলপুকুর গ্রামে ১২ দিন আগে তিনি বিয়ে করেন। পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে দেয়া হয়েছিল। তার শ্বশুরের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি একজন ভ্যানচালক। মোফাজ্জলের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের যুগলপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ইসরাফিল মন্ডল।
স্থানীয়রা বলছেন, গতকাল সকাল ১০টার দিকে মোবাইল বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল। মোফাজ্জলের শ^শুরসহ তার পরিবারের সদস্যরাও পালিয়ে গেছেন। তবে এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চেয়ারম্যান মুঞ্জিল জানিয়েছিলেন, কয়েক দিন আগে বিয়ে হলেও রফিকুলের মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন। তিনি আর সংসার করতে চাচ্ছিলেন না। দু’দিন আগে মোফাজ্জল তাকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। গত শনিবার মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন মোফাজ্জলকে তার কাছে রেখে যান। রোববার দুই পক্ষের লোকজনদের নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহের বিষয়ে মীমাংসায় বসার কথা ছিল। এ জন্য রাতে মোফাজ্জল হোসেনকে ইউপি ভবনের একটি কক্ষেই রাখা হয়। গতকাল ভোররাতে দায়িত্বরত গ্রামপুলিশ জানালা দিয়ে মোফাজ্জলের ঝুলন্ত লাশ দেখে তাকে খবর দেন। পরে তিনি বিষয়টি থানায় অবহিত করেন।
তবে মোফাজ্জলের চাচাতো ভাই উজ্জ্বল আলী অভিযোগ করে বলেন, মোফাজ্জলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, মোফাজ্জল ও তার স্ত্রীর কলহ নিয়ে শনিবারও তারা ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলেন। তখন চেয়ারম্যান তাদের বলেছিলেন, দেনমোহরের এক লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ভরণপোষণের আরো ১০ হাজার টাকা দিয়ে তার চাচাতো ভাই মোফাজ্জলকে নিয়ে যেতে হবে। রোববারের মধ্যে টাকা না দিলে মোফাজ্জলকে মাদকদ্রব্য দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হবে। রোববার টাকা না আনা পর্যন্ত সে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনেই আটক থাকবে।
রাজশাহীর দামকুড়া থানা পুলিশ জানায়, জানালায় লেপের একটি ছেঁড়া অংশ গলায় পেঁচানো অবস্থায় মোফাজ্জলের লাশ ঝুলছিল। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও লাশ নামাননি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) খবর দেয়া হলে তারা লাশ নামান।
পুলিশ আরো জানায়, লাশের সুরতহালের সময় শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাত দেখা যায়নি। তবে তাকে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনেরা। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। তবে চেয়ারম্যানকে দেখা যাচ্ছে না। নিহত মোফাজ্জলের শ^শুরবাড়ির লোকজনও পলাতক। মোফাজ্জলের মৃত্যুর ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তাকে গ্রেফতারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement