নথি সৃজন করে জামিন জালিয়াতি হচ্ছে : হাইকোর্ট
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
একটি অস্ত্র মামলায় জামিন জালিয়াতি অভিযোগের শুনানিতে আদালত বলেছেন, জামিন জালিয়াতি চক্র নথি জাল করে কত জামিন আদেশ হাসিল করে কে জানে? হয়তো আমরা সবগুলো ধরতে পারি না। নথি সৃজন করে এ রকম জামিন জালিয়াতি তো হচ্ছে। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন জালিয়াতি অভিযোগের শুনানিতে বিস্ময় প্রকাশ করে এ কথা বলেন।
আদালত আসামি সাত্তারের আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমানের উদ্দেশে বলেন, এই জামিন জালিয়াত চক্র আপনাকে চিনল কিভাবে? আরো দু’টি জামিন জালিয়াতির মামলায় আপনি ও আপনার ক্লার্ক সোহেল রানার নাম এসেছে। একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে কি আপনার কোনো দায়িত্ব নেই। মামলা পেলেন আর দাঁড়িয়ে গেলেন। জালিয়াত চক্র আপনার ওপর ভর করেছে কেন?
আইনজীবী শেখ আতিয়ার বলেন, মাই লর্ড জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পেরে আমি আসামির এলাকায় আমার ছেলে ও দুই সহকারী পাঠিয়ে তথ্য নিয়ে আদালতে দাখিল করেছি। শেষ বয়সে এসে আমাকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আমি লজ্জিত।
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, এই অস্ত্র মামলার এজাহার, তদন্ত প্রতিবেদন, জব্দ তালিকা ও রায় পরিবর্তন করে জামিন চাওয়া হয়েছে। এই মামলায় একমাত্র আসামি আবদুস সাত্তার। কিন্তু জাল নথিতে তাকে দুই নম্বর আসামি দেখানো হয়েছে। এক নম্বর আসামি দেখানো হয়েছে আবদুস সালামকে। অস্ত্র সাত্তারের কাছ থেকে উদ্ধার করা হলেও জাল নথিতে চাইনিজ কুড়ালের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি সাক্ষীর জবানবন্দী পরিবর্তন করা হয়েছে। এর চেয়ে বড় জালিয়াতি বিচার বিভাগে হয়েছে কি না আমি জানি না।
হাইকোর্ট বলেন, সব নথিই তো সৃজনকৃত। এ রকম অনেক জালিয়াতি হচ্ছে, হয়ত আমরা ধরতে পারি না।
এ সময় সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক আদালতে বলেন, উনি বৃদ্ধ মানুষ। উনি জালিয়াত চক্রের তিনজনের নাম আদালতে দিয়েছেন। ওই আবেদন গ্রহণ করে তাকে অব্যাহতি দেন।
হাইকোর্ট বলেন, আমরা কক্সবাজারের সাড়ে সাত লাখ ইয়াবা মামলায় জামিন জালিয়াতির ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানানো হয়নি।
শুনানি শেষে হাইকোর্ট জামিন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন। একইসাথে তদন্তে আইনজীবী জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ হলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
জামিন জালিয়াতিতে জড়িতরা হলেনÑ আসামি আবদুস সাত্তার, দুই কারারক্ষী বিশ্বজিত ওরফে বাবু ও খায়রুল, এফিডেভিটকারী আসামির বাবা নিজামুদ্দিন এবং মামলার তদবিরকারক।
পরে আইনজীবী শেখ আতিয়ার বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় আমি অবশ্যই অনুতপ্ত। এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা বারবার ঘটছে। এতে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য আইনজীবীদের সতর্ক থাকতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা