আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে ছায়াছবির শুটিং করতে রাশিয়া একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী ও একজন পুরস্কার-বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্দেশককে মনোনীত করেছে।
ইউলিয়া পেরেসিল্ড ও ক্লিম শিপেঙ্কো আগামী ৫ অক্টোবর বাইকানুর উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে একটি রুশ রকেটে চড়ে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বা আইএসএস-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন।
তারা যে ছবির ওপর কাজ করছেন তার নাম দেয়া হয়েছে ‘চ্যালেঞ্জ’।
রাশিয়ার রসকসমস মহাকাশ সংস্থা বলছে, সাধারণ মানুষের জন্য যে মহাশূন্যের দরোজা খুলে যাচ্ছে তারা সেটাই দেখাতে চাইছে। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ও হলিউড তারকা টম ক্রুজও আইএসএস-এ ছবির শুটিং করার পরিকল্পনা করছেন। তবে তাদের ছবির ঘোষণাটি গত বছর দেয়া হলেও কখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে তাদের শুটিং চলবে তা এখনো জানা যায়নি।
মনে করা হচ্ছে, টম ক্রুজের সাথে ওই মহাশূন্য ভ্রমণে থাকবেন চলচ্চিত্র পরিচালক ডাগ লিমান। নাসা বলছে, ইলন মাস্কের রকেট প্রতিষ্ঠান স্পেস-এক্স একাজে জড়িত থাকবে।
রসকসমস বৃহস্পতিবার ফিল্ম শুটিংয়ের ঘোষণা করার পর থেকেই আলোচনা চলছে যে তারকাদের মহাশূন্যে পাঠাতে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে এক নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হলো।
রুশ পরিকল্পনা সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?
রসকসমস বলছে, মহাশূন্যে যাত্রার জন্য মিস পেরেসিল্ড ও শিপেঙ্কো দু’জনেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। আগামী ১ জুন থেকে তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হবে, যার মধ্যে থাকবে সেন্ট্রিফিউজ ও ভাইব্রেশন টেস্ট শূন্য মাধ্যাকর্ষণে উড়ে যাওয়া ও প্যারাসুট থেকে ঝাঁপ দেয়ার প্রশিক্ষণ।
রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া খবর দিচ্ছে, চ্যালেঞ্জ মুভিতে রয়েছে একজন নারী সার্জনের গল্প। মহাকাশ স্টেশনের দায়িত্বরত একজন রুশ কসমোনট এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তাকে সেখান থেকে পৃথিবীতে সরিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়ে। তখন ওই সার্জনকে আইএসএস-এ পাঠানো হয় তার ওপর একটি অপারেশন করার জন্য।
এই ছবির মূল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য উনিশ জন নারী আবেদন করেছিলেন। তার মধ্য থেকে ইউলিয়া পেরেসিল্ডকে বেছে নেয়া হয়। তিনি বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের রুশ নাটকে অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের জন্য তিনি রুশ প্রজাতন্ত্রের সম্মাননাও পেয়েছেন।
ক্লিম শিপেঙ্কোও তার ক্ষেত্রে সমান খ্যাতিমান। ২০১৯ সালে তার পরিচালিত ছবি সার্ফ বক্স অফিসে চার কোটি ২০ লাখ ডলার আয় করেছে। তিনি নিজেও একজন অভিনেতা ও চিত্রনাট্যকার।
রসকসমস ঘোষণা করেছে, এই দু’তারকার বাইরে তারা জাপানি বিলিওনেয়ার ইউসাকো মায়েযাওয়াকে আগামী ডিসেম্বর মাসে ১২ দিনের জন্য তারা মহাশূন্য ভ্রমণে নিয়ে
যাবে।
রাশিয়া সর্বশেষ কোনো মহাশূন্য পর্যটককে আইএসএস-এ নিয়ে গেছে ২০০৯ সালে।
মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কাজ কী?
আইএসএস হচ্ছে মহাশূন্য থেকে পৃথিবীকে পরিভ্রমণকারী সবচেয়ে বড় গবেষণা ল্যাবরেটরি। এর প্রথম অংশটি নির্মাণ করেছিল রাশিয়া ১৯৯৮ সালে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়, জাপানি এবং ক্যানাডিয়ান মহাকাশ সংস্থাগুলো একের পর এক এই ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন মডিউল, রবোটিক হাত এবং বিশাল আকারের সোলার প্যানেল নির্মাণ করতে থকে।
আইএসএস-এর মূল কাজ হচ্ছে মহাশূন্যে বসবাস এবং কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে চাঁদের বুকে স্থায়ী ঘাটি নির্মাণ ও মঙ্গল গ্রহে অভিযানে কাজে লাগবে।
বিজ্ঞান বিষয়ক রিপোর্টার পল্লব ঘোষ জানাচ্ছেন, আইএসএস তৈরি হয়েছিল ভর শূন্য পরিবেশে বস্তু ও উদ্ভিদের ওপর বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য। পৃথিবী থেকে বিজ্ঞানীদের নির্দেশ অনুযায়ী আইএসএস-র মহাশূন্যচারীরা এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে থাকেন।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা