ফেনীর দাগনভুঞা উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান থেকে আমের মুকুল ঝরে যাওয়ায় চাষিদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এতে আমের আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়ে চাষিরা উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে এ নিয়ে কথা হয় উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়ানপুর গ্রামের বিসমিল্লাহ অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপক আবদুল আলী রাশেদের সাথে তিনি জানান, ‘২০১৭ সালে বিসমিল্লাহ ট্রান্সপোর্টের কর্নধার আরিফুর রহমান ও আতিকুর রহমান নামে দুই ভাই ফার্মটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে বিদেশী নানা জাতের ফলফলাদির সাথে এক একর জায়গা জুড়ে আমের বাগান করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ করা হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত হলো মিয়া ঝুঁকি, বারি ফোর, বারি এগারো, কাটিমন, ব্যানানা ম্যাংঙ্গো, কিং অব ছাপাকাত, আম কাছা মিড়া, আলফানছু, ডকমাই, আম্রপালী, গরুমতি, ল্যাঙ্গড়া, হাড়িভাঙ্গা ও ফজলি। এ বাগানের পরিচর্যায় সাতজন শ্রমিক কাজ করেন। উক্ত বাগানের আম গাছগুলোতে আমের মুকুল আসায় আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু এখন আমের মুকুল ঝরে যাওয়ায় আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ছত্রাক নাশক মিরাকোলন স্পে করা হয়েছে। কিন্তু আমের মুকুল রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে সহযোগিতা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া কথা হয় উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর আবদুল হক মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপক মো: ফরিদের সাথে তিনিও জানান, ‘বাগানে আমের মুকুল ঝরে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে বলাই ও ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও সুফল মিলছে না। এতে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া সম্ভব হবে না বলেও জানান তিনি।
এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে চাষিদের একই অভিযোগ এ মৌসুমে আমের ফলন ভালো হবে না। কারণ কোনোভাবেই আমের মুকুল রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে সবাই হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
এ বিষয়ে দাগনভুঞা উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মারুফের কাছে জানতে চাইলে তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, ‘এ বিষয়ে অনেকেই আমাদের সাথে কথা বলেছেন। আসলে চলতি মৌসুমে আবহাওয়াজনিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন চাষিরা। এরপরও আমরা চাষিদের নানা তথ্য ও সহযোগীতা দিয়ে সহযোগিতা করছি।’
তিনি চাষিদের উদ্দেশ্য জানান, ‘এই সময় মুকুল ঝরে যাওয়া বন্ধ করতে আম গাছে ‘সাইপারমেথ্রিন’ গ্রুপের কীটনাশক এবং ‘মেনকোজেব’ গ্রুপের ছত্রাকনাশক ঔসমানি পদ্ধতিতে স্প্রে করুন। এছাড়া ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রোটোজিম, প্লানোফিক্স, ফ্লোরা, মিরাকুলান, লিটোসেন, বাম্পার, বলবানের যেকোনো একটি ঔসমানি পদ্ধতিতে স্প্রে করতে পারেন। আশা করছি, এতে চাষিরা লাভবান হবেন।’
এছাড়া নিয়ম করে পানি সেচ দিলে মুকুল ঝরে যাওয়া কমতে পারে বলেও জানান তিনি।