২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যেভাবে অনুষ্ঠিত হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচন

সরাইলের একটি ভোটকেন্দ্রের সকালের চিত্র - ছবি : সংগৃহীত

নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। এ সময় ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম- শতকরা ১৬ ভাগ। কোনো কোনো কেন্দ্রে তারও কম- শতকরা ৫ থেকে ৭ ভাগ।

এদিকে ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই দেখা গেছে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ভোটগ্রহণ সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হলেও কোনো কোনো কেন্দ্রে এজেন্টদের কাগজ পেতে ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা বেজে যায়।

এছাড়া ভোটকক্ষের গোপনকক্ষে ভোটার ছাড়াও অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিদের উপস্থিতি দেখা গেছে। গোপন কক্ষে যারা ঢুকছেন, তাদের বেশির ভাগই বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার এজেন্ট বলে অভিযোগ রয়েছে।

উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার নিজের এলাকা ও ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়ন। এই দুই ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রগুলোতে সাত্তারের এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি। সরাইলের কুট্টাপাড়া ও আশুগঞ্জের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ ছিল, গোপন কক্ষে প্রবেশকারী অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিরা ভোটাররা আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার পর তারা কলার ছড়ি প্রতীকের বাটন চেপে দিয়েছে। বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াকে জেতানোর জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন এসব অনিয়ম করেছে বলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ।

উল্লেখ্য, উপনির্বাচনে ভোটকক্ষে একজনের ভোট আরেকজন দেয়া নিয়ে আগেই শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ভোটার ও সাত্তারের প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থী। এই আসনের ৮২৬টি ভোটকক্ষের কোনোটিতেই ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) নেই। অন্যদিকে সাত্তার ভূঁইয়াকে জেতাতে মাঠে মরিয়া ছিল আওয়ামী লীগ। ফলে ভোটাররা নিজের ভোট নিজে দিতে পারা নিয়ে আগেই সন্দেহ করেছিল।

এদিকে ভোটগ্রহণের দিনও খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের। দুপুর দেড়টার দিকে তার স্ত্রী মেহেরুন নিছা মেহেরীন নিজ কেন্দ্র আশুগঞ্জ সরকারি শ্রমকল্যাণকেন্দ্রে এসেছিলেন ভোট দিতে। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ এনে তিনি ভোট না দিয়ে ফিরে যান।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: শাহগীর আলম বলেন, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, প্রার্থীরা ভোটারদের মোটিভেট করতে পারেননি। ভোটারদেরও ইচ্ছা থাকতে হবে। ভোটার আনাতো প্রার্থীদের দায়িত্ব।

উল্লেখ্য যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আশুগঞ্জ ও সরাইল দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৩ ও নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৫ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের একজন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement