করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা পুত্রকে দাফনের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মারা গেলেন পিতা। মর্মস্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের মজিদের পাড়া গ্রামে। মৃতরা হলেন পিতা মাওলানা আব্দুল কাদির (৭৮) ও পুত্র মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ (৩২)।
মাওলানা আব্দুল কাদির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি স্বনামধন্য আলেমে দ্বীন ছিলেন।
মরহুমের বড় ছেলে চরম্বা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইনকিলাবের বান্দরবান জেলার স্টাফ রিপোর্টার অধ্যাপক সাদাত উল্লাহ কান্নাজড়িত কন্ঠে নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি তো শেষ হয়ে গেলাম। একই দিনে আমার আদরের ছোট ভাই ও বাবাকে হারালাম। এমন ট্রাজেডির শিকার হতে হবে কখনো কল্পনা করিনি। সবাই আমার ভাই ও বাবার জন্য দোয়া করবেন।’
জানা গেছে , বুধবার ভোররাত তিনটার দিকে জর, সর্দি ও কাশি নিয়ে মারা যান মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ। গত ১০-১২ দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। টাইফয়েড পরীক্ষার পর তার শরীরে টাইফয়েড পাওয়া গিয়েছিল। অবস্থার অবনতি হলে লোহাগাড়ার একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে তাকে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। তার দেড় বছর বয়সী এক কন্যাশিশু রয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টায় আহসান উল্লাহকে ‘প্রজন্ম লোহাগাড়া’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে।
অধ্যাপক সাদাত উল্লাহ আরো জানান, আমার বাবা মাওলানা আব্দুল কাদির লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত দুই দিন আগে বাবার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়া হলেও এখনো রিপোর্ট পাওয়া যায় নি। আমার ভাইকে বাড়িতে আনার সময় বাবাকে একনজর দেখিয়ে দোয়া নিয়েছিলাম। কিন্তু, বিকাল তিনটার দিকে আমার বাবাও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মহান আল্লাহর কঠিন পরীক্ষায় পড়েছি।
এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুল কাদির ও তার কনিষ্ঠ পুত্রের মৃত্যুকে পুরো লোহাগাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে পিতা-পুত্রের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জাফর সাদেক, লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান, উপজেলা এলডিপির আহ্বায়ক সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী চৌধুরী, চরম্বা ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার শফিকুর রহমান ও সমাজসেবক নুরুল ইসলাম সিকদার প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ মরহুমদ্বয়ের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা