২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যে খালে পয়ঃনিষ্কাশন সেই খালের পানিই পান

খালের দু’পাশের ভবনের পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা খালের পানিতে। এই পানিই ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নাসহ খাবারের কাজে : নয়া দিগন্ত -

পাশের খাল দিয়ে বালতি ভরে পানি উঠিয়ে রান্না আবার সেই পানিতে ফিটকারি দিয়ে পান করতে দেয়া হয় পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর হাট-বাজারের শত শত খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে। অথচ বাজারের দু’পাশের শতাধিক আবাসিক ভবনের পয়নিষ্কাশনের সংযোগ এ খালেই। বছরের পর বছর ধরে এভাবে চলে এলেও এর কোনো উন্নতি নেই। পানির দেশ ইন্দুরকানীতে চার দিকে পানিতে থৈ-থৈ করলেও এখানে নিরাপদ খাবার পানির সুবিধা সামান্যই।
উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ইন্দুরকানীতে ৯ শতাধিক অগভীর নলকূপ থাকলেও তার বেশির ভাগই আয়রন ও আর্সেনিকযুক্ত। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করা গেলেও শুকনো মৌসুমে খাবার পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। বালিপাড়া ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের নদী ও খালের পানি বেশি লবণাক্ত।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তথ্য মতে, এ উপজেলায় ২৭৬টি গভীর ও ৯৩৬টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। সোলার পিএসএফ চারটি, জঙ প্ল্যান্ট চারটি এবং আশ্রয়ন প্রকল্পের ৬৫১টিসহ রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টার আছে ১১৮৬টি, যা চাহিদার তুলনায় সামান্য।
বাজারের ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলাম বলেন, বাজারের হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে খালের পানিতে রান্না করে আবার খালের পানিই খাওয়ায়। অথচ এ খালের দুই পাশের ভবনের পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা খালের সাথেই। আমাদের পানি কিনে পান করতে হয়।
ইন্দুরকানী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়াল বলেন, ইন্দুরকানীতে খাবার পানির সঙ্কট আছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে পাড়েরহাট ইউনিয়নের চারটি গ্রামে কিছু গভীর নলকূপ স্থাপন করা গেলেও বাকি চারটি ইউনিয়নের কোথাও গভীর নলকূপ স্থাপন সম্ভব হয় না। আবার কোনো কোনো এলাকায় আর্সেনিকের মাত্রা বেশি। খালের পানিতে ফিটকারি দিলে জীবাণু মারা গেলেও তা কিন্তু পানিতেই থেকে যায়। তাছাড়া ফিটকারি পানির লবণাক্ততা ও রাসায়নিক পদার্থ দূর করতে পারে না। তাই ফিটকারি দেয়া পানি নিরাপদ না। তিনি আরো বলেন, আরো দুই হাজার পরিবারের মধ্যে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টার বিতরণ এবং ১০টি জঙ প্লান্ট নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। আশা করি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এ উপজেলায় খাবার পানির সঙ্কট অনেকটা লাঘব হবে।


আরো সংবাদ



premium cement