গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী রেল স্টেশন ২০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় দু’টি রুটের রেললাইন, সেতুসহ মূল্যবান সবকিছু অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৮ সালে ঢাকার সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগের জন্য গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট ও জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদঘাট দিয়ে যমুনা নদীতে রেল ফেরি সার্ভিস চালু করে। রেলের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতে থাকে যমুনার ওপর দিয়ে রেলযাত্রী ও পণ্যবাহী ওয়াগন পারাপার। সে সময়ের তিস্তা মুখঘাট-বাহাদুরাবাদ ঘাটের মধ্যে যাত্রী পারাপার চালুর মাধ্যমে মেরিন বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।
১৯৩৮ সাল থেকে নিয়মিত নদীপথে ফেরি চলাচল করলেও ১৯৯০ সালে যমুনা নদীর নাব্য সঙ্কটে ফেরি সার্ভিসটি তিস্তামুখঘাট থেকে একই উপজেলার বালাসীঘাটে স্থানান্তর করা হয়। ত্রিমোহিনী স্টেশন থেকে বালাসী পর্যন্ত নতুন করে রেলপথ নির্মাণ করা হয়। বালাসীঘাট চালুর পরপরই নির্মিত হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। এরপর বন্ধ হয়ে যায় এই রুটটি। সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করে যাত্রী পারাপার ব্যবস্থার চূড়ান্ত ইতি টানা হলে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারীর লোকজন যমুনার পূর্বপাড়ের জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুরের বিশাল এলাকার সাথে রেল যোগাযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এ রেলপথের অসংখ্য স্থানে কাঠের স্লিপার পচে নষ্ট হয়ে গেছে। রেললাইনের নিচের মাটি ক্ষয়ে সরে গেছে। মরিচা পড়ে গেছে রেললাইন। এখন তিস্তা মুখঘাট, ভরতখালী রেলস্টেশন, বালাসী-ত্রিমোহিনী রেলপথে শুধু রেললাইন ছাড়া আর কিছুই নেই।
ফুলছড়ি বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, তিস্তা মুখঘাট থেকে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে অল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে ময়মনসিংহ ও ঢাকায় যাতায়াত করা যেত। কিন্তু ফেরি ও ট্রেন বন্ধ থাকায় বোনারপাড়া অথবা গাইবান্ধা জেলা শহরে গিয়ে বাস কিংবা ট্রেনে দ্বিগুণ ভাড়া ও দীর্ঘসময় অপচয় করে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ জানান, বালাসী-বাহাদুরাবাদ ঘাট নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ফেরি সার্ভিল চালু হলে রেল ট্রেনের দরকার নেই। তবে বোনারপাড়া রেলওয়ে জংশন থেকে তিস্তা মুখ পর্যন্ত শাটল ট্রেন চালুর নির্দেশ যদি রেল মন্ত্রাণালয় থেকে আসে সে ক্ষেত্রে ট্রেন চালু করা সম্ভব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা