০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ঢাবির লাল বাস

-

ঢাবির লাল বাস। যে বাসের যাত্রী হতে হলেও যোগ্যতা লাগে। আর সে যোগ্যতা হলো ঢাবির ছাত্র অথবা ছাত্রী হওয়া। ঢাবিতে চান্স পাওয়ার আগে থেকে এই লাল বাসের প্রতি এক অন্যরকম ফিলিংস কাজ করে। মনে মনে ভাবনা আসে এই বাসের যাত্রী হওয়ার সৌভাগ্য হবে তো আমার? এরপর চান্স পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর লাল বাসগুলো যখন সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তখন ভাবে, এই লাল বাসের সাথে একটি ছবি তোলা দরকার। আর তখন যেই ভাবা সেই কাজ। একটি ছবি তুলে দারুণ একটি ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে আপলোড দিয়ে দেয়।
লাল বাসগুলো শুধুই লাল বাস নামেই পরিচিত না। বাহারি সব নাম রয়েছে বাসগুলোর। ঈশা খাঁ, হেমন্ত, বসন্ত, বৈশাখী, ফাল্গুনী, চৈতালি, আনন্দ, উল্লাস, কিঞ্চিৎ, ক্ষণিকা, শ্রাবণ, তরঙ্গ, উয়ারী-বটেশ্বর, মৈত্রী, ইন্দ্রাকপুর। প্রতিটি বাস পরিচালনার জন্য রয়েছে বাস পরিচালনা কমিটি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন রুটে, বিভিন্ন সময়ে আপ ও ডাউন ট্রিপে চলাচল করে বাসগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি বৃহৎ অংশই বাইরে থাকে। মূলত তাদের জন্যই এই পরিবহন ব্যবস্থাপনা। যারা হলে থাকে তারা তো আরামসে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে পারে কোনো সমস্যা হয় না। সমস্যা তো হয় যারা হলে থাকে না তাদের। লাল বাস ছাড়া তাদের আসা-যাওয়া এক মহা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই তো লাল বাসের যাত্রী হয়ে যেতে হয়।
প্রত্যেক বাসের আলাদা আলাদা ফেসবুক এবং মেসেঞ্জার গ্রুপ আছে। যেখানে বাসের যাত্রীরা প্রতিনিয়ত একে অপরকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করে। কখনো বাসের দরজায় দাঁড়িয়ে বড় ভাইয়া-আপুরা গানের সুর তোলে। সে এক অন্যরকম যাত্রানুভূতি। প্রায় সব বাসই বিআরটিসির লাল রঙা দোতলা বাস। উপরের তলায় ছেলে শিক্ষার্থী এবং নিচতলায় মেয়ে শিক্ষার্থীদের আসন। এই বাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এই বাসে যদিও হেলপার থাকে কিন্তু কোনো জায়গায় পৌঁছলে তার নাম বলবে না (পাবলিক বাসে যেমন হেলপাররা চিৎকার করে জায়গার নাম বলে)। বরং আপনার গন্তব্য স্থান এলে আপনি নিজেই চিনে নামতে হবে। প্রতিটি বাসই শিক্ষার্থীরা উঠা-নামার সুবিধার্থে বিভিন্ন স্টপেজে থামে।
প্রতিটি বাসের যাত্রীদের নিয়ে একটি পরিবার গড়ে ওঠে। আর সে পরিবারের সদস্যদের প্রথমে বরণ করা হয়। এরপর কখনো পুনর্মিলনী হয়, কখনো বা ট্যুর। এভাবেই পরিবারের সদস্যদের বন্ধন মজবুত হয়।
সবশেষে ঢাবির প্রতিটি বাস পরিচালনা কমিটি, ড্রাইভার, হেলপার ও যাত্রী সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।


আরো সংবাদ



premium cement