০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এভারেস্ট জয় এক ভয়ঙ্করতম যাত্রা

এভারেস্ট জয় এক ভয়ঙ্করতম যাত্রা -


পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। এভারেস্ট জয়কে পৃথিবী জয়ের সাথে তুলনা করা হয়। পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করা পর্বতারোহীদের কাছে বেশ রোমাঞ্চকর। তাই তো শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে প্রতি বছরই শত শত মানুষ ছোটে নেপাল-চীন সীমান্তে অবস্থিত এই পর্বতশৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশ্যে। এই যাত্রা যতটা ব্যয়বহুল ঠিক ততটাই বিপদসঙ্কুুল। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা প্রায় ৮ হাজার ৮৫০ মিটার বা ২৯ হাজার ২৯ ফুট। এটি হলো পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু জায়গা। তাই একে পৃথিবীর ছাদও বলা হয়।
মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো শারীরিক ফিটনেস। কারণ এভারেস্টের এত বেশি উচ্চতায় উঠা ও প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে টিকে থাকার জন্য শারীরিক ফিটনেসের কোনো বিকল্প নেই। এমনকি পর্বতারোহীদের সবচেয়ে বেশি সময় করতে হয় ফিটনেস ঠিক রাখতে। দুইবার এভারেস্টজয়ী এবং মুসা ইব্রাহিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী এম এ মুহিত বলেন, ‘অন্যান্য খেলার মতো এভারেস্ট আরোহণও একটি খেলা তবে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক খেলা।’

এভারেস্ট আরোহণ পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম এক যাত্রা। যে যাত্রায় মানুষের বেঁচে ফেরার কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। এভারেস্ট চূড়ায় আরোহণ করতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। যেখানে প্রতি মুহূর্তে থাকে জীবননাশের আশঙ্কা। কারণ বরফে ঢাকা পর্বতের গা বেয়ে উঠতে গিয়ে হিমবাহের ফাটল, আকস্মিক তুষারধস ইত্যাদি পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন যেকোনো পর্বতারোহী। তুষারধসে সবচেয়ে বেশি পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়। ১৯২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৫০ জন পর্বতারোহী এভারেস্ট জয় করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এভারেস্টে প্রাণ হারানো এসব পর্বতারোহীর মৃতদেহ সেখানেই পড়ে থাকে বছরের পর বছর। কারণ সেখানে তুষারে পড়ে থাকা একজন পর্বতারোহীর মৃতদেহের ওজন বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তাদেরকে পর্বত থেকে নামানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমনকি এটি জেনে অবাক হতে হয় যে, এভারেস্টে পড়ে থাকা মৃতদেহের প্রায় ৩০ শতাংশ মৃতদেহ হলো মৃত পর্বতারোহীদের উদ্ধার করতে যাওয়া উদ্ধারকারীদের।

এভারেস্টে উঠার পথে একটি জায়গা আছে যেটিকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’। যে জায়গায় গিয়ে অগণিত পর্বতারোহী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী এম এ মুহিত তার পর্বতারোহণের সময়কার এক ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন তাতে তিনি বলেন, ‘আমি এভারেস্ট আরোহণ করার সময় ক্যাম্প তিন থেকে যাত্রার আগে সাতটি মৃতদেহ দেখেছি। আমি যখন এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়ার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছি তখন আমার চোখে কেমন যেন ঝাঁপসা দেখতে লাগলাম, আমি থেমে গেলাম। এরপর হঠাৎ শুনি কেউ হেল্প হেল্প, হেল্প বলে ডাকছে তখন তাকিয়ে দেখি আয়ারল্যান্ডের একজন পর্বতারোহী বসে পড়লেন তারপর শুয়ে পড়লেন আর এভাবেই তিনি মারা গেলেন। তার মৃতদেহ ক্রস করেই আমাকে এগিয়ে যেতে হয়েছিল।’ এ ছাড়া তিনি আরো বলেন, ‘এভারেস্ট আরোহণকালে আমি তিনবার নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে ফিরেছি।’

এভারেস্ট চূড়ায় আরোহণ করতে হলে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ভয়ঙ্কর এই পর্বত জয়ের নেশায় এভারেস্ট আরোহণ করেন নির্ভীক পর্বতারোহীরা। বাংলাদেশের আরেক এভারেস্টজয়ী সজল খালেদ এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথেই মৃত্যুবরণ করেন। এভারেস্ট জয়ের নেশায় উন্মত্ত পর্বতারোহীরা কী ভয়ঙ্কর সব ধাপ অতিক্রম করে পর্বতের চূড়ায় পৌঁছেন তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। বিশ্বের বুকে দেশের নাম উজ্জ্বল করা বাংলাদেশী এভারেস্টজয়ী মুসা ইব্রাহিম, এম এ মুহিত, সজল খালেদ, নিশাত মজুমদার, ওয়াসফিয়া নাজরীনসহ এভারেস্ট আরোহণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ঘিওরে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বিএনপির ২ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জিম্বাবুয়েকে লজ্জার রেকর্ডের দিকে ঠেলে দিচ্ছে টাইগাররা জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন : ফারুক আলমডাঙ্গায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নয়টি বাড়ি পুড়ে ছাই গৌরনদীতে আ’লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ রক্তাক্ত জখম ৫ টাঙ্গাইলে তৃষ্ণার্ত মানুষের পাশে সোনালি সূর্য শুরুতেই উইকেটের দেখা পেল বাংলাদেশ নারী কর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ : যা বললেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল মিয়ানমারের পুরুষদের বিদেশে কাজের আবেদন নিষিদ্ধ করল জান্তা সরকার তানজিদ-সাইফুদ্দীনকে নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে ৭ জন আটক

সকল