২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভিকারুন্নিসার ঘটনা দুঃখ যেন না বাড়ে

-

দেশবিখ্যাত ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনা বড়ই মর্মান্তিক, শোকাবহ ও বেদনাদায়ক। অরিত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রসঙ্গে তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী-সবাইকে গভীর সমবেদনা জানিয়ে দুু’টি কথা বলতে চাই। বলা যায়, মিডিয়ার কল্যাণে এবং সচেতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ত্বরিত তৎপরতায় ঘটনা অনেকদূর এগিয়ে গেছে এবং সরকার, মন্ত্রী তথা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ ঘটনা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট হওয়ায়, এটি শুধু ভিকারুন্নিসাতেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং সারা দেশের সব শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাই সবদিক সুষ্ঠুভাবে এবং অতিরিক্ত আবেগবর্জিত হয়ে যথাযথ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হয় শিক্ষাব্যবস্থার ওপর আঘাত এসে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সর্ব সাধারণকে ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি উপলব্ধি ও মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রকৃত শিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। শিক্ষকেরা জাতির ভবিষ্যৎ গঠনের কারিগর। কোনো শিক্ষক যদি শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের সাথে অসদাচরণ করেন তা অবশ্যই নিন্দনীয় এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাই বলে কোনো ঘটনার জন্য পুরো শিক্ষক সমাজকে আসামি করা উচিত হবে না। শিক্ষকেরা এমনিতেই একরকম ‘জিম্মি’ হয়ে আছেন। এ কারণে ভোগান্তি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে আছে। কিছু সুবিধাবাদী এর ফায়দা তুলছে। আমরা যারা অভিভাবক, অল্পবিস্তর লেখাপড়া করেছি, তারা শিক্ষকের হাতের দুই-এক ঘা বেতের বাড়ি হয়তো খেয়েছি। তারপর বেত দেখেই ভয়ে ক্লাসে শান্ত থাকা এবং ভালোভাবে পড়া শেখার চেষ্টা করেছি। স্কুলে গরুর মতো আমাদের পেটাতে হয়নি। শিক্ষকের যথার্থ শাসনের যেমন কল্যাণ রয়েছে, তেমনি তাদের স্নেহ ও মমতাও অপরিহার্য। একজন মহান শিক্ষকের কড়া শাসন মানুষ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু শিক্ষকদের শাস্তিদানের ক্ষমতা আর না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে দেখা যায়। আগে বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভব হতো না কিংবা হলেও বিদ্যালয়েই তার সমাধান হয়ে যেত এবং অভিভাবক পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজন হতো না। বর্তমানে অবস্থা এমনই হয়েছে যে, এসব সমাধানের ব্যাপারে অভিভাবকদের ডেকে বারবার মিটিং ও আলোচনা করেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায় না। ছাত্রছাত্রীর মা-বাবার কাছে নালিশ করেও কাজ হয় না। আগে শিক্ষক বেত দিয়ে টেবিলে আঘাত করার সাথেই সাথেই ক্লাসরুম নিস্তব্ধ হয়ে যেত। অপর দিকে, সন্তানের অন্যায়ের ব্যাপারে শিক্ষকদের কাছে অভিভাবকেরা নালিশ করতেন এবং এর সমাধান পেতেন। বর্তমানে শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে গেলে তাদের তেমন কেউ গুরুত্বই দেয় না। শিক্ষক সেখানে চিৎকার করে করে হয়রান, নিরুপায় ও অসহায় হয়ে, হাল ছেড়ে দিয়ে নিজেদের দুর্ভাগ্যের কথা অভিভাবকদের কাছে তুলে ধরেন।
মোট কথা অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা অনেকটাই ধ্বংসের মুখে। শিক্ষককে কিছুটা ভয় না পেলে ক্লাসের পড়াও বাড়িতে শিখতে চায় না। এতে অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী পড়া শিখে না এলে ‘কোচিংবাজ’ ছাড়া কেউ সন্তুষ্ট হতে পারেন না। শাস্তির ভয় না থাকায় অবুঝ ও সরল শিক্ষার্থীরা শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকার পরও দুষ্টুমি, মারামারি, হইচই, গল্প, গুজব এমনকি গেম খেলায় লিপ্ত থাকে। কোনো কোনো স্কুলের শ্রেণিকক্ষের অবস্থা এমনই। তাহলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে!
অরিত্রীর ঘটনার অজুহাতে শিক্ষকদের টুঁটি চেপে যেন ধরা না হয়। ক্লাসে মোবাইল নেয়া নিষেধ, এটা অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়া হয় আগেই। সেখানে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে যাওয়া অভিভাবক বন্ধ করতে পারবেন না কেন? এ ক্ষেত্রে অভিভাবককে না ডেকে ব্যবস্থা নেয়া অনুচিত।
আবেগ ও জেদকে প্রশ্রয় দিয়ে কাউকে ‘হিরো’ বানানো ঠিক নয়। ক্লাস ও পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নেয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়। নিষ্ঠুরতা বা পক্ষপাতিত্ব নয়, বাস্তবতার নিরিখে এবং মায়া মমতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসা বজায় রেখেই সব ইস্যুর সুরাহা করা হোক। হ


আরো সংবাদ



premium cement
বসুন্ধরা গ্রুপে চাকরির সুযোগ মাদারীপুরে মাহিন্দ্র উল্টে চালকসহ নিহত ২ জর্ডান ও ইসরাইল সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সবার আগে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের মার্কিন ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভ থেকে গ্রেফতার ৯০০ নির্বাচনের আগে ‘সিএএ’ চালু করে ভোট টানার কৌশল ব্যর্থ বিজেপির ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ পালনের আহ্বান কানাডায় বেকারত্ব বিদেশী শিক্ষার্থীদের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে রাফাতে ইসরাইলি হামলায় এক পরিবারের ৯ সদস্য নিহত আজ ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতারের মধ্যেই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত

সকল