২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে এরদোগানের সাফল্য অক্ষুণ্ন, তবে ...

নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে একে পার্টির সমর্থকদের সমাবেশ - ছবি : সংগৃহীত

তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে ১৯৯৪ সালে সূচিত হওয়া একেপির সাফল্য অক্ষুণ্ন রয়েছে। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের জোট শতকরা ৫১ ভাগের বেশি ভোট পেয়েছে, যা বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিতভাবে পাওয়া ভোটের চেয়ে বেশি। অবশ্য রাজধানীসহ প্রধান দুটি শহরে হেরে গেছে একেপি জোট। এ ঘটনা ক্ষমতাসীন দলটির ওপর মারাত্মক আঘাত বলে বিশ্লেষকদের মত। এই ফল থেকে কী শেখার আছে? নয়া দিগন্তের পাঠকদের জন্য এমনই সাতটি উল্লেখযোগ্য বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।

অনিষ্টের মূল অর্থনীতি
এই নির্বাচনে এরদোগানের জোট একেপার্টি ও ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি-এমএইচপি ৫১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কিন্তু রাজধানী আঙ্কারা, ইস্তাম্বুলসহ বড় শহরগুলোতে হেরে যায়। ফাউন্ডেশন ফর সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসি-এসওডিইভি প্রকাশিত জরিপ অনুসারে নির্বাচনে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে হেরে যাওয়ার পেছনে বেকারত্ব ও জীবনযাত্রার খরচ ক্রমবর্ধমান থাকাকে দায়ী করা হয়েছে। সংস্থাটির মতে তুর্কি অর্থনীতি মন্দায় প্রবেশ করেছে। গত জানুয়ারিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম আগের মাসের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।

আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলের ক্ষমতা পরিবর্তন
১৯৯৪ সালের পর প্রথমবারের মতো প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি-সিএইচপি তুরস্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি শহর আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে বেসরকারিভাবে জিতেছে। সরকারিভাবে ফলাফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে ইস্তাম্বুলে জিতেছে আট লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে। আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুল উভয় মহানগর এরদোগানের মেয়রদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এরদোগান নিজে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন। সেখানকার ভূমিকা তাকে প্রেসিডেন্ট হতে সহায়তা করে। এসওডিইভির মতে এই শহর হাতছাড়া হওয়া মানে তুরস্কের সমাজে সম্ভবত নতুন শক্তি তৈরি করা।

কুর্দিরা রাজা বানায়, কিন্তু তারাও কিছু শহরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে
কুর্দিশ পিপলস ডেমোক্র্যাসি পার্টি-এইচডিপি পশ্চিম ও দক্ষিণ তুরস্কে কোনো প্রার্থী দেয়নি। এটি নির্বাচনের ফলাফলে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। তারা আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে কামাল আতাতুর্কের সিএইচপি প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এটি বিরোধী দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপরেও এরদোগানের ভূমিকার কারণে কুর্দি-সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের পাঁচটি শহরে এইচডিপি হেরে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, তিন বছর আগে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি-পিকেকে নিষিদ্ধ করা হলে তাদের সাথে এইচডিপির দূরত্ব তৈরি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এইচডিপি মেয়র দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন এবং মৌলিক পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হন।

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হেরেছেন এরদোগান
শহুরে বনাম গ্রামীণ এটি নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। এরদোগান হেরেছেন ঘনবসতিপূর্ণ শহরে। বিশেষ করে প্রধান শহর যেমন আনাতোলিয়া, আদানা, মারসিন ও হাতায় শহরে তিনি হেরেছেন। কিন্তু জিতেছেন কম জনবসতিপূর্ণ গ্রামীণ শহরে। বালিকসির ও বিরসার মতো কয়েকটি শহরে সরকারি জোট সামান্য ব্যবধানে জিতেছে। ২০১৭ সালের সাংবিধানিক গণভোটের পর তুর্কি সরকার মহানগরীতে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিরোধী দল দেশের সবচেয়ে ২০ জনবহুল শহরের অর্ধেকের নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে।

পূর্বাঞ্চলে কমিউনিস্টদের শক্তি বাড়ছে
সবার নজর যখন ইস্তাম্বুলকে নিয়ে সেখানে ভোটাররা পূর্বাঞ্চলীয় শহর তানসেলিতে দেশের প্রথম কমিউনিস্ট মেয়র নির্বাচিত করেন। তুর্কি কমিউনিস্ট পার্টি-টিকেপি প্রার্থী ফাতিহ ম্যাকাগ্লু ব্যাপক ভোটে তানসেলির মেয়র নির্বাচিত হন। তার জয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিনি কুর্দি সমর্থক এইচডিপির প্রার্থীকে হারিয়েছেন। ম্যাকাগ্লুর প্রতিশ্রুতি ছিল তিনি নাগরিকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করবেন না। সিএইচপি থেকে আরেকজন কমিউনিস্ট রাজনীতিক আলপার তাস ইস্তাম্বুলের বায়োগলু জেলার এ কে পার্টির কাছে সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হন।

এরদোগানের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন অক্ষুণ্ন
এত কিছুর পরও ভোটাররা প্রেসিডেন্ট এরদোগানের প্রার্থীদের ৫১ ভাগ ভোট দিয়েছেন। এই ফলাফলটি গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডাটাগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি প্রমাণ করে যে, একটি অর্থনৈতিক মন্দা ও বাড়তি বেকারত্বের মধ্যেও এরদোগান তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়। এরদোগান একটি অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির প্রতিশ্রুতি দেয়ার কারণে তার পক্ষে আবার বড় পরিবর্তন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তুরস্কের গণতন্ত্র এখনো স্থিতিশীল
যদিও তুরস্কের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক বিকাশ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের দ্বারা তীব্র সমালোচিত হচ্ছে। তবুও তুর্কি জনগণ গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয় ভোটাধিকার মুক্তভাবে প্রয়োগ করেছে। বিরোধী নেতারা বড় শহরগুলোতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য উপভোগ করেছে এবং দেখিয়েছে যে, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা এরদোগানের ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে বিজয়ীকে পরাজিত করা সম্ভব। সূত্র : মিডলইস্ট আই


আরো সংবাদ



premium cement
কলকাতার রাস্তায় চাকরি হারানো শিক্ষকরা শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যশোর কারাগারে হাজতিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক আতঙ্ক চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম

সকল