২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এরদোগানের কণ্ঠে ‘মসজিদ আমাদের ক্যান্টনমেন্ট, গম্বুজ আমাদের হেলমেট’ (ভিডিও)

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান - ছবি : সংগৃহীত

২০ বছর আগে যে কবিতা আবৃত্তি করার কারণে বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানকে কারাবরণ করতে হয়েছিল ঠিক ২০ বছর পরে সেই ময়দানে হাজারো তুর্কি নাগরিকদের সামনে আবার সেই কবিতা পাঠ করলেন এরদোগান।

বহুদিন পর তার কন্ঠে আবার শোনা গেলো:
‘‘মসজিদ আমাদের ক্যান্টনমেন্ট
গম্বুজ আমাদের হেলমেট
মিনার আমাদের বেয়নেট এবং
মুসল্লিরা আমাদের সৈনিক
এই পবিত্র দল পাহারা দিবে আমাদের দীনকে।’’

কবিতা শুনিয়ে তখনকার সরকারের সঙ্গে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের শাসনের পার্থক্য তুলে ধরেন সবার সামনে।

২০ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে ইস্তাম্বুল সিটির মেয়র থাকাকালীন তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় শহর সিআরতে তিনি এই কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন।

তৎকালীন সেক্যুলার সরকার এই কবিতার মাঝে ধর্মীয় উসকানি এবং ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতার মাঝে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ এনে আজকের জনপ্রিয় নেতা এরদোগানকে কারাদণ্ড দেয়। কয়েকমাস কারাভোগ করে অবশেষে মেয়র এরদোগান ২০০০ সালের মার্চে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম নেতা এরদোগান আবার বিখ্যাত সেই কবিতাটি শুনিয়ে আবার উজ্জীবিত করলেন ভক্তদের।

 

আরো দেখুন : রাশিয়ার এস-৪০০ কিনেছি, পরে এস-৫০০ও যোগ করা হবে : এরদোগান
নয়া দিগন্ত অনলাইন; ০৭ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৭

রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০ কেনা কোন অবস্থাতেই বাতিল করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। দেশটির চ্যানেল-২৪ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বুধবার তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মার্কিন চাপে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি থেকে কিছুতেই সরে আসবে না তুরস্ক। পরবর্তীতে তুরস্ক এস-৫০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও কিনতে পারে বলে জানান তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পাদিত অস্ত্র কেনার চুক্তি থেকে তুরস্ককে সরে আসার মার্কিন আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।

এরদোগান বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি হয়ে গেছে। এটি থেকে সরে আসার সুযোগ নেই। এখন এই চুক্তি বাতিল করা হবে অনৈতিক। এটা নিয়ে কেউ কোন কথা বলার অধিকার রাখে না।

ঐ সাক্ষাৎকারে এরদোগান আরো বলেন, ‍তুরস্ককে বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপ করে ঠেকিয়ে রাখা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না। কেননা তুরস্কের নিজেদের অধিকার রয়েছে বাণিজ্যিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার।

এর আগে, আমেরিকার শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ইউরোপে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর প্রধান জেনারেল কার্টিস স্ক্যাপ্যারোটি এস-৪০০ ইস্যুতে তুরস্কের সমালোচনা করেন। তিনি এস-৪০০ কেনার বদলে তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্যাট্রিয়ট কেনার আহ্বান জানানিয়ে বলেন, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ন্যাটোর নীতিমালার পরিপন্থী।

অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আগে থেকেই বলে এসেছেন, এস-৪০০ নিয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। রাশিয়া থেকে এই ব্যবস্থা কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে আমেরিকা কখনও তার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা প্যাট্রিয়ট বিক্রির জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করলে আঙ্কারা তাদের কাছ থেকেও তা কিনবে।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ।


এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ : বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা

বর্তমানে রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির বিমানবিধ্বংসী ও ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ। এস-৪০০ বর্তমানে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এস-৩০০ এর উত্তরসরি ও আপগ্রেড ভার্সন এই এস-৪০০, এই সিস্টেমটা -স্টেলথ, সেমি স্টেলথ, বোমারু বিমান, জনহীন বিমান (ড্রোন), দ্রুত গতির জেট এবং ক্রুজ মিসাইল ধ্বংসে সহায়তা করবে। এ ক্ষেপণাস্ত্র চারশ' কিলোমিটার দূরের বিমান এবং ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশে থাকা অবস্থায় ধ্বংস করে দিতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। মার্কিন নির্মিত এমআইএম-১০৪ প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আড়াইগুণ বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে এই এস-৪০০ সিস্টেম।

ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ কিনতে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে ভারত চীন ও পাকিস্তানের মতো পরমানু ক্ষমতা সম্পন্ন দেশগুলোর বিপক্ষে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। এদিকে, ওয়াশিংটন মস্কোর বিরুদ্ধে কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভাসারিস থ্রু স্যাঙ্কশনস অ্যাক্ট (সিএএটিএসএ) আরোপ করেছে। যার একটি ধারায় বলা হয়েছে রাশিয়া থেকে যদি কোন দেশ উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করে তবে সেই দেশের উপর অবরোধ আরোপ করা হবে। তবে সিএএটিএসএ অবরোধ ভারতের উপর আরোপ করা হবে কিনা তা নিয়ে নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে এই ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা চীন তাদের প্রতিরক্ষায় স্থাপন করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাদের সামরিক বহরে যুক্ত কতে যাচ্ছে। চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ এর আদ্যোপান্ত:

১. ১৯৯০ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি বিশ্বের অন্যতম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ তৈরি করে। ২০০৭ সালের ১ লা জুলাই রাশিয়ান আর্মড ফোর্স ইলেকট্রোস্টাল শহরের কাছে সর্বপ্রথম এস-৪০০ মিসাইল স্থাপন করে।
২. এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ কেবলমাত্র একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়। এটি আসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ আকাশসীমা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
৩. এতে ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রের লঞ্চিং প্যাড, ক্ষেপণাস্ত্রবাহী গাড়ি, শক্তিশালী রাডার এবং স্বয়ংক্রিয় আক্রমণে প্রতিপক্ষকে বিপর্যস্ত করার সমস্ত রকমের বন্দোবস্ত।
৪. এর রাডার এতটাই শক্তিশালী যে স্টেলথ্ ফাইটার অর্থাৎ গোপনে আক্রমণকারী যুদ্ধবিমানের হামলাকেও রুখে দিতে সক্ষম এই স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
৫. এর ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার। যে কোনও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং ব্যালিস্টিক মিসাইলেরও হামলা রুখে দিতে সক্ষম।
৬. এই বিশেষ ব্যবস্থা একসঙ্গে ৩০০ টি টার্গেটে নজর রাখতে পারে।একসঙ্গে ৩৬ টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ৩৬টি আলাদা আলাদা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
৭. এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ৪.৮ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড এবং ১৭০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।
৮. ভারত ৩৯০০০ কোটি টাকা খরচ করে এই অত্যাধুনিক এয়ারডিফেন্স সিস্টেমের ৫ টি ইউনিট নিতে চাচ্ছে।
৯. ভারতের উত্তর ও পশ্চিম সীমান্তে প্রতিপক্ষের আগ্রাসনের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। সেদিকেই মোতায়েন করা হতে পারে বিশেষ এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ।
১০. এস-৪০০ কে বর্তমানে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement