২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৪ হাজার ৪৭৫ জন সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে : এরদোগান

৪ হাজার ৪৭৫ জন সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে : এরদোগান - সংগৃহীত

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান বলেছেন,  আফরিনে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৪৭৫ সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে। উত্তর ইরাকে ৪১৪ পিকেকে বিদ্রোহীকে অভিযানের সময় নির্মূল করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ওই দেশটিতে ৩৯৮ সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে।

শনিবার ইকুয়েডর প্রদেশের পূর্ব এঞ্জেলেম প্রদেশের বিচারপতি ও অ্যাডভোকেট (একে) পার্টির সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

এদিকে ইরাকের সাধারণ নির্বাচনে দেশটির জোটের বিজয়ী মুকতাদা আল সদরকে শুক্রবার ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন এরদোগান। এরদোগান ইরাকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট আল সদরকে অভিনন্দন জানায়ে ইরাকি জোটের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার ঘোষণা দেন। কিরকুকের ইরাকি তুর্কমেনিয়ার কিছু ভোট অনিয়মের ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করে এরদোগান ঘটনাটি তদন্তের জন্য আল-সদরের সমর্থনও দাবি করেন।

অন্যদিকে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরো ফের নির্বাচিত হওয়ার পর তাকেও অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।  এরদোগান মাদুরোকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানান এবং দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

মার্কিন ডলারের বিরুদ্ধে সোচ্চার এরদোগান

নিজ দেশের জনগনকে তাদের কাছে সংরক্ষিত মার্কিন ডলার ও ইউরো ভাঙিয়ে দেশি মুদ্র সংগ্রহ করার আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। শনিবার এক নির্বাচনী সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান।

শনিবার তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ইরজুরুমে এক নির্বাচনি সমাবেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভাইয়েরা আপনাদের যাদের বালিশের নিচে ডলার বা ইউরো রয়েছে, তারা এগুলো ভাঙিয়ে লিরা করে নিন। এ খেলায় আমরা সম্মিলিতভাবে তাদের ব্যর্থ করে দেবো।’
প্রসঙ্গত সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের বিরুদ্ধে তুর্কি মুদ্রার মান কিছুটা কমেছে। অনেকদিন ধরেই ইউরোপ ও আমেরিকার আধিপত্য থেকে বের হয়ে আসার সংগ্রাম করছে তুরস্কের একে পার্টির সরকার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্র তহবিলের সব ঋণ পরিশোধ করেছে এরদোগান সরকার।

এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেনের জন্য মার্কিন ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের প্রভাব হ্রাসের লক্ষ্যে এই আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। গত মাসের মাঝামাঝিতে এরদোগান বলেছিলেন, ‘আমি জি২০ সম্মেলনে প্রশ্ন করেছিলাম কেন আমরা অন্য মুদ্রা ব্যবহার না করে ডলার ব্যবহার করছি, আমরা কি স্বর্ণ ব্যবহার করতে পারি? ডলারের কারণে মুদ্রা বিনিময় হার সবসময় চাপে থাকে কিন্তু স্বর্ণের ক্ষেত্রে কখনোই তা হবে না’।

এরদোগান বর্তমানে আসন্ন প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবারের নির্বাচনী ইশতিহারে তুরস্ককে দুনিয়ার শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা সামগ্রী রফতানিকারক দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার করেছেন এরদোগান। আসন্ন প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার আংকারায় ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টির নির্বাচনি ইশতিহারে তিনি এ অঙ্গীকার করেন। আগামী ২৪ জানুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এবার একে পার্টি’র নির্বাচনি ইশতিহারের শিরোনাম, ‘স্ট্রং পার্লামেন্ট, স্ট্রং গভর্নমেন্ট, স্ট্রং তুর্কি’। এতে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে তুরস্কের অংশীদারিত্ব আরও বাড়ানোর অঙ্গীকার করেন এরদোগান। তিনি বলেন, ‘তুরস্ক শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণই হবে না, বরং একটি নেতৃস্থানীয় রফতানিকারক দেশে পরিণত হবে।’

তুরস্ক প্রতিরক্ষা শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে : এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেব তায়্যেপ এরদোগান বলেছেন, তুরস্ক শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণই হবে না, বরং দুনিয়ার শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা সামগ্রী রফতানিকারক দেশে পরিণত করা হবে।

২৪ জানুয়ারির প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন উপলক্ষ্যে আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টির ‘স্ট্রং পার্লামেন্ট, স্ট্রং গভর্নমেন্ট, স্ট্রং তুর্কি’শীর্ষক নির্বাচনি ইশতিহারে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এরদোগান অঙ্গীকার করেন, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ৪০ শতাংশে উন্নীত করা হবে। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে তুরস্কের অংশীদারিত্ব আরো বাড়ানো হবে।

এরদোগান বলেছিলেন, সিরিয়া ও ইরাক পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় তুরস্ককে বাধ্য করেছে। এসব কারণে দেভলেট বাহসেলি’র সঙ্গে আলোচনার পর আমরা ২০১৮ সালের ২৪ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

জেরুসালেম প্রসঙ্গে এরদোগান বলেছিলেন, জেরুসালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের কোনো মূল্য নেই। এই পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রাম্পের জেরুজালেম প্রদক্ষেপ নিয়ে জাতিসঙ্ঘের ভোট আমাদের দেখিয়ে দেয় যে, এই সমস্ত পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী অনুমোদিত নয়। যদি আপনি বলেন, আমার কাছে টাকা আছে, আমার ক্ষমতা রয়েছে এবং এগুলো ব্যবহার করে আমি সবাইকে ভয় দেখাতে পারি, আপনি এটা করতে পারবেন না এবং কেউ আপনাকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করবে না। এখন আপনি সেখানে আপনার দূতাবাস স্থানান্তরিত করেছেন। তাতে কি হয়েছে? ফিলিস্তিন রাজধানী শহর জেরুসালেম এবং এটা পৃথিবীর সবাই জানে। এ সম্পর্কে কারো কোনো দ্বিধা নেই। তা আপনি স্বীকার করেন বা না করেন, এতে আামদের কিছু আসে যায় না।

এরদোগান বলেছিলেন, ইসরাইলি দস্যুতার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে পদক্ষেপ গ্রহণ পুরো বিশ্বকে এটা দেখাচ্ছে যে মানবতা এখনো মরে যায়নি। ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞ দস্যুতাবৃত্তি, পাশবিক এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।


আরো সংবাদ



premium cement