২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘আমেরিকার হাতের পুতুলে পরিণত হবে না পাকিস্তান’

‘আমেরিকার হাতের পুতুলে পরিণত হবে না পাকিস্তান’ - সংগৃহীত

ইমরান খানের নেতৃত্বধীন পাকিস্তানের তেহরিকে ইনসাফ পার্টি বা পিটিআই বলেছে, পাকিস্তানকে আমেরিকার হাতের পুতুলে পরিণত করতে দেয়া হবে না।

পিটিআই’র সিনিয়র নেতা ও দলের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরি জিও টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পাকিস্তান কখনো আমেরিকার ক্রীড়নক হবে না এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ।

পিটিআই দলের মার্কিন বিরোধী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে চৌধুরি বলেন, তার দল হোয়াইট হাউজকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে, পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ায় আমেরিকার খেলার পুতুলে পরিণত হবে না।

পিটিআই’র মুখপাত্র বলেন, হোয়াইট হাউজকে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে তাকে অনেক বড় সমস্যার মুখে পড়তে হবে।

চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে বলেও জানান পাকিস্তানের সম্ভাব্য ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে ইসলামাবাদের সাথে ওয়াশিংটনের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে সমর্থন জানানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

গত ২৫ জুলাই পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ছোট কিছু দলের সমন্বয়ে এরইমধ্যে সরকার গঠনের অবস্থায় পৌঁছে গেছেন ইমরান খান।

নওয়াজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ বহু বছর দেশটির ক্ষমতায় ছিল। এই দল আমেরিকা বা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ইসলামাবাদের ওপর ওয়াশিংটন প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ট্রাম্প

ধীরে ধীরে পাকিস্তানের সাথে সবরকমের সহযোগিতার রাস্তা বন্ধ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাড়তি খরচ হচ্ছে, এই যুক্তি দেখিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে শিক্ষাগত প্রশিক্ষণ ও সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে পেন্টাগন।

বিষয়টি নিয়ে ইসলামাবাদ বা ওয়াশিংটনের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পিছনের কারণটি ভালই বোঝা যাচ্ছে বলে দাবি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞমহলের। চীন ও রাশিয়ার সাথে পাকিস্তানের সখ্যতাকে যে ভালো চোখে দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র, এই সিদ্ধান্ত তারই ফলাফল বলে মনে করছে তারা।

সন্ত্রাস দমনের বদলে আর্থিক নিরাপত্তা দানের শর্তে পাকিস্তানকে ১.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দিত যুক্তরাষ্ট্র। যা গত মাসেই বন্ধ করেছেন প্রেসিডেট ট্রাম্প। এবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষিত করার কাজও বন্ধ করলেন তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং প্রোগ্রাম খাতে, পাকিস্তানের জন্য গত পনেরো বছরে যুক্তরাষ্ট্র খরচ করেছে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর পুরোটাই নষ্ট হয়েছে বলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মার্কিন সেনাবোহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার মতে, এই আর্থিক সাহায্যের বিনিময়ে জঙ্গি দমনে ভূমিকা নেওয়ার কথা ছিল ইসলামাবাদের। কিন্তু এই কাজে  সম্পূর্ণ ব্যর্থ সেই দেশ। সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ তো দূরে থাক, নিজেদের দেশকে সন্ত্রাসীদের জন্য স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ফেলেছে পাকিস্তান। 

তবে কেবল এই একটা কারণেই এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? এই যুক্তি মানতে নারাজ আন্তর্জাতিক মহল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছনে কাজ করছে চীন ও রাশিয়ার সাথে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সখ্যতা।

একদিকে বেইজিং-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করছে ইসলামাবাদ ও বেইজিং। তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।

অন্যদিকে, তাঁদের কায়দায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রাওয়ালপিণ্ডির সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর করেছে মস্কো। রুশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি ট্রেনিং স্কুলেই হবে সেই প্রশিক্ষণ। এতে হতবাক হয়েছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি যে ভারতের পক্ষে সুখকর নয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement