মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে চলছে প্রথম বিভাগ হকি লিগ। ১১টি দল অংশ নিয়েছে। প্রতি দলে কমপক্ষে ১২ জন করে খেলোয়াড় ধরলেও মোট খেলোয়াড় সংখ্যা ১৩২ জন। মজার ব্যাপার হলো দু-একজন ছাড়া সবাই মওসুমি খেলোয়াড়। তাদের কেউ চাকরি করেন, কেউ ব্যবসা, কেউ বেকার, আবার একটা অংশ ছাত্র। তারা কেউই নিয়মিত তো দূরের কথা মাঝে-মধ্যেও স্টিক ধরেন না। বেকার অংশের গুটি কয়েক এবং ছাত্রদের মাঝে কেউ কেউ মাঝে মধ্যে শখের বসে স্টিক ধরেন। এমন জনরাই এসেছেন প্রথম বিভাগ হকিতে খেলতে।
বাংলাদেশের হকিতে প্রিমিয়ারেই যেখানে অবহেলিত খেলোয়াড়রা সেখানে প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগে খেলোয়াড়দের প্রাপ্তি কতটুকু হবে সেটি সহজেই অনুমেয়। বিকেএসপি এবং হাতে গোনা কয়েকটি জেলা ছাড়া হকিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না নতুন প্রজন্ম। যেসব সংগঠক ও কোচ এই ডিসিপ্লিনটিকে এখনো আঁকড়ে ধরে দিন পার করছেন, তারা শুধু হকিকে ভালোবাসেন বলেই টিকে আছেন। কারো কারো মতে অন্য কোনো উপায় নেই এবং হকির পোকা মাথায় বিঁধে আছে বলেই তারা এখনো হকি নিয়ে পড়ে আছেন। এই তালিকায় আছেন নওগাঁ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, নাটোর, ঢাকার আরমানিটোলা, খুলনার কয়েকজন কোচ ও সংগঠক।
তাদের কয়েকজনের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ‘কী করবে হকি খেলে। এটিকে প্রফেশন হিসেবে নেয়ার কি কোনো জায়গা আছে। বর্তমানে যারা সিনিয়র আছে তাদের দিকে তাকালেই ব্যাপারটি সুস্পষ্ট। কয়েকজন পারফর্ম করে বাহিনীতে চাকরি পেয়েছেন বলে ভাগ্য ভালো। এখন নতুন খেলোয়াড়দের পারফর্ম করারও কোনো সুযোগ নেই। কোনো লিগই তো নিয়মিত হয় না। ক্লাবগুলোর অনাস্থা এমনপর্যায়ে গেছে যে তারকা খেলোয়াড়রাই উপযুক্ত পারিশ্রমিকের তিন ভাগের এক ভাগও পায় না। নতুনদের দিকে দৃষ্টি দেয়ার সময় কোথায়।’
প্রথম বিভাগে খেলতে জেলা শহর থেকে যারা এসেছেন তাদের মাঝে উৎসবমুখর একটা ভাব। মনে হচ্ছে ঢাকায় বেড়াতে এসেছেন। মাসখানেক ক্লাবগুলোর উপরে থেকে-খেয়ে সময় পার করে ভ্রমণের আনন্দ নেয়াটাই যেন মুখ্য। স্কুল হকি এবং বিভিন্ন টুর্নামেন্টে মাঝে মধ্যে খেলে স্টিক ধরা শিখেছেন। কেউ কেউ ভালোও খেলছেন। হকিকে প্রফেশন হিসেবে নেয়ার কথা কেউ ভাবেন না। গত এক বছরে নিয়মিত সাত দিন প্রাকটিস করেছেন এমন কেউ নেই। সরেজমিন কয়েকজন ছাত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা শখের বসে খেলেন। এখানে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তাই কেউ চাকরি করছেন, কেউ ব্যবসায় মন দিচ্ছেন। সংসারের হাল ধরেছেন কেউ কেউ।’
প্রথম বিভাগে অংশ নেয়া কয়েকটি ক্লাব কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘একটা ক্লাব চালাতে লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। অনেকেই বলেন কাউন্সিলরের জন্য কোনোমতে দল গঠন করি। এমন যারা বলেন, তারা একটা ক্লাব চালিয়ে দেখান। আবাহনী-মোহামেডান একটা ব্র্যান্ড। ঊষা ক্রীড়া চক্রের মতো ক্লাবও হিমশিম খায়। কারণ তাদের কোনো ডোনার নেই। তারপরও যে পারিশ্রমিক তারা খেলোয়াড়দের দেয় তা মনে রাখার মতো। আমরা নিয়মিত প্লেয়ার কোথায় পাবো। ফলে জেলা শহর থেকেই প্লেয়ার আনি। প্রথম বিভাগ খেলি এটাই তো বেশি। ফেডারেশন থেকে কী পাই।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা