২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রংপুরে ভিজিএফের ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার : আ’লীগের ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩

-

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরে হতদরিদ্র ও অসহায়দের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ভিজিএফের চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে গোডাউনজাত করার অভিযোগে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

বুধবার দিবাগত রাত ১টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত স্থানীয় পালিচড়া বাজারে এই অভিযান চলে। এসময় ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেত্রী নাছিমা জামান ববি ও ভাইস চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি নেতা মাসুদার রহমান মিলন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের সময় উপস্থিত রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান মিলন জানান, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার ২৯০ জন সুবিধাভোগীর মাঝে বিতরণের জন্য গত মঙ্গলবার ৩ হাজার ১৪৫ বস্তা চাল ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। বুধবার ইউপি মাঠে দিনভর চাল বিতরণ করা হলেও সন্ধ্যা নাগাদ ৫০-৫৫ জন হতদরিদ্র চাল পায়নি। তারা চালের দাবিতে মাঠেই বিক্ষোভ শেষে ইফতার করে। রাত সাড়ে ৮টায় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা চাল না পাওয়া হতদরিদ্রদের নাম লিখে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে চাল দেয়ার আশ্বাস দেন।

অভিযানের সময় উপস্থিত সদর উপজেলা চেয়ারম্যান যুব আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক নাছিমা জামান ববি জানান, বুধবার রাত ৯টায় একটি অটোতে করে সরকারি বরাদ্দ পাওয়া ভিজিএফের চালের ৩০ বস্তা চাল স্টেশন এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় নগরীর দর্শনায় স্থানীয়রা আটকে দেয়। খবর পেয়ে চালের বস্তাগুলো তাজহাট থানা পুলিশ জিম্মায় নেয়। এসময় অটোচালক উজ্জলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো বিপুল পরিমাণ চাল পালিচাড়া হাটের কয়েকটি গোডাউনে রাখা হয়েছে তথ্য পায় পুলিশ। বিষয়টি র‌্যাবের নজরে এলে বুধবার দিবাগত রাত ১টায় পালিচাড়া হাটে চাল উদ্ধারে অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় তিনটি গোডাউন থেকে ৬০০ বস্তা খাদ্য অধিদপ্তর লেখা চালের বস্তা উদ্ধার করে তারা। এসব বস্তা হতদরিদ্রদের না দিয়ে কালোবাজারে গুদামজাত করে রাখা হয়েছিল। এসময় র‌্যাব ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা, ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম ও আকমল হোসেনকে গ্রেফতার করে।

উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, প্রধানমন্ত্রী হতদরিদ্রদের ভালোভাবে ঈদ করার জন্য চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু এক শ্রেণির নীতিভ্রষ্ট জনপ্রতিনিধি তা কালোবাজারে বিক্রি করে অসহায়দের ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত করছে। এরসাথে অনেক নীতিভ্রস্ট সরকার দলীয় নেতাকর্মী নামধারী ব্যক্তিও আছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

এ ব্যপারে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানা নয়া দিগন্তকে জানান, বুধবার ইফতারের আগ মুহূর্তে চাল বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিছু স্লিপ পাওয়া ব্যাক্তি চাল পায়নি। তাদের বৃহস্পতিবার চাল দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ না করায়, তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় করার জন্য র‌্যাব দিয়ে অভিযান পরিচালনা করিয়েছেন। আমি ৯টি ট্রাকে ৩ হাজার ১৪৫ বস্তা চাল এনে পরিষদের গোডাউনে গুদামজাত করি এবং তা বিতরণ করি। যেসব বস্তা বাইরের গোডাউনে পাওয়া গেছে তা পরিষদের নয়। উপকারভোগীরা চাল নিয়ে সেগুলো ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছেন। ব্যবসায়ীরা তা কিনে গুদামজাত করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement