২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডাববোঝাই অটোরিকশায় প্রাইভেট কারের ধাক্কা : নিহত ৩

- নয়া দিগন্ত

বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বিকেলে ৫টার দিকে আদমদীঘি থেকে একটি ডাববোঝাই অটোরিকশা মুরইলের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় মুরইল বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার অটোরিকশাটিকে সামনাসামনি ধাক্কা দেয়। এতে দুই গাড়ির মোট আটজন আহত হয়।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়নের শ্যামল সহন (৫৫) মারা যান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোরিকশা চালক দুপচাঁচিয়া উপজেলার আফজাল হোসেন (৪৫) এবং সান্তাহার এলাকার শহীদুল ইসলাম (৬৫) মারা যান।

আহত অন্যদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আদমদীঘি থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ওই সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। প্রাইভেট কারের দুই যাত্রীর অবস্থাও সংকটাপন্ন।

 

আরো পড়ুন : বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ৮৪ কিমি. রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ধীরগতি
আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া অফিস, ১৯ আগস্ট ২০১৮

বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলবাসীর বহুল প্রত্যাশিত বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে অগ্রগতি নেই। ফলে এই অঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তারা সব জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে উত্তরের ১০টি জেলার সাথে ৭২ কিলোমিটার রেলপথ কমে আসবে। সেই সাথে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।
বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি রেলপথ নির্মাণের জন্য এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন যাবৎ দাবি জানিয়ে আসছেন। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে সরাসরি রেলপথ না থাকায় এ অঞ্চলের ট্রেনগুলোকে বর্তমানে বগুড়া থেকে সান্তাহার, নাটোর, পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় চলাচল করতে হচ্ছে। বাড়তি ওই ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে, তেমনি বেশি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। বগুড়া থেকে যেখানে সড়ক পথে ঢাকা পৌঁছতে লাগে ৫-৬ ঘণ্টা, সেখানে ট্রেনে ঘুর পথে যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা। তাও আবার পর্যাপ্ত আসন না থাকায় সে সুযোগও যাত্রীরা পান না। 
তাই বর্তমানে রেলপথ ও সড়ক পথ হয়ে বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম জেলার যাত্রীরা ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করেন অনেক কষ্টে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় দু’টি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর একটি হলো- বগুড়া স্টেশন থেকে ২ হাজার ৬০০ ফুট পশ্চিমে অবস্থিত বগুড়া শহরের বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার, অপরটি হলো বগুড়ার কাহালু থেকে শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। মূলত বগুড়ার সান্তাহারের দিক থেকে ছেড়ে আসা এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সান্তাহারগামী ট্রেনগুলো যাতে বগুড়া স্টেশনকে এড়িয়ে সরাসরি চলাচল করতে পারে সেজন্য কাহালু-রানীরহাট রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে। রানীরহাটে একটি জংশনও নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প মোতাবেক বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ওই রেলপথে আরো সাতটি স্টেশন স্থাপন করা হবে। এগুলো হলো : শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাটও আড়িয়াবাজার, শেরপুর উপজেলার শেরপুর ও চান্দাইকোনা, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, কৃষাণদিয়া ও সদানন্দপুর। প্রস্তাবিত ৮৪ কিলোমিটার রেলপথের জন্য মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ার সীমানায় ৫২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৫১০ একর এবং সিরাজগঞ্জ অংশের ৩২ কিলোমিটার অংশের জন্য প্রয়োজন আরো ৪৫০ একর জমি।

বগুড়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় মিটার গেজ রেলওয়ে লাইন পরিবর্তে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৭৪ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লাইন নির্মাণের লক্ষ্যে পিডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ। এরপর একই বছরের ১৭ এপ্রিল রেলপথ ও পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি ইতোমধ্যে ভারতীয় তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই ডিপিপির ওপর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প যাচাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুনর্গঠিত ডিপিপি ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন গ্রহণের লক্ষ্যে পুনর্গঠিত ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। ডিপিপি অনুমোদন হলে ঠিকাদার নিয়োগ করে মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে।

প্রকল্পটির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক জানিয়েছেন, চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটিকে দ্রুত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাঠানোর জন্য ডিপিপি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

 


আরো সংবাদ



premium cement