সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে দীর্ঘ ১০ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের প্রস্তুতি কমিটির প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রের ওপর আলোচনা করার জন্য ছাত্রদল নেতারা ক্যাম্পাসে আসার সুযোগ পান।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল গাড়িতে করে সাভারের রেড়িও কলোনি থেকে ছাত্রদলের জাবি শাখার সভাপতি মো: সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকতকে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে ক্যাম্পাসে আনে প্রশাসন। ক্যাম্পাসে এসে প্রক্টর অফিসের সভা কক্ষে নির্দিষ্ট আলোচনা শুরু হয়।
দীর্ঘ এক ঘন্টা আলোচনায় ছাত্রদল জাকসু নিয়ে শাখা ছাত্রদলের পক্ষে ১৯টি প্রস্তাবনা ও পাঁচটি দাবি পেশ করেন তারা। দাবিগুলো হলো- যেসব শিক্ষার্থী রাজনৈতিক, যুক্তিযুক্ত কারণে স্নাতক, স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এবং নিয়মিত শিক্ষার্থী হওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হয়েছেন তাদের যার যার প্রয়োজন অনুসারে পুনঃ ভর্তি এবং পুনঃ পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে। নিয়মিত ছাত্র হিসাবে তাদেরকে আসন্ন জাকসু নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ভোটার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং প্রার্থী হিসাবে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হলে এবং বিশ^বিদ্যালয়ে স্থায়ী সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। শুধু নির্বাচন পর্যন্তই নয় বরং নির্বাচনের পরবর্তী সময়েও যেন সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের শতভাগ সহাবস্থান নিশ্চিত থাকে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সহাবস্থান পূর্বে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা যাবে না। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃক দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং নির্বাচন প্রস্তুতি ও প্রচারণাকালীন সময়ে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও পুলিশী হয়রানী বন্ধ করতে হবে এবং হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা না হওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
এছাড়াও জাকসুর গঠনতন্ত্রে সংশোধন আনা ও কার্যকর জাকসু তৈরীতে ১৯টি প্রস্তাবনা রাখেন। প্রস্তাবনায় জাকসুতে দফতর সম্পাদক, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক, আর্ন্তজাতিক সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পদাক, স্বাস্থ্য সেবা ও পরিবেশ সম্পাদকের পদ তৈরীর কথা বলা হয়।
আলোচনা শেষে ছাত্রদলের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা জাকসু চাই, তবে প্রহসনের নির্বাচন নয়। আজকে আমরা মাত্র একঘন্টা ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পেরেছি। আজকে আমাদের যেভাবে পাহারা দিয়ে ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে এভাবে আসলে তো সহবস্থান হবে না। আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করেই সকল আলোচনা ও নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
এর আগে জাকসু প্রস্তুতি কমিটি সাংবাদিকদের সাথে আলোচনা করেন। এতে সাংবাদিক সমিতির সাভাপতি প্লাবন তারিক ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মাহমুদ অংশ নেন। আলোচনায় তারা সফল জাকসু নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকদের মতামত উপস্থাপন করেন।