২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সমাবেশে যে দাবিগুলো উত্থাপন করবে বিএনপি

আজকের সমাবেশে বিএনপি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাবে। - ছবি: নয়া দিগন্ত

রোববার ঢাকায় সমাবেশ করছে বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি
বাংলাদেশে ২২টি শর্তে পুলিশের অনুমতি পাওয়ার পর বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি আজ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করছে।

এর আগে পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় দুই দফায় জনসভার তারিখ পেছানো হয়।

সমাবেশে কী বার্তা তারা দিতে চান?

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলছেন, আজকের সমাবেশে তারা মূলত দুইটি বিষয় তুলে ধরতে চান। একটি হলো, আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের দাবি নামা তুলে ধরা, আর সংক্ষেপে নিজেদের ১২দফা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরা, যেখানে থাকবে যে ভবিষ্যতে বিএনপি কি করতে চায় বা ক্ষমতায় আসলে কিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, তার বর্ণনা।


‘আমরা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের দাবি নামাগুলো ঘোষণা করিনি।এ কারণে আমাদের সাত দফা দাবি ঘোষণা করা হবে।’

মওদুদ আহমেদ বিবিসি বাংলাকে জানান, যে সাত দফা দাবি আজ ঘোষণা করবে বিএনপি, তার মধ্যে রয়েছে,

•নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে

•সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে

•নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে

•ম্যাজিস্টেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে

•ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করতে হবে বা চালু করা যাবে না

মওদুদ আহমেদ বলছেন, ‘আমাদের এর অতিরিক্ত দাবি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সেই সঙ্গে হাজার হাজার যে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং যারা কারাগারে রয়েছে, সেই সব রাজবন্দীর মুক্তি চাই। সেই সঙ্গে নির্বাচনের সময় নতুন করে যেন আর মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের আর গ্রেপ্তার করা না হয়। কারণ বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি।’

তবে বিএনপির এসব দাবির সঙ্গে ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা কি একমত?

প্রথম পাঁচটি বিষয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা অন্যদলগুলোও একমত বলে তিনি জানান।

তবে বিএনপির শেষ দুইটি দাবি প্রসঙ্গে মওদুদ আহমেদ বলছেন, ‘তারা আমাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন, সেটা বলা যাবে না। তার কারণ, ২২ তারিখে যে ঘোষণাপত্র পড়ে শোনানো হয়েছে, সেখানে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে।’

তবে আজকের এই সমাবেশে ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা যোগ দেবেন না বলেই বলছেন মি. আহমদ।

তিনি বলছেন, ‘ড. কামাল হোসেন এখন দেশে নেই। তিনি থাকলে আমরা এটা চিন্তা করতাম, সবাইকে দাওয়াত দিতাম। কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা নিজেরাই এই জনসভা করতে যাচ্ছি।’

নিজেদের দাবি আদায়ে কি প্রক্রিয়ার কথা ভাবছে বিএনপি?

মওদুদ আহমদ বলছেন, ‘অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহের জন্য প্রাথমিকভাবে একটি কর্মসূচী ঘোষণা করবো। তারপরে ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশীদারদের সঙ্গে বসে, আলাপ আলোচনা করে ভবিষ্যৎ কর্মসূচী প্রণয়ন করবো। মূলত এই কর্মসূচী হবে জনমত সৃষ্টি করা এবং জনসমর্থন কতটা আছে, সেটা দেখানো।’

সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে বিএনপি তাদের দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছিল।

 

আরো পড়ুন: সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮


রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় আসতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। রোববার বেলা ২টা থেকে জনসভার কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টার আগে থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শতশত নেতাকর্মী।

কারাবন্দি দলের চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই জনসভা করছে বিএনপি। 


এদিকে ডিএমপির ২২ দফা নির্দেশনা মেনে বিএনপি এই সমাবেশ করছে।

জনসভায় যোগ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি ও দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খণ্ড খণ্ড ভাবে জড়ো হয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন তারা। তাদের অনেকের হাতে দেখা যাচ্ছে নানা রঙ-বেরঙের ও স্লোগান লেখা ব্যানার-ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড।

জনসভা শুরুর আগেই সভাস্থল নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত।


জনসভাকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। শাহবাগ, মৎস্যভবন মোড়সহ উদ্যানের আশপাশে সাঁজোয়া যান ও জলকামান নিয়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।

জনসভা থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

আরো পড়ুন: যে ২২ শর্তে জনসভা করার অনুমতি পেল বিএনপি
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আগামীকাল রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। আজ সকাল ১১ টার দিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপিতে গিয়ে পুলিশ কমিশনারের সাথে বৈঠক করে। এসময় তাদের ২২ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেয়ার কথা জানানো হয়।

প্রতিনিধি দলে থাকা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ জানান, মহানগর পুলিশ কমিশনার আধা ঘন্টা তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। আমরা সমাবেশের অনুমতি পেয়েছি। আগামীকাল দুপুর ২ টায় সমাবেশ শুরু হবে।


জানা গেছে, বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব শর্ত হিসেবে সমাবেশ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।

যে ২২ শর্তে জনসভার অনুমতি দেয়া হলো :

১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

২. আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জনস্বার্থ নিরাপত্তা বিরোধী কার্যকলাপ করা যাবে না।

৩. উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

৪. ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।

৫. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভ্যন্তরে জনসভার কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

 ৬. নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকল্পে পর্যাপ্ত নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে।

৭. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং জনসভায় আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর এর মাধ্যমে চেকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিহিকেল স্ক্যানার সার্চ মিরর এর মাধ্যমে জনসভাস্থলে আগত সকল যানবাহন তল্লাসির ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলে অগ্নি নিবার্পন ব্যবস্থা রাখতে হবে।

১১.অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।

১২. অনুমোদিত স্থানের বাইরে বা রাস্তায় প্রজেকশন স্থাপন করা যাবে না।

১৩. অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে লোক সমাগম হওয়া যাবে না।

১৪. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

১৫. অনুমোদিত জনসভা ব্যতীত মঞ্চকে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

১৬. জনসভা শুরুর ০২ (দুই) ঘন্টা পূর্বে লোকজন সভাস্থলে আসতে পারবে।

১৭. ১৭.০০ ঘটিকার মধ্যে জনসভার যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

১৮. অনুমোদিত সময়ের পূর্বে কিংবা পরে রাস্তায় কোন অবস্থাতেই সমবেত হওয়া যাবে না ও যান চলাচলে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

১৯. কোন ধরনের লাঠি-সোটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি রড ব্যবহার করা যাবে না।

২০. মিছিল সহকারে সভাস্থলে আসা যাবে না।

২১. উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।

২২. জনস্বার্থে কতৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement