২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে দেশে ঈদের শুভেচ্ছা

- ছবি : সংগৃহীত

ঈদ মুবারক একটি আরবি শব্দ। যার অর্থ বরকতময় খুশির দিন। সমগ্র বিশ্বব্যাপী মুসলিম-অমুসলিম, আরব-অনারব সবাই এ শব্দটি ব্যবহার করেন। মুসলমানদের দু’টি ধর্মীয় উৎসব ; ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয় পবিত্র রমজান মাসের রোজা পালন শেষে শাওয়াল মাসের প্রথম দিবসে। আর ঈদুল আজহা পালিত হয় জিলহজ (আরবি সনের দ্বাদশ মাস) মাসের ১০ তারিখে।

ঈদ মুসলিম উম্মাহর জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে এক বিশেষ নিয়ামত। এ সম্পর্কিত একটি বিখ্যাত হাদিস হলো- রাসূল সা: যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন তিনি জানতে পারলেন; মদিনাবাসীর জন্য দু’টি উৎসবের দিন রয়েছে। যেদিনে তারা খেলাধুলা ও আমোদ-ফুর্তি করত। রাসূল সা: মাদিনাবাসীকে জানালেন, মহান আল্লাহ তায়ালা এ দিনের পরিবর্তে তোমাদের দু’টি দিন দিয়েছেন। সে দিন দু’টি হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। (সুনানে আবু দাউদ : ১১৩৪)

মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরে শুভেচ্ছাবিনিময়ের অনেক বার্তা রয়েছে। রাসূল সা:-এর সাহাবিরা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন- ‘তাকাব্বাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ (মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের ও আপনাদের সৎ কর্মগুলো কবুল করুন) শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমে। বর্তমান বিশ্বে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে নানান দেশে নানান শব্দ বা বাক্যাংশ ব্যবহৃত হয়। আরব বিশ্ব আরব বিশ্বের মুসলিম ও খ্রিষ্টান সবাই ‘ঈদ মুবারক’ বাক্যাংশ ব্যবহার করে।

সমগ্র আরব-অনারব মুসলমানেরা পবিত্র ঈদের দিনে সর্বাগ্রে ‘ঈদের সালাত’ আদায় করেন। সালাত আদায় শেষে কোলাকুলি, সালাম বিনিময় ও শুভেচ্ছাবাণী উচ্চারণ করেন। কোনো কোনো আরব ‘কুল্লু আম ওয়া আনতুম বিখাইর’ ব্যবহার করে। অর্থাৎ, আপনি প্রত্যেক উত্তীর্ণ বছরের সাথে ভালো থাকবেন।

বসনিয়ান মুসলমানরা সাধারণত ‘বাজরাম শ্রিরাফ মুবারেক ওলসুন’ (আল্লাহ রাজি আছেন তার বান্দার প্রতি) বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বসনিয়ান মুসলমানদের আরেকটি সাধারণ ঈদ অভিবাদন ‘বাজরাম নরকুল্লা’।

সার্বিয়াতে মুসলমানরা সাধারণত ‘বাজরাম শ্রিরাম মুম্বরেক ওলসুন’ বলার মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

ফিলিপিন্সে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত ছুটির দিন ঈদের দিন। ‘ঈদ মুবারক’ অভিবাদনের বাক্যাংশ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করছে।

তুরস্কের অধিবাসীরা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিভিন্ন বাক্যাংশ ব্যবহার করে। যেমন- ০১.‘বায়ারমিনিজ কুতলু ওলসুন’ ( আপনার ছুটির দিনটি বা ঈদেও দিনটি সুখী হোক) ০২.‘ ইয়া বেয়ামলার’ (ভালো ছুটির দিনগুলো); ০৩. ‘বায়ারমিনিজ মিউবারেক ওলসুন’ (আপনার ছুটির দিন ধন্য হবে)।

বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ঈদের শুভেচ্ছা-বিনিময়ে‘ঈদ মুবারক’ বাক্যাংশই অধিক ব্যবহৃত হয়। ঈদেও সালাত আদায় শেষে এ অঞ্চলের লোকেরা কোলাকুলি করতে পছন্দ করেন। পাকিস্তানের পশতু ভাষা অধ্যুষিত অঞ্চলে (খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ ও পূর্ব আফগানিস্তান) পশতু ভাষায় অধিবাসীরা ঈদের শুভেচ্ছাবিনিময় করেন। যেমন- ‘আখতার দে মুবারক সা’ ‘স্রষ্টা আপনার উৎসবকে মঙ্গল করুন’।

(বেলুচিস্তান প্রদেশ এবং ইরানের সিস্তান) বালুচি ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। যেমন- ‘ঈদ তারার মুবারক বা’ ঈদ আনন্দে সুখী হও। ব্রহুই স্পিকার ঈদেও শুভেচ্ছায় বলেন। ঈদ মুবারক মানে একটি আশীর্বাদ ঈদ আছে। বাংলা ভাষাভাষীরা ‘ঈদ মুবারক’ ব্যবহারের পাশাপাশি ‘ঈদের শুভেচ্ছা’ বাক্যাংশ ব্যবহার করেন।

উত্তর নাইজেরিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকার মুসলমানদের মধ্যে ‘হাউসা’ ভাষা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। হাউসা ভাষায় তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তারা বলেন- ‘বারকা দ সাল্লাহ্ , যার অর্থ -ঈদের নামাজ আদায় করো। ঘানা ঘানার রাষ্ট্রীয় ভাষা ‘ঘানা দাগবানি। এ ভাষায় তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে বলেন- ‘ নি টি ্উ ইউন পল্লী’; এর অর্থ- শুভ নতুন ঈদ ঋতু।

হাউস অভিবাদন ‘বার্কা দ্য সাল্লাহ’ও বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া , মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও সিঙ্গাপুরের মুসলিম জনগণ তাদের ভাষা অনুযায়ী ঈদেও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ চারটি দেশেই একটি বাক্যাংশ ব্যবহৃত হয়- ‘সেলামত হারি রায়’,।

‘সেলামত ঈদুল ফিতরি’ ইন্দোনেশিয়ায়, ‘সালাম এদিল ফাতরি’ মালয়েশিয়ায় প্রচলিত। ‘মিনাল এদিল ওয়াল ফায়েজিন’ বাক্যাংশও এসব দেশের অধিবাসীরা ব্যবহার করেন। মুসলিম উম্মাহ্-এর সার্বজনীন উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ধনী- দরিদ্র, তরুণ-বৃদ্ধ, কৃষক-শ্রমিক-আমলা সবাই ঈদের জামায়াতে শরিক হয়ে মহান প্রভুর দরবারে নিজেদের গুনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করে। ঈদের সালাতে শরিক হওয়ার আগে সাদাকাতুল ফিতর ও জাকাত আদায়ের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের অভাব-অনটনে সহমর্মিতা প্রকাশ করে।

ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলি ও সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের মন থেকে ঘৃণা-বিদ্বেষ বিদূরিত হয়। ঘরে ঘরে সেমাই, ফিরনি ও মিষ্টান্ন দ্রব্যে আপ্যায়ন, বয়োজ্যেষ্ঠদের সালাম ও কনিষ্ঠদের স্নেহ প্রদর্শনের মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য মজবুত হয়। ঈদ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে একতার শিক্ষা দেয়, ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা ও ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাসূল সা:-এর আদর্শে উজ্জীবিত করে। ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি ওয়াজিব হলেও মনের পশু বিদূরিত করা এবং ত্যাগ-মহিমায় জীবন গড়াই মূল লক্ষ্য।


আরো সংবাদ



premium cement
জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু

সকল