২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাতীয় নির্বাচন ও রাজনীতি

জাতীয় নির্বাচন ও রাজনীতি - ছবি : সংগ্রহ

সংবিধানের নিয়মানুসারে জাতীয় নির্বাচন শিগগিরই আসছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এই নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিক ও সুধীমহলে ব্যাপক আলাপ আলোচনা ও পর্যালোচনা চলছে। সুধীজনদের কেউ কেউ এমনটাও বলতে চাইছেন যে, নির্বাচন হবে কি হবে না সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ। অনেকেই ততটা হতাশাগ্রস্ত না হলেও নির্বাচনের শুদ্ধতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচনকে ঘিরে সরকারবিরোধীরা জোট সম্প্রসারিত করছে। সরকারি জোটও সম্প্রসারিত হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচন যদি হয়-ই তবে সেটা কেমন নির্বাচন হবে সেটাই বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। নির্বাচন কি ১৯৭৩-এর মতো হবে, নাকি ২০১৪ সালের মতো হবে। প্রথমটি হয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বীহীন ও দ্বিতীয়টি হয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ও ভোটারবিহীন।

সে দুটো নির্বাচনও আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন অবস্থায়ই হয়েছিল। এবারো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছে। উপরন্তু এবার আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালে নিজেদের অবস্থানটা আরো মজবুত করে নিয়েছে। নির্বাচনকালে বর্তমান সংসদ বহাল থাকবে এবং সংসদ সদস্যরা নির্বাচনকালে পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন কিন্তু সংসদের বাইরে যেসব জোট বা দল মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তাদের সে সুযোগ থাকবে না। অবশ্য সরকারি দল বাদে বাদ-বাকি সব জোট ও দল নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে এ ব্যবস্থা পরিবর্তন করে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগের জোর দাবি জানিয়ে আসছে। এখনো পর্যন্ত সরকারি দল বিরোধীদের এ দাবি না মানার সংকল্পে অনড়।

নির্বাচনকালে সবার জন্য সমান সুযোগের প্রশ্নে খোদ নির্বাচন কমিশনেও ভিন্ন মত আছে। এ সমান সুযোগের প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশন সভায় কমিশনের এক সদস্য তুলতে চাইলে তাকে সে সুযোগ দেয়া হয়নি বলে তিনি নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে সভা পরিত্যাগ করেন। এর আগেও তিনি নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কমিশনের সভা পরিত্যাগ করেছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, এর ফলে নির্বাচন করা ‘কঠিন’ হবে না। কিন্তু সরকারি দলের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী বলছেন, নির্বাচন কমিশনের এ সদস্যের পদত্যাগ করাই সমীচীন। তিনি পদত্যাগ করেননি। মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের কারণে তিনি কি নরম হবেন নাকি স্বীয় স্বাধীন মতের প্রতি অনড় থাকবেন সেটাও দেখার বিষয়। তবে একটা কথা এখানে উল্লেখ করতেই হয়, এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি সরকারবিরোধীদের কোনো আস্থা নেই। তথাপি এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে তারা নির্বাচন করবে না, সে কথা তারা এখনো বলেনি। ধরে নিচ্ছি হয়তো তা তারা বলবেও না। যদিও তারা বলেছে, এ সরকারের অধীনে তারা নির্বাচন করবে না। এখনো পর্যন্ত বিরোধীদের অন্যতম মূল দাবি হচ্ছে নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া ও নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন।

বিরোধীরা যাই বলুক না কেন, এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হারতে চাইবে না। তাদের লক্ষ্য যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে জেতা। আগামী সংসদ ও সরকারের আমলে বেশ কিছু জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। যেমন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে, শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা এবং পদ্মা সেতু বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নিজ উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়গুলো নিজ ক্ষমতাধীনের বাইরে অন্য কোনো সরকার উদযাপন করুক আওয়ামী লীগ সেটা সহ্য করবে বলে মনে হয় না। আওয়ামী লীগ যদি দলীয় সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে এ লোভ সংবরণ করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা না করে তবে দলটি দেশবাসীর সাধুবাদ পাবে। তবে এসব বিষয় মাথায় রেখেই আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে কি না সেটাও ভাবার বিষয়। যদি তাই হয়ে থাকে আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা অসম্ভব হবে। যে কারণে আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিদেশে যেখানেই যাচ্ছেন সেখান থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য তার সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসার যে, ‘প্রয়োজন’ সেই মর্মে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ‘আগ্রহের’ কথা আওয়ামী লীগ ফলাও করে প্রচার করছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশী হস্তক্ষেপ আমাদের নেতারা সাগ্রহে কামনা করেন। বিদেশী কূটনীতিকদের দেশের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে তারা নিয়মিত ব্রিফ করে থাকেন। প্রয়োজনে সমর্থন আদায়ের জন্য বিদেশেও দৌড়ান। দেশের অভ্যন্তরে বিদেশী কূটনীতিকেরা প্রায় সব সময়ই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নানাবিধ মন্তব্য করে থাকেন। দেশের রাজনীতিকেরাও তাদের কাছে দৌড়ান। কলোনিয়াল যুগ কি এখনো শেষ হলো না? সংবিধানে উল্লেখ আছে দেশের মালিক জনগণ। সেই জনগণকে উপেক্ষা করে ক্ষমতা লাভের জন্য রাজনীতিকদের বিদেশীদের দুয়ারে ধরনা দেয়া কি তাদের দেশপ্রেমের চিহ্ন বহন করে? তবে এটা না করে তাদের উপায়ও নেই। এ সব দেশের কাছে তারা নানাভাবে ঋণী। আমাদের রাজনীতিকেরা এখনো পরিপক্বতা অর্জন করেননি। একটি দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে যে প্রজ্ঞা ও ত্যাগের মনোভাবের দরকার সে শিক্ষা তারা পাননি। ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থ রক্ষার্থে এরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থ ত্যাগেও প্রস্তুত। এরা ভোগের রাজনীতি করেন, দেশপ্রেম ও দেশের জনগণ তাদের কাছে গৌণ। এরা চার্বাক দর্শনে বিশ্বাসী- ‘ঋণং কৃত্য ঘৃতং পেবৎ’। যদিও এ উপমহাদেশেরই প্রাচীন পণ্ডিতেরা বলে গেছেন- ‘যদ্যপি বল্কল পর রহ উপবাসী/হওনা হওনা তবু পরের প্রত্যাশী’। আমাদের রাজনীতিকেরা দেশের জনগণকে রেখে ‘পরের প্রত্যাশী’। তাই দেশের রাজনীতির এ দুর্দশা।

দেশের রাজনীতিকেরা সবসময়ই দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে উদগ্রীব। ক্ষমতাসীন দলকে প্রায়ই বলতে শুনি বিরোধী দল আন্দোলন করতে ব্যর্থ। এরা কী চায় বিরোধী দল তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সর্বদা দেশের রাস্তাঘাট, যান চলাচল বন্ধ করে, বন্ধ রেখে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে রাখুক? এটা কোনো দায়িত্বশীল সরকারের উক্তি হতে পারে না। দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচন জ্বালাও পোড়াও জাতীয় আন্দোলন করে আদায় করতে হবে কেন? এ ব্যাপারে সরকারের কি কোনো গরজ নেই? জনগণ যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তেমন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে বিরোধী দলকে রাস্তায় নেমে পুলিশের ঠ্যাঙানি খেতে হবে সরকারি দলের তেমন আহ্বান কোনো সুস্থ বুদ্ধির পরিচয় বহন করে না। ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন ও ১৯৯০-এর গণআন্দোলনের উদাহরণ টেনে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে আজো তেমন আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে দেখানোর আবদার মূঢ়তা ছাড়া আর কিছুই নয়।

আওয়ামী লীগ বড়াই করে তারা ১৯৭০ সালে মার্শাল ল’র অধীনে লিগ্যাল ফ্রেম ওয়ার্কের (এলএফও) আওতায় নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিল। তারা এটা বলে না যে, সে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছিল। সে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এমনো অভিযোগ আছে যে, ক্ষেত্র বিশেষে ১০ জনের ভোট একজনেও দিয়েছে। তবে সত্য এই যে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের সপক্ষে গণজোয়ার প্রবল ছিল বলে সে কারচুপির প্রতিবাদ কেউ করেনি। সে নির্বাচন সবাই মেনে নিয়েছিল। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন। স্বাধীন দেশে সে যুক্তি লাগসই নয়। যে কারণে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগকেও বিদেশে ধরনা দিতে হচ্ছে এবং দেশের অভ্যন্তরে বিদেশী কূটনীতিকদের তোয়াজ করতে হচ্ছে।

সে যা হোক, নির্বাচন যেভাবেই হোক আমি মনে করি তাতে সবারই অংশগ্রহণ করা উচিত। ২০১৪ সালের মতো আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ করে দেয়া কারো উচিত হবে না। দেখা গেছে, অপনির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেও তাকে ক্ষমতা থেকে সরানো যায় না। কারণ তারা প্রতিবেশী একটি বৃহৎ রাষ্ট্রের আশীর্বাদপুষ্ট। এমতাবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাতীয় ঐক্যজোট বিদ্যমান বিরূপ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় আসতে না পারলেও আশা করা যায় বেশ কিছু আসন পাবে। এটা মন্দের ভালো হবে। কারণ, দেখা গেল ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে না এসে বেশ বেকায়দায় পড়েছে। সে নির্বাচন করলে যা এড়ানো যেত বলে মনে হয়। বিএনপি এবার অভিযোগ করছে যে দলটিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য ক্ষমতাসীন দল নানা ফন্দি-ফিকির আঁটছে।

মুখে আওয়ামী লীগ যাই বলুক না কেন এ অভিযোগ সত্যও হতে পারে। তবু ক্ষমতাসীন দল-সৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বিরোধীরা নির্বাচনে এসে ক্ষমতায় না যেতে পারলেও দেশ ও বিশ্ববাসী আওয়ামী লীগের চাতুরী বুঝতে পারবে। এরা চাপে পড়বে। জাতীয় ঐক্যজোটও দেশের রাজনীতিতে একটা ফ্যুটিং পাবে, যা ভবিষ্যতে তাদের জন্য একটা শুভ পরিণাম বয়ে আনতে পারে। বিগত এক দশকে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, ব্যাংক লুট, সর্বস্তরে দুর্নীতির বিস্তার ও বিদেশে অর্থ পাচারের খবর, যা পত্রপত্রিকায় বেরিয়েছে তা ক্ষমতাসীন দল উড়িয়ে দিতে পারেনি। এ সবকিছুই জনমনে দাগ কেটেছে। সর্বোপরি অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ যে পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলো এ সত্যও জনমনে বিবেচ্য। একটি অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে এসব কিছুই ক্ষমতাসীন দলের বিপরীতে পাশা উল্টে দিতে পারে।

আমরা সবাই আশা করেছিলাম দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পর যাই ঘটে থাকুক না কেন এতদিনে ৪৭ বছর পর দেশে শান্তি ফিরে আসবে। রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর হানাহানি ভুলে দেশকে ভালোবেসে মিলেমিশে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করবে। কিন্তু তা হলো না। উপরন্তু আওয়ামী লীগের কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে বলতে শুনি যে, এ দেশে বিএনপি যত দিন আছে তত দিন শান্তি আসবে না। আওয়ামী লীগ কি তবে বিরোধীদের অ্যানিহিলেশনের রাজনীতি করছে? বিএনপি একটি বড় দল। একে কী অ্যানিহিলেট করা যাবে? আওয়ামী লীগ যদি সত্যিই সে পথে হাঁটে তবে সত্যিই দেশে শান্তি সুদূর পরাহত। আওয়ামী লীগ যদি সত্যি দেশকে ভালোবেসে থাকে তবে তাকে এ মানসিকতা পরিহার করতে হবে। বিরোধীদের দমন-পীড়নের রাজনীতি পরিহার করে অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতায় তাই এ দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তায়।
লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা কাডার।

 


আরো সংবাদ



premium cement
থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা

সকল