২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় নিরাপত্তা পরিষদ

পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতি সমর্থন
জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত জুরগেন শুল্জ, জাতিসঙ্ঘে জার্মানির উপরাষ্ট্রদূত, ফ্রান্সের নিকোলাস ডি রিভেরি, ব্রিটেনের কারেন পিয়েরেস, পোল্যান্ডের জোয়ান্না রোনেক্কা ও বেলজিয়ামের মার্ক পেকসটেন ডি বয়েটসওয়ারভ (বাম থেকে ডান) হইন্টারনেট -

ট্রাম্প প্রশাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ১৪টি দেশ। অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতিগুলোকে আর আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে বিবেচনা না করার মার্কিন ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, নতুন আমেরিকান নীতি ইসরাইল-ফিলিস্তিন সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে ক্ষুণœ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর ঘোষণার মাত্র দুই দিন পর বুধবার জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত মাসিক বৈঠকে বিশ্বের সব অঞ্চলের প্রতিনিধিত্বকারী দেশগুলো নতুন আমেরিকান নীতির ব্যাপারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তারা স্পষ্টভাবে বলেছে, সব ইসরাইলি বসতি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবৈধ। কেবলমাত্র ইসরাইলের জাতিসঙ্ঘ রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন মার্কিন এই পদক্ষেপের সমর্থনে বক্তব্য দেন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য নন। ড্যানন বলেন, এটি ঐতিহাসিক একটি ভুলের পক্ষে অবস্থান। এর সমালোচনাকে ‘শান্তিতে বাধা’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, এই সমালোচনা ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ‘সরাসরি সমঝোতার প্রতিবন্ধক’।
ড্যানন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন এই সমস্যাটির সমাধানে জোর খাটানোর চেষ্টা করে, তখন বাধ্য করার বিষয়টি বিপরীত ফল বয়ে আনে। যখন ফিলিস্তিনিরা দেখবে যে তাদের যুদ্ধের পক্ষে লড়াই করা হচ্ছে, তখন কেন তারা সমঝোতা করতে আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হবে?’
বৈঠক শুরুর আগে আমেরিকার পাঁচ ইউরোপীয় মিত্র- ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও পোল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতিতে পুনর্বার বলেছে- ‘আন্তর্জাতিক আইনে সব বসতি কার্যক্রম অবৈধ।’ দখলদার শক্তি হিসেবে অবৈধ বসতি কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। তারা বলেছে, ইসরাইল দায়িত্বশীলতার সাথে আচরণ না করলে এই ধরনের কার্যকলাপ দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বাস্তবতাকে ধ্বংস করবে এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাগুলোকে হ্রাস করবে। ইউরোপীয় দেশগুলো পশ্চিমতীরের সম্ভাব্য সম্প্রসারণের আহ্বান সম্পর্কে উদ্বেগের কথাও পনর্ব্যক্ত করেন।
মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিপ্রক্রিয়ার জন্য জাতিসঙ্ঘের বিশেষ সমন্বয়কারী নিকোলা ম্লাদেনভ এই বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি জাতিসঙ্ঘের অবস্থান পুনরুল্লেখ করে বলেন, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের আলোকে এটি আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।
ইসরাইল একজন ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ কমান্ডারকে হত্যার পর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি অস্ত্রধারীদের মধ্যকার উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে গাজার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ হওয়ার পরেও সতর্ক করেছিলেন তিনি, জানিয়েছিলেন উদ্বেগ। যুক্তরাষ্ট্রের উপ-রাষ্ট্রদূত চেরিথ নরম্যান চ্যালেট জনবসতি সম্পর্কে পম্পেওর ঘোষণার পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি ১৯৭৮ সালের পররাষ্ট্র দফতরের আইনি মতামতকে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে বেসামরিক বসতিগুলো আন্তর্জাতিক আইনের সাথে মোটেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
চ্যালেট জোর দিয়ে বলেন, কেবল ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই এই জটিল রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। মার্কিন সরকার বসতির নির্দিষ্ট আইনি মর্যাদার বিষয়ে কোনো পৃথক মতামত প্রকাশ করছে না। আমরা পশ্চিমতীরের চূড়ান্ত মর্যাদার বিষয়েও আলোচনা করছি না। এটি ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য।
বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডায়ান ট্রায়ানসিয়াহ দজানি মার্কিন ঘোষণাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘অনিয়ন্ত্রিতভাবে অবৈধ বসতির সম্প্রসারণকে সায় দেয়া হয়েছে; যা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের ভিত্তিতে শান্তি প্রচেষ্টার পথে বাধা।’ ইসরাইলের ড্যানন ও ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুরসহ জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ জন সদস্যের বক্তৃতার পরে পরিষদের অধিবেশন বন্ধ করে দেয়া হয়। যখন এই অধিবেশনটি শেষ হয়েছিল, তখন পরিষদের দুই বছর মেয়াদি ১০ অস্থায়ী সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূতরা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হন। সংবাদ সম্মেলনে উপ-জার্মান রাষ্ট্রদূত জুরগেন শুল্টজ একটি সমালোচনামূলক যৌথ বিবৃতি পাঠ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বসতি স্থাপন কার্যক্রম অবৈধ। এটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান কার্যকর করার সম্ভাবনা নষ্ট করবে। ন্যায়বিচার, দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যাপক শান্তির সম্ভাবনা হ্রাস করবে। ২০১৬ সালে নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের মাধ্যমে এটিই নিশ্চিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে সব বসতি স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য ইসরাইলকে আহ্বান জানানো হয়েছে। পশ্চিমতীরের অঞ্চলগুলোতে বসতি সম্প্রসারণের ব্যাপারেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই

সকল