২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা সৌদি বাদশাহর সাথে পম্পেওর আলোচনা

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সাথে গতকাল জেদ্দার আল সালাম প্রাসাদে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সাক্ষাৎ : ইন্টারনেট -

চলমান তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনার মুখে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের প্রথম দিনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদি আরব পৌঁছে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সৌদি বাদশাহ ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা নিরসনে সমন্বয় করার চেষ্টা করছেন।
পরে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে পম্পেওর সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি একই ইস্যুতে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন। সোমবার সকালে জেদ্দা বিমানবন্দের অবতরণ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি। ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সৌদিতে ঝটিকা সফরে এসেছেন পম্পেও। জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পম্পেওকে স্বাগত জানান সৌদিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আবু জাইদ ও সৌদির ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহীম আল আশাফ। সেখান থেকে তিনি বাদশাহ ও যুবরাজের সাথে বৈঠক করতে যান। ইরান সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। রোববার এক বিবৃতিতে পম্পেও জানিয়েছেন, ইরানে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার বিষয়টি নিয়ে তিনি সৌদি আরব ও আমিরাতের সাথে আলোচনা করব।
পম্পেও বলেন, আমরা কৌশলগত বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা বলব। কিভাবে ইরানের বিরুদ্ধে একটি বৈশ্বিক জোট তৈরি করা যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করব আমরা। সৌদি ও আমিরাতের সফরের মধ্যে তিনি ভারতে যাত্রা বিরতি করবেন।
এদিকে রোববার যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের পূর্বে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মাইক পম্পেও আবারো ইরানকে শর্ত ছাড়া আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। পম্পেও বলেন, ইরান জানে আমাদের কোথায় পাওয়া যাবে। তাই তাদের উচিত হবে কোনো শর্ত ছাড়া আলোচনায় বসা। ইরানের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সৌদি আরব ও আরব আমিরাতকে মহান বন্ধু বলে উল্লেখ করেন পম্পেও। এ নিয়ে গত কয়েক মাসে অসংখ্যবার ইরানের সাথে আলোচনায় বসতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহ্বান জানান। তবে এমন সময় তিনি এ আলোচনায় বসার তাগিদ দিচ্ছেন, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
গত বছর পরমাণু সমঝোতা চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে তেহরানকে নিষেধাজ্ঞার জালে আটকে রাখার চেষ্টা করে ওয়াশিংটন। কিন্তু সে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা বারবার ব্যর্থ হয়। সে সময় থেকে পেন্টাগনের প্রতি কোনোভাবেই বিশ্বাস রাখতে চায় না তেহরান। গত বৃহস্পতিবার ইরান মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করলে উত্তেজনা আরো বাড়ে। প্রতিক্রিয়ায় ইরানে হামলার নির্দেশ দিয়েও পিছু হটেন ট্রাম্প। ইরানের পক্ষ থেকে ডোনের পাশাপাশি ৩৫ যাত্রীবাহী একটি মার্কিন বিমানও ভূপাতিত করার সক্ষমতার কথা জানালে সুর পাল্টে যায় ট্রাম্পের। শুক্রবার ইরানকে ধন্যবাদ দিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইরানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এমন আহ্বানকে রীতিমতো হাস্যকর হিসেবে উল্লেখ করে তেহরান।
মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা বিবেচনায় প্রস্তুত নেতানিয়াহু
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ফিলিস্তিনের সাথে তার দেশের দীর্ঘদিন ধরে চলা সঙ্ঘাত নিরসনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা ‘বিবেচনা’ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের সাথে বৈঠকের পর রোববার তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষ ও খোলাখুলিভাবে আমেরিকার প্রস্তাব বিবেচনা করব।’
এ দিকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুসালেমকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়ায় ওয়াশিংটনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব ইতোমধ্যে এ শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এ শান্তি পরিকল্পনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানার আগেই ফিলিস্তিন কিভাবে তা প্রত্যাখ্যান করে আমি এটা বুঝতে পারছি না। এমনটা ভাবলে আপনারা কোনোভাবেই সামনে অগ্রসর হতে পারবেন না।’ ইসরাইল অধিকৃত ভূখণ্ড জর্দান উপত্যকা সফরকালে তিনি শান্তি পরিকল্পনা কখনো পরিত্যাগ না করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে শান্তি অর্জনে কেউ যদি বলে ইসরাইলকে অবশ্যই জর্দান উপত্যকা ছেড়ে চলে যেতে হবে, তাহলে আমি বলব এতে শান্তি আসবে না বরং এতে যুদ্ধ বাধবে এবং ও সন্ত্রাসী হামলা হবে।’

 


আরো সংবাদ



premium cement