২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাইবার হামলায় নতুন প্রযুক্তিই এখন হ্যাকারদের হাতিয়ার

-

আপনি যদি হোমমেকার বা সিইও হন তবে আপনিই হতে পারেন ক্রমবর্ধমান স্মার্ট সাইবার অপরাধীদের লক্ষ্য। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টারনেটের বিভিন্ন ডিভাইস ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে তথ্য ও অর্থ চুরির কাজে।
কিভাবে সাইবার আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায় তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন এশিয়ার একটি বিখ্যাত কোম্পানির প্রধান। কুয়ালালামপুর-ভিত্তিক এশিয়া সাইবার সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বুধবার এ সংক্রান্ত বিশ্বব্যাপী এক রিপোর্ট প্রকাশ করে। এটি একটি বড় ঝুঁকি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান। তথাকথিত ইন্টারনেট উপাদান এমনকি কোম্পানির নিজস্ব কর্মচারী ও বিশ্বব্যাপী হ্যাকাররা কিভাবে সাইবার অপরাধ করে তা প্রকাশ ও তা থেকে রক্ষার ব্যাপারে পরামর্শ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এশিয়ায় সাইবার আক্রমণ প্রবণতা বেশি। এ কারণে কোটি কোটি ডলার হারাতে বসেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৯ সাল হবে সর্বাধিক চ্যালেঞ্জের বছর। এই চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাইবার ঝুঁকির আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে অবগত থাকা। সংঘটিত অপরাধ এখন আরো অত্যাধুনিক হামলার জন্য সাবেক গোয়েন্দা সদস্যদের ব্যবহার করে। এতে অপরাধীদের ফ্রিকোয়েন্সি অল্পতেই অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
ব্যাপক আক্রমণ
সাইবার অপরাধীদের ক্ষতি করার ক্ষমতার পরিধি ও মাত্রা বাড়ছে। পনমন ইনস্টিটিউট পরিচালিত কম্পিউটার জায়ান্ট আইবিএমের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ডাটা লঙ্ঘনের গড় খরচ ছিল ৩৮ দশমিক ছয় লাখ মার্কিন ডলার, যা ২০১৭ সাল থেকে ছয় দশমিক চার শতাংশ বেশি। কিছু ক্ষেত্রে সাইবার থেফট অনেক বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি ভেরাইজনের কাছে ইন্টারনেট জায়ন্ট ইয়াহুর বিক্রির সময় মূল মূল্যের থেকে ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার কমাতে হয়েছিল। ইয়াহু জানতে পারে যে, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তার কোটি কোটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছিল। ইয়াহুতে অপরাধীরা ব্যবহারকারীদের ই-মেইলগুলোতে তাদের নাম, নম্বর, জন্মের তারিখ, পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য গোপনীয় তথ্যলিঙ্কগুলো ক্লিক করতে উৎসাহিত করে। এই তথাকথিত ফিশিং আক্রমণগুলো সফলভাবে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অনলাইনে চলে।
হয় টাকা নয় ডাটা
সাইবার অপরাধের প্রকৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। ২০১৭ সালে ওয়ান্নাক্রাই এবং নটপেটিয়া ভাইরাসগুলো ব্যবহার করে উচ্চমাত্রার আক্রমণের ফলে হাজার হাজার ব্যবহারকারীর কম্পিউটারগুলো লক হয়ে যায়। অপরাধীরা হার্ডড্রাইভের জট ছাড়াতে অর্থ দাবি করে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং মার্কিন লজিস্টিক গ্রুপ ফেডএক্সের মতো প্রতিষ্ঠান এই অ্যাটাকে লাখ লাখ ডলারের উৎপাদন ক্ষমতা হারায় অথবা নষ্ট হয়। কিন্তু ক্ষতির সঠিক পরিমাপ ও প্রভাব নিরূপণ করা কঠিন। ব্রিটিশ কোম্পানি এওনের বাণিজ্যিক ঝুঁকি সম্পর্কিত এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যান্ড্রু মহনি আলজাজিরাকে বলেন, আমরা এমন একটা যায়গায় যাচ্ছি যেখানে অপরাধীরা কোথায় আঘাত হানতে ও ঝুঁকি গ্রহণ করতে পারে, তাদের এই ঝুঁকিটা কি তা পরিমাপ করাই কঠিন। প্রায়ই কোম্পানিগুলো ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ সম্ভাব্য গ্রাহকরা কোনো আক্রমণের পরে তাদের ডাটা সুরক্ষার বিষয়ে চিন্তা করে, অনেক বিশ্লেষক একে সুনামজনিত ক্ষতি বলে থাকেন।
এশিয়া সাইবার সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ফং চুং ফুক বলেছেন, অনেক সময় ক্লায়েন্টের প্রধান উদ্বেগ আর্থিক ক্ষতির উপর বেশি নয়। যদি তারা তাদের ক্ষতি সম্পর্কে নির্দিষ্ট ঘোষণা দেয় তবে তারা ইমেজ হারাতে পারে। এতে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আরো বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হয়। এতে সাইবার অপরাধীরা নির্বিচারে তাদের অপরাধ চালিয়ে যায়।
রিপোর্টে বলা হয়, কনফারেন্সিং সিস্টেম, প্রিন্টার, নিরাপত্তা ক্যামেরা এবং অন্যান্য বস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি সাইবার অপরাধীদের ডাটা লাভ আরো সহজ করে। এই ডিভাইসগুলো একটি ফার্মের আইটি অবকাঠামোর ব্যাকবোন গঠনকারী সার্ভার এবং কম্পিউটারগুলোর চেয়ে কম সুরক্ষিত থাকে। অন্য দুর্বলতা কোম্পানির কর্মীদের দ্বারা হতে পারে।
এশিয়া হটস্পট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সংস্থা ও সরকাগুলো সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কোটি কোটি ডলার অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু আইন বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে এশিয়া দুর্বলতম অবস্থানে রয়েছে। অ্যাপলের আইফোনের চিপস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং গত আগস্টে ওয়ান্না ক্রাই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। এশিয়ার অনেক হাসপাতালও তখন একই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।
গত বছর মাইক্রোসফটের জন্য কনসাল্টেন্সি ফার্ম ফ্রস্ট অ্যান্ড সুভিনার এশিয়ার ১৩০০ প্রতিষ্ঠানে জরিপ চালায়। জরিপ শেষে তাদের বিশ্লেষণ হচ্ছে সাইবার অপরাধের কারণে এক দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অর্থনীতির মোট আয়তনের প্রায় সাত ভাগ।
এক গবেষণা মতে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র, পরিবহন ও পানি সিস্টেমের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সাইবার আক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র্রের কনসাল্টিং সংস্থা এ টি কেয়ারনির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্যত্র সাইবার হামলার জন্যও এশিয়া হচ্ছে একটি গ্লোবাল হটস্পট। এ ক্ষেত্রে তারা মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের কথা উল্লেখ করেছে।
সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement
ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

সকল