সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির খুনের সাথে সম্পর্কিত অডিও রেকর্ডিংগুলোর বিষয়বস্তুকে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদেগোন। ওই রেকর্ডিংগুলো শুনে সৌদি আরবের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাও স্তম্ভিত হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি এই অডিও টেপগুলো তুরস্ক তাদের পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর কাছেও পাঠিয়েছে। সৌদি আরবের শাসনক্ষমতা পরিচালনাকারী ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক ছিলেন খাশোগি। গত মাসে ইস্তাম্বুলের সৌদি কন্স্যুলেটে তাকে খুন করা হয়। এ খুনের আদেশ সৌদি আরব সরকারের ‘সর্বোচ্চ পর্যায়’ থেকে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন এরদোগান।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ফ্রান্স থেকে ফেরার সময় বিমানে এরদোগান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্যারিসে ডিনারের সময় খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের সাথে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত রেকর্ডিংগুলো যারা চেয়েছে তাদের সবাইকেই দিয়েছি আমরা। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কিছুই লুকায়নি। সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, ব্রিটেনসহ যারা চেয়েছে সবাইকে সেগুলো শুনিয়েছি আমরা। এই রেকর্ডিংগুলো সত্যিই খুব ভয়াবহ। সৌদি গোয়েন্দা কর্মকর্তাও যখন এগুলো শুনেছেন, তিনি স্তম্ভিত হয়ে বলেছেন, ‘এই লোক অবশ্যই হেরোইন খেয়েছে, শুধু হেরোইনের নেশাগ্রস্ত কারো পক্ষেই এমনটি করা সম্ভব’। এই খুনের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত এবং এর নির্দেশ সৌদি কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই এসেছে এটি পরিষ্কার বলে জানিয়েছেন এরদোগান। কিন্তু এ ঘটনায় সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে বলে তিনি মনে করেন না এবং বাদশাহ সালমানকে তিনি ‘অপরিসীম শ্রদ্ধা’ করেন বলে জানিয়েছেন। এরদোগান আরো বলেছেন, ‘‘ক্রাউন প্রিন্স বলেছেন ‘আমি এই ঘটনার মীমাংসা করব, যা করা দরকার তা করব আমি’। আমরা ধৈর্য ধরে আপেক্ষা করছি। কে তাদের এই খুনের আদেশ দিয়েছে তা অবশ্যই প্রকাশ করা দরকার।” যে ১৮ জন সন্দেহভাজনকে সৌদি আরবে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে এই খুনের অপরাধীরাও আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
হত্যাকারী ফোনে বলে, বসকে জানাও কাজ শেষ
এ দিকে খাশোগিকে হত্যা শেষে ১৫ সদস্যের একজন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন দেন। এ সময় তিনি তাকে বলন, ‘আপনার বসকে বলেন, কাজ শেষ।’ খাশোগির হত্যাকাণ্ডের অডিও ক্লিপের সাথে জড়িত তিনজনের, যারা তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে এ রেকর্ড সংগ্রহ করেছেন, উদ্ধৃতি দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে, এখানে ‘আপনার বস’ বলতে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, এত দিন ধরে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। তবে ওই কর্মকর্তার কথোপকথন এ সন্দেহকে আরো জোরালোভাবে প্রমাণ করল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা