২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাংবাদিক ও বেসামরিক লোক হত্যার প্রতিবাদে কাশ্মিরে সর্বাত্মক ধর্মঘট

স্বাধীনতাকামী নেতারা গ্রেফতার-গৃহবন্দী
স্বাধীনতাকামীদের ডাকে গতকাল সর্বাত্মক ধর্মঘট চলাকালে শ্রীনগরে সতর্ক প্রহরারত এক ভারতীয় সেনা : এএফপি -

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরে সিনিয়র সাংবাদিক সাইয়েদ সুজাত বুখারি ও বেসামরিক ব্যক্তি হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়েছে। স্বাধীনতাকামী নেতাদের যৌথ আহ্বানে এই ধর্মঘট পালিত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন কারফিউর মতো নিষেধাজ্ঞা জারি এবং স্বাধীনতাকামী নেতাদের কাউকে গ্রেফতার আর কাউকে গৃহবন্দী করেছে।
সম্প্রতি বিশিষ্ট সিনিয়র সাংবাদিক সুজাত বুখারি ও বেসামরিক মানুষজনকে হত্যার প্রতিবাদে সাইয়েদ আলীশাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও মুহাম্মদ ইয়াসিন মালিকের সমন্বিত যৌথ প্রতিরোধ নেতৃত্বের প থেকে কাশ্মির উপত্যকায় গতকাল সর্বাত্মক ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সেখানকার দোকানপাট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শিাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বিভিন্ন রুটে বিপ্তিভাবে কিছু বেসরকারি ক্যাব ও তিন চাকার গাড়ি চলাচল করলে সড়কে মানুষজনের উপস্থিতি প্রায় ছিল না। সকাল থেকে প্রশাসনের প থেকে সতর্কতামূলক পদপে হিসেবে শ্রীনগরের ডাউনটাউন এলাকায় কারফিউয়ের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অন্য দিকে, হুররিয়াত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাইয়েদ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুককে গৃহবন্দী ও জে কে এল এফ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইয়াসিন মালিককে গ্রেফতার করা হয়। উত্তর কাশ্মিরের সোপোর, হান্দওয়াড়া, পাট্টান, সাম্বাল, হাজিন ও অন্যান্য এলাকায় সড়কে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সোপোর, বারামুল্লা, পাট্টান ও রাফিয়াবাদ এলাকায় সব শিাপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। একইভাবে দণি কাশ্মিরের সোপিয়ান, পুলওয়ামা, কুলগাম ও অনন্তনাগে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দী মুক্তি কমিটি’র সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভানু সরকার গতকাল রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘‘আমরা মানবাধিকার কর্মীরা বহুদিন ধরে বলে আসছি কাশ্মিরে বিশেষকরে ’৯০ সালের পর থেকে ভারতীয় সেনারা প্রায় ৯৪ হাজারেরও বেশি, আমাদের হিসাবে ৯৮ হাজার সাধারণ মানুষকে তারা হত্যা করেছে, নিখোঁজ করেছে, কমপে সাত হাজারের মতো গণকবর পাওয়া গেছে। বুরহান ওয়ানিকে হত্যা করার পরে সম্প্রতি কাশ্মিরে যে গণবিােভ, অল্পবয়সী শিশুদের ছররা গুলি দিয়ে চোখ নষ্ট করে দেয়া, তাদের জীবন ‘বরবাদ’ করে দেয়ার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে চলছে। ফলে এখানে প্রতিবাদ স্বাভাবিক বিষয়।’’
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমরা সবসময় বলি, কাশ্মির সমস্যা গুলি, বন্দুক, কামান, ছররা গুলি বা বিদেশ থেকে যত দামি দামি অস্ত্র কিনে আনুন তাতে সমাধান হবে না। কাশ্মিরের সমস্যা রাজনৈতিক সমস্যা। একমাত্র আলোচনার মধ্য দিয়েই ওই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’ ভানু সরকার বলেন, ‘কাশ্মির থেকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করা হোক, আপ্সফার মতো দমনমূলক আইন প্রত্যাহার করা হোক এবং সরকার আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসুক। কাশ্মিরের মানুষের কথা, তাদের কী দাবি, সরকারের তা শোনা উচিত।’

 


আরো সংবাদ



premium cement