১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ব্যাংকের কর হ্রাস

-

আগামী অর্থবছরের জন্য স্মরণকালের বৃহত্তম বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। নির্বাচনী বাজেট হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি অর্জনকারী এবারের বাজেটে ৩১ প্রকারের পণ্যের বাড়তি ট্যারিপ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পোশাক শিল্পের কর বাড়ানো হয়েছে। সর্বনাশা তামাক শিল্পকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হয়েছে। কিন্তু বিতর্কিত অনেক বিষয় ছাপিয়ে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ব্যাংকের করপোরেট কর কমানোর প্রসঙ্গটি। সমালোচকরা এটিকে আখ্যা দিয়েছেন লুটপাটের পুরস্কার হিসেবে। এর মাধ্যমে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি বলে সমালোচনা করছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। স্বয়ং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান ব্যাংকের করহার কমানোর বিষয়টিকে দেখছেন সৌভাগ্যক্রমে প্রাপ্ত সুযোগ হিসেবে। যদিও চতুর্মুখী তীব্র চাপের মধ্যে ব্যাংকঋণের সুদহার পুনরায় এক অঙ্গে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি। লিখেছেন জিয়াউল হক মিজান

প্রস্তাবটি বড়লোকদের পে গেছে
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্যাংকের মুনাফার ওপর করপোরেট কর কমানোর কোনো অর্থনৈতিক যুক্তি নেই। এটি বড়লোকদের পে গেছে। ব্যাংক মালিকেরা ধনী লোক, তাদের সুবিধা দেয়া হয়েছে। সার্বিকভাবে বাজেটটি গতানুগতিক হয়েছে। এই বাজেট থেকে বড় ধরনের কোনো তি হবে না, আবার বড় ধরনের উপকারও হবে না। বাজেট গতানুগতিক বলা হলো এ কারণে যে, বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে, আয় ও ব্যয় উভয় ল্যই বড়। প্রশ্ন হলো, এই বাজেট অর্জিত হবে কিনা। ব্যাংক খাতে করপোরেট হার কমানোর ফলে এই খাতে বড় অঙ্কের কর কমবে। আবার ভ্যাটেও রাজস্ব আদায়ে ল্য অর্জন অনিশ্চিত। কেননা কিছু পণ্য ও সেবায় যেমন ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে, আবার কিছু পণ্যে কমানো হয়েছে। একই অবস্থা শুল্ক খাতেও। কর নীতিতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তাতে আদায় বাড়বে না, বরং কমতে পারে। আর ৩০ শতাংশের মতো রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এতবড় রাজস্ব আদায়ের ল্য অর্জনে আগামী এক বছরের মধ্যে প্রশাসনিক দতা কতটা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সার্বিকভাবে দেখা যায়, খরচের ল্য অর্জিত হবে না, আবার রাজস্ব আদায়ের ল্য অর্জনও কঠিন। তাই সার্বিক ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। তবে মূল সমস্যা হলো, ঘাটতি অর্থায়নের টাকা কিভাবে আসবে। ঘাটতি অর্থায়ন নিয়ে বাজেটে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো হবে। কিভাবে কমানো হবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি। সুদহার ও বিক্রির পদ্ধতির সংস্কার কিভাবে হবে, তা বলা হয়নি। এই বাজেট থেকে সাধারণ মানুষের বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, বাজারমূল্য কেমন হবে। চালে ২৮ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। চালের দাম যাতে বেশি পড়ে না যায়, সেজন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে হয়তো উৎপাদকের কিছুটা উপকার হবে। কিন্তু যারা বাজার থেকে চাল কিনে খান, তাদের খুব বেশি সুবিধা হবে না।
লাভের টাকা মালিকদের পকেটে যাবে
প্রস্তাবি বাজেটে ব্যাংকের করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মুনসুর বলেন, করপোরেট কর আরো বৃহৎ আকারে কমানোর আশা ছিল। সব খাতের জন্য ২ শতাংশ হারে কমবে এমনটাই ধরা হয়েছিল। কিন্তু একমাত্র ব্যাংক খাতের জন্যই কমানো হয়েছে, এটা কোনোভাবেই জনবান্ধব নয়। এর সঙ্গে শর্ত জুড়ে দেয়ার প্রয়োজন ছিল। এর মাধ্যমে খেলাপি ঋণের জন্য সঞ্চিতি বাড়ানো যেত। যাতে ব্যাংকগুলো শক্তিশালী হতো। সুদহার কমানোরও উদ্যোগ নেয়া যেত। আপাতত মনে হচ্ছে, মুনাফার এই অর্থ লভ্যাংশ হিসেবে পরিচালকদের পকেটে চলে যাবে। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমবে, খাতেরও কোনো উন্নতি হবে না। ব্যাংক মালিকেরা যা চাইছেন, তা-ই পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদহার যেহেতু কমানো হয়নি, তাই ব্যাংকের সুদহার কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ব্যাংকের সুদ কমাতে হলে আগে সঞ্চয়পত্রের সুদে হাত দিতে হবে। ব্যাংক খাতের দুরবস্থা দূর করতে হবে। খারাপ ঋণের হার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ দেখানো হচ্ছে তা সামান্যই। আসল সমস্যাটা অনেক প্রকট। অনেক দীর্ঘ সময় লাগবে এটা সারাতে। আবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমালেই সুদহার কমবে, তা-ও নিশ্চিত নয়। ব্যাংকগুলোতে সুশাসনের যে ঘাটতি আছে, তা সরকারকে উদ্যোগ নিয়েই সমাধান করতে হবে। সরকার যদি আগের মতো খারাপদের প্রশ্রয় দেয়, তাহলে তা জনকল্যাণমূলক হবে না। সুদের হার কমাতে সাহায্য করবে না।
সরকারি ব্যাংকগুলোকে ধারাবাহিকভাবে মূলধন জোগান দেয়ার সিদ্ধান্তকে রক্তরণ ছাড়া কিছুই না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে, এর মাধ্যমে কোনো উপকার হয়নি। ব্যাংকগুলো দুর্বল ছিল, সে অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। কোনো সংস্কারবিহীন অর্থের অপচয় পৃথিবীর কোথাও হয় না। কোনো সংস্কার ছাড়াই আমরা ব্যাংকগুলোতে অনিয়মের ভর্তুকি দিয়ে আসছি।
তিন কারণে লোকাল ব্যাংকগুলো তারল্য সঙ্কটে ভুগছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকের ডিপোজিট গ্রোথ কমে গেছে। ২০১২ সালের ১৯.৪ শতাংশ ডিপোজিট গ্রোথ ২০১৭ সালে নেমেছে ৯.৫ শতাংশে। অধিক পরিমাণে নন-পারফরমিং লোন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার বিক্রি এই সঙ্কটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, বন্ড মার্কেটকে ডুবিয়ে দিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎসকে দুর্বল করা হয়েছে। এই বন্ড মার্কেট ছাড়া প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়বে না। এখন এফডিআই কমার পাশাপাশি কমে গেছে পোর্টফোলিও বিনিয়োগ। এজন্য বিদেশীরা শেয়ার বিক্রি করে সাইড লাইনে চলে যাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংসদে তোপের মুখে মুহিত
ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনা ও লুটপাট নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা। ব্যাংক লুটকারী ও অর্থপাচারকারীদের ধরতে না পারায় এবং পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে না পারায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি ােভ প্রকাশ করেন তারা। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা শুরু করেন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি অধ্যাপক আলী আশরাফ। এরপর আলোচনায় তাল মেলান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশিদ ও স্বতন্ত্র এমপি রুস্তম আলী ফরাজী। ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনার তীব্র সমালোচনা করে অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে না পারলে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। কিছু মানুষ ব্যাংকিং খাতে লুটপাট করবে, এটা হতে পারে না। ঋণ খেলাপি হবে, অর্থ পাচার করবে এই ঋণখেলাপি অর্থ পাচারকারীদের আপনি ধরেন। করের আওতা বাড়াতে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কর অফিস করেন। বিমান চলছে না, বিদেশীরা এসে বিমানে উঠলে মনে করে যে কোনো সময় ভেঙে পড়বে। সর্বত্র ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা চলছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ব্যাংকিং খাতে যে লুটপাট হয়েছে তা ভারতের সমনাথ মন্দিরের লুটপাটের সঙ্গে তুলনা করা যায়। তখন সমনাথ মন্দির আক্রমণ করে ২০ বিলিয়ন ডলার লুটপাট করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ব্যাংক লুটপাটের আগ পর্যন্ত এত বড় লুটপাটের ঘটনা আর ঘটেনি। সামনে নির্বাচন, নির্বাচনের আগে এই ব্যাংক মালিকরা লুটপাটকারী দেশে থাকবে না, তাদের খুঁজেও পাবেন না। তারা বিদেশে পালিয়ে যাবে, ইতোমধ্যে ভিসা লাগিয়ে ফেলেছে। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যাংক খেলাপি কারা? এটা কি আপনি জানেন না? কেনো তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন না। এরা ২৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এ সব ভুয়া বাজেট দিয়ে কাজ হবে না। এই বাজেটের মধ্যে কিছু নেই। ধনীকে খুশি, গরিবকে নিঃস্ব আর ব্যাংক ডাকাতদের উৎসাহিত করেছেন এই বাজেটে।
স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ব্যাংকের টাকা রাখলে পাচার হয়ে যায় মানুষ এই আতঙ্কে আছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ খেলাপিরা টাকা দেশেও রাখে না, বিদেশে পাচার করে। এরা ব্যাংকের কিছু আর রাখবে না। যারা ব্যাংকে লুটপাট করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। লুটপাটকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার জন্য কী করা যেতে পারে সেটা অর্থমন্ত্রীকে ভাবতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে এই টাকা আদায়ে কী করা যায় করেন তাহলে জনগণ আস্থা ফিরে পাবে। প্রশাসনে চলছে অনিয়ম বেতন বাড়ানো হলো। তার পরেও কর্মকর্তারা ঘুষ খায়। তারা বেতন নিলে ঘুষ বন্ধ করতে হবে। আর ঘুষ নিলে বেতন বন্ধ করতে হবে। এক সাথে দুটো চলবে না। এরপর একে একে জাতীয় পার্টির নরুল ইসলাম ওমর, পীর ফজলুর রহমানসহ অন্য এমপিরা তাদের বক্তব্যে ব্যাংকিং খাতের অবস্থাপনায় ােভ প্রকাশ করে লুটপাটকারীদের ধরে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়নি
এদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট ট্যাক্স কমানোর যে প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন তাতে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি মন্তব্য করে এ প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের সর্ববৃহৎ সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। গত বুধবার মতিঝিলের চেম্বার ভবনে আয়োজিত বাজেটোত্তর পর্যালোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে এ দাবি উত্থাপন করেন চেম্বারের সভাপতি নেহাদ কবির। শুধু কিছু ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অসংখ্য কোম্পানি রয়েছে গেছে যাদের করহার কমানো হয়নি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির েেত্রও করহার কমানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই করহার কমানোর েেত্র কিছুটা লেবেল প্লেইং ফিল্ড মেনে করা উচিত।
সুবিধা পেয়েছে সৌভাগ্যক্রমে
এমসিসিআই সভাপতির অভিযোগের জবাবে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কর্পোরেট ট্যাক্স নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এখানে বলা হচ্ছে আমরা ব্যাংকারদের সুবিধা দিয়েছি। প্রকৃত অর্থে তারা সৌভাগ্যক্রমে সুবিধা পেয়েছে। সবার েেত্র কমানো হলে রেভিনিউ অনেক কম হতো। তাই কমানো সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, আমরা তাদের কর্পোরেট করহার কমিয়েছি; যাতে তারা সুদের হার কমাতে পারে। ইতোমধ্যে তারা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের ওপরে একটা আঘাত হবে কারণ তাদের রেট একটু বেশি। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এখান থেকে আসে মাত্র ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই কারণে ব্যাংকের ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না। আমরা এটাকে অটোমেশনের আওতায় আনব। সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি কমানো ঠিক হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটা যৌক্তিক পর্যায়ে আনা হবে। তৈরী পোশাক শিল্পের প্রসঙ্গ টেনে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, পোশাক শিল্প অনেক সুবিধা পায়। তবে তাদের মতো অন্যদের সুবিধা দিলে তারাও ভালো করবে। অন্যরা কর্পোরেট ট্যাক্স বেশি দেয়। আর পোশাক শিল্প কম দেয়। এ জন্য একটু বাড়িয়েছি।
সুদহার কমছে?
এদিকে গত সপ্তাহে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস’র (বিএবি) এক জরুরি সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ জুলাই থেকে তিন মাস মেয়াদি আমানতের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৬ শতাংশ আর ঋণের সুদহার হবে ৯ শতাংশ। তবে কোন খাতে ঋণের এ সুদ হার কার্যকর করা হবে বৈঠকে তা উল্লেখ করা হয়নি। ফলে ঋণের সুদহার কমানোর এ সিদ্ধান্ত শুভঙ্কারের ফাঁকি কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন ঋণ গ্রহীতারা। বৈঠক শেষে বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের ধারা চাঙা করতে জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে তিন মাস মেয়াদি আমানতের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৬ শতাংশ আর ঋণের সুদহার হবে ৯ শতাংশ। এর চেয়ে কোনো ব্যাংক সুদ বেশি নিতে পারবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএবি ও বিভিন্ন সংস্থা মনিটরিং করবে। যেসব ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকরা ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সরকারের কাছ থেকে তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া আদায় করে নিয়েছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ব্যাংকে একই পরিবারের চারজন পরিচালক রাখা, আমানতকারীদের স্বার্থে বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার (সিআরআর) ১ শতাংশ কমানো, আপদকালীন সঙ্কট মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প সময়ে ধার নেয়ার জন্য রেপোর সুদহার কমানো, সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা ইত্যাদি। এতসব সুবিধা নেয়ার পরেও ঋণের সুদহার কমাচ্ছিলেন না বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তারা। বরং ক্ষেত্রবিশেষ ঋণের সুদহার বেড়ে গেছে। এসব কারণে বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের ওপর নাখোশ হন সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে। বাধ্য হয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।


আরো সংবাদ



premium cement
আরো ৩ জাহাজে হামলা হাউছিদের জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উত্তাল ইউক্রেন ‘শয়তানের নিঃশ্বাস‘ নামের যে ড্রাগ প্রতারণায় ব্যবহার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য নিহত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির সমাবেশ শুরু টঙ্গীতে ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে বিএনপি নেতার ছেলের মৃত্যু মালদ্বীপ থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করেছে ভারত জামিন পেলেন কেজরিওয়াল, তবে ভোটগণনার দিন থাকতে হবে জেলেই পরকীয়া প্রেমিক যুগলের গলায় জুতার মালা : চেয়ারম্যান বরখাস্ত সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা রংপুরে রেয়াত পদ্ধতি চালুসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন

সকল