০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মরে ভেসে উঠল মাছসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণী

সার কারখানার বিষাক্ত অ্যামোনিয়া ছাড়া হচ্ছে শীতলক্ষ্যায়

-

পলাশ উপজেলায় অবস্থিত ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে শীতলক্ষ্যা নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজপ্রাণী মরে ভেসে উঠেছে। মঙ্গলবার মধ্য রাত থেকে এসব মাছ ও জলজপ্রাণী মরে নদীর প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে ভেসে ওঠে। বুধবার ভোর থেকে স্থানীয়রা এসব মাছ সংগ্রহ করতে শুরু করেন। স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন পরপর সার কারখানার বিষাক্ত গ্যাস নদীতে ছাড়া হয়। এসব বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে মাছসহ জলজপ্রাণী মরে ভেসে উঠছে। শুকুমল ও মরণ দাস নামে দুই জেলে জানান, রাতে মাছ শিকার করতে এসে দেখি নদীতে অনেক মাছ মরে ভেসে আছে। কোথাও কোথাও কয়েকটি জলজপ্রাণীও ভেসে থাকতে দেখি। পলাশ বাজার ঘাটের মাঝি কালাম মিয়া জানান, সকালে নৌকা নিয়ে বের হয়ে দেখি সার কারখানার পাশজুড়ে অনেকে নদী থেকে মাছ সংগ্রহ করছেন। পরে আমিও অনেক মাছ সংগ্রহ করি।
জানা যায়, এক হাজার ৪২২ টন ক্ষমতাসম্পন্ন ঘোড়াশাল ও ৩০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া গ্যাস কারখানা দু’টির পাশে অবস্থিত একটি ল্যাগুনায় (পুকুর) ফেলা হয়। পরে গ্যাসের ক্ষতিকর মাত্রা কমিয়ে ল্যাগুনার পানি শীতলক্ষ্যা নদীতে ছাড়া হয়। অথচ গত কয়েক মাস ধরে অ্যামোনিয়া গ্যাস সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। যার কারণে নদীর মাছ ও জলজপ্রাণী মারা যাচ্ছে।
নদীতে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার বিষয়ে ঘোড়াশাল সার কারখানার ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম জানান, রাতে নদীতে গ্যাসের প্রভাবে মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনে সকালে কারখানার পাইপ ও অ্যামোনিয়ার মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। ঘোড়াশাল কারখানার কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। তবে সম্ভবত এটি পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার কোন ত্রুটির কারণে হতে পারে। পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার ব্যবস্থাপক মো: মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, অ্যামোনিয়া গ্যাসে নদীর মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
বাঁচাও শীতলক্ষ্যা নদী আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহাবুব সৈয়দ জানান, নদীর পাশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য প্রতিনিয়ত নদীতে ছাড়া হচ্ছে, যার কারণে নদীর পানি, মাছ ও জলজপ্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এক সময় এই নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু নদীতে বিষাক্ত গ্যাস ও বর্জ্য ফেলার কারণে এখন তেমন মাছ পাওয়া যায় না। জেলেরাও তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে অন্য কাজের দিকে ঝুঁকছেন।


আরো সংবাদ



premium cement