২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এক প্রবীণের হাউমাউ কান্না : ‘বাবা-মার সাথে যা করেছি তার বদলা পাচ্ছি এখন’

এক প্রবীণ - সংগৃহীত

‘জীবনের শেষ বয়সে আজ আমি সন্তানদের থেকে বিতাড়িত। নিঃস্ব স্বজনহীন একাকী জীবনে বৃদ্ধাশ্রমই আমার ঠিকানা। এসবের জন্য আমিই দায়ী। কারণ জীবনে আমি আমার বাবা-মার সাথে যা আচরণ করেছি এখন শেষ বয়সে আমার সন্তানদের কাছে থেকে তার বদলা পাচ্ছি। নয়তো এমন হওয়ার কথা নয়। শেষ জীবনে আমার সন্তানদের কাছ থেকে অবহেলা, অবজ্ঞা সর্বশেষ ঘরছাড়া হয়ে আজ আমি তা উপলব্ধি করতে পেরেছি’। জীবনের বাস্তব উপলব্দি থেকে এমনটাই বলছিলেন বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ৭০ বছরের এক প্রবীণ। 

জীবনের ফেলে আসা স্মৃতি মনে করে বুক চেপে ধরে হাউমাউ করে তিনি কাঁদছিলেন। বললেন, ‘কথাগুলো কারো কাছে কোনোদিন বলিনি। কিন্তু এখন আর পারছি না। অন্তত তোমাদের শিক্ষার জন্য আজ বলব। শোন, আমার এমন পরিণতির জন্য আমিই দায়ী। সবই আমার দোষ। জীবনে আমি যদি আমার বাবা-মায়ের সাথে ভালো আচরণ করতাম তবে আজ হয়তো আমাকে স্বজনবিহীন হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে আসতে হতো না। সন্তানদের কাছে অপমাণিত হতে হতো না। সবই আমার কপাল। সবই আমার কর্মের ফল। যা আজ আমার সন্তানদের কাছ থেকে আমি ফেরত পাচ্ছি’। এরপর একটু শান্ত হয়ে বললেন, ‘এখন যদি বাবা-মা বেঁচে থাকতেন তবে তাদের পায়ে পড়ে ক্ষমা চেয়ে নিতাম। তাতে অন্তত আমার অন্তরের জ¦ালা কিছুটা হলেও কমত। কিন্ত তা তো আর সম্ভব না। আমি বুঝতে পারছি এভাবেই মানসিক যন্ত্রণার পুড়ে আমাকে শেষ পর্যন্ত বিদায় নিতে হবে’। 

তার জীবন সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলতে শুরু করলেন অতীতের কথা। জানালেন ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তিনি। কৃষক পরিবার হওয়ায় অর্থকষ্ট লেগেই থাকত সংসারে। ভাই বোনদের মধ্যে অত্যন্ত মেধাবী ও লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা থাকায় স্থানীয় পাঠশালায় ভর্তি করে দেন তার পিতা। প্রতিটি পরীক্ষায় ফলাফলও ভালো করেন। পড়াশোনা শেষ করে সরকারি উচ্চ পদে চাকরিতে যোগ দেন, বিয়ে করেন। এরপর থেকে কারণে-অকারণে বাবা-মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। নিজের টাকা পয়সা থাকার পরও তাদের অর্থকষ্টে রেখেছেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে বাবা-মা গ্রামে চলে যান। এরপর অভিমানে তারা তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত পিতা-মাতার সাথে তার যোগাযোগ বন্ধ ছিল। 

তিনি বলেন, ‘আজ আমি তাদের জায়গায়। এ বয়সে তাদের চেয়েও করুণ অবস্থায় আছি। আমার তিন সন্তানের সবাই ভালো চাকরি করছে। রাজধানীতে বাড়ির মালিক আমি। অথচ আমার টাকায় করা বাড়ি থেকে আজ আমি বিতাড়িত। সন্তানদের কেউই আমার খোঁজ নেয় না। যে দিন বের করে দেয় সেদিন অনেক কেঁদেছি। তাদের বললাম, আমি না হয় বারান্দায় থাকব তবুও আমাকে বের করে দিওনা। কিন্তু তারা শুনল না। আমার কারণে নাকি তাদের সমস্যা হয়, ঘর নোংরা হয়, কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এরপর চোখ মুছতে মুছতে বললেন, এখন বুঝিÑ এসবই আমার বাবা মায়ের অভিশাপ। আমি যদি আমার পিতা-মাতার প্রতি অবিচার না করতাম তাহলে আমার সন্তানরা আমার সাথে এমন করত না। আমি সব সময় দোয়া করি আমার সন্তানরা যেন কখনোই বৃদ্ধ না হয়, তাহলে তারা এত কষ্ট সহ্য করতে পারবে না’।


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

সকল