২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাব্বানীকে ডাকসুর জিএস পদ থেকে অপসারণের দাবি

ডাকসুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ঢাবি : ছাত্রলীগ
-

চাঁদাবাজিসহ নানান অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারেণ পদ হারানো ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে ডাকসুর পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে এ দাবি তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল। এ সময় তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে নিজ সংগঠন থেকে অব্যাহতি পাওয়া কোনো ব্যক্তি ডাকসুর কোনো পদে আর থাকতে পারেন না। তাই বর্তমান বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে ডাকসুর অতীত ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখার জন্য অবিলম্বে এই ডাকসুতে তাকে অবৈধ ঘোষণা করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
বর্তমান ডাকসু নির্বাচনকে ‘জালিয়াতির নির্বাচন’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাকসুর ভূমিকাকে অতীতের মতো আবার সামনে নিয়ে আসার জন্য পুনরায় ডাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিদ্যালয়ের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানায় প্রগতিশীল ছাত্রজোট।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, বিপবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দিকে, রাব্বানীর ডাকসুতে থাকা না থাকার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সদ্য দায়িত্বে আসা সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। গত সোমবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি একথা জানান। জয় বলেন, ছাত্রলীগের কোনো নেতার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নানা বিতর্ক ও তীব্র সমালোচনার মুখে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণ করা হয়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লেখক ভট্টাচার্য দায়িত্ব পেয়েছেন। সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচন করে ডাকসুর জিএস হয়েছেন। তিনি ওই পদে আর থাকতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয় বলেন, ডাকসু এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সম্পূর্ণ আলাদা দু’টি বিষয়। তিনি ডাকসুর জিএস থাকবেন কি না সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করবে।
আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আমাদের কার্যক্রম শুরু হলো। এখন থেকে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব সবার সহযোগিতা নিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন করার।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিতে কারো বিরুদ্ধে অনিয়মের কোনো অভিযোগ থাকলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ কখনো আদর্শচ্যুত হতে পারে না। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশের কোনো ঘটনা যদি ঘটে থাকে, আপনাদের সহযোগিতা এবং প্রয়োজন হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ছাড়াও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
শোভনের পদত্যাগ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য থেকে পদত্যাগ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও সিনেট সভাপতি বরাবর আবেদন করেছেন ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। গত সোমবার বিকেল ৪টায় শোভনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক আহসান হাবিব ও ডাকসু সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ। শোভনের স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আবেদনপত্রে শোভন উল্লেখ করেন, আমি মো: রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে আমার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, এ সম্পর্কিত একটি আবেদন পেয়েছি। সেটি সংশ্লিষ্ট সভায় উপস্থাপন করে বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement