২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গুরুতর অসুস্থ এরশাদ সিঙ্গাপুরে

-

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিয়মিত মেডিক্যাল চেকআপের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুর গেছেন। রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া ও লিভারের সমস্যার উন্নত চিকিৎসা নিতে গতকাল রোববার দুপুরে তিনি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। এ যাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন এরশাদের ছোট ভাই হুসেইন মোর্শেদ তার স্ত্রী রুখসানা খান মোর্শেদ এবং দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য খালেদ আখতার।
এরশাদের ডিপিএস খন্দকার দেলোয়ার জালালী বলেন, নিয়মিত মেডিক্যাল চেকআপের জন্য তিনি দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুরুতর অসুস্থ এরশাদকে হুইল চেয়ারে করে বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসভবনের নিচতলায় নামিয়ে আনা হয়। অন্য বারের মতো তিনি এদিন আর উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলে যেতে পারেননি। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বিমানবন্দর পর্যন্ত তার সাথে ছিলেন। পরে বিমানবন্দরে এরশাদকে বিদায় জানান, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, সৈয়দ আব্দুল মান্নান, মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ফখর উজ জামান জাহাঙ্গীর, উপদেষ্টা সোমনাথ দে, নাজমা আখতার, এম এম নেওয়াজ উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, নুরুল ইসলাম নুরু, রওশন আরা মান্নান, মেহজাবিন মোর্শেদ, যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, আমির হোসেন ভূঁইয়া, বেলাল হোসেন, নিগার সুলতান রানী, এম এ রাজ্জাক খান, কাজী আবুল খায়ের, মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ, মিজানুর রহমান, মেজর রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, আমেনা বেগম প্রমুখ নেতারা।
এ দিকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের জানিয়েছেন, গুরুতর অসুস্থ এরশাদ আগামী ৩০ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া একাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে থাকতে পারছেন না। সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এরশাদ কাউকে ‘চিনতে পারছেন না’। এ খবরের প্রতিবাদ জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, এ খবর ডাহা মিথ্যা। তিনি খুব অসুস্থ। হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করতে হচ্ছে। বিদেশ যাওয়ার আগে এরশাদ জানিয়ে গেছেন, তার অনুপস্থিতিতে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
রক্তে হিমোগ্লোবিনের সমস্যা নিয়ে ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্বাচনের আগে গত ১০ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন এরশাদ। ১৬ দিন চিকিৎসা শেষে তিনি নির্বাচনের আগে ২৬ ডিসেম্বর ফিরে আসেন।
ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হয়েও শারীরিক অসুস্থতার কারণে সরে দাঁড়ান তিনি। পরে নির্বাচন করেন রংপুর-৩ আসন থেকে। ভোটে ২২টি আসনে জয়লাভ করা জাতীয় পার্টি সংসদে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকবে জানিয়েছেন এরশাদ। পরে তিনি ঘোষণা দেন, একাদশ জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলের নেতা হবেন তিনি নিজেই। জি এম কাদের সংসদে প্রধান বিরোধী দলের উপনেতা; দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা হবেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ। জয়ী হওয়ার পর শপথও নেন। কিন্তু এরপর থেকেই তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। একই সাথে প্রজ্ঞাপনে জি এম কাদেরকে সংসদীয় বিরোধী দলের উপনেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement