২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সব রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে পারবে

পুত্রজায়ায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সিদ্ধান্ত
-

‘জি টু জি প্লাস’ পদ্ধতিতে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি এবার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে বলে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত গতকাল মঙ্গলবারের গুরুত্বপূর্ণ সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য যুগ্ম সচিব ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোঃ আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর গতকাল বিকেলে কুয়ালালামপুর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া আরো সহজ ও বেগবান করার লক্ষে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা গতকাল সকালে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের প্রশাসনিক কার্যালয় পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বাংলাদেশের পক্ষে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম। এরপরই বেলা আড়াইটায় মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী কুলাসেগারানের সাথে সভায় মিলিত হন। ওই সভায় শ্রমবাজার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে ‘জি টু জি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশি বৈধ সকল রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী প্রেরণ, কলিং ভিসায় কর্মী নিয়োগ এবং এ প্রক্রিয়ায় অপেক্ষমান মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের যাওয়ার পথ উন্মুক্ত রাখা।
এছাড়াও মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অনিয়মিত কর্মীদেরকে নিয়মিত করার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়েছে। বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে।
জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ সেলিম রেজা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কর্মসংস্থান) আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব) মোঃ আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শাহীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব সানজিদা শারমিন। সভায় মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (শ্রম) মোঃ সায়েদুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব) উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব সরকারের সময়ে ঢাকার শুধু ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি এসপিপিএ সিস্টেমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য মনোনীত হয়েছিলো। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৯ শতাধিক লাইসেন্সধারী এজেন্সির নাম দেয়ার পরও দেশটির সরকার ক্লিন ইমেজের মাত্র ১০টি এজেন্সিকে বেছে নেয়। এরপর থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এসপিপিএ সিস্টেমে আড়াই লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। মালয়েশিয়ায় ড. মাহাথির মোহাম্মদের সরকার আসার পর এসপিপিএ সিস্টেম স্থগিত করা হয়; যা গতকাল পর্যন্ত বহাল ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গতকাল দু দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সব এজেন্সিকে শ্রমিক পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে জনশক্তি রফতানীকারকদের সংগঠন বায়রার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. আবুল বাশার নয়া দিগন্তকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি, ব্যবসা যাতে সকলে করতে পারে সে উদ্যোগ নেন। অবশেষে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক থেকে সবাই ব্যবসা করতে পারবে- এমন সিদ্ধান্ত আসার পর এই সেক্টরে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আশা করছি এবার আমরা সবাই সুন্দরভাবে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ব্যবসা করতে পারবো।


আরো সংবাদ



premium cement