২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাংসপেশির আঘাত

-

মাংসপেশির আঘাত হলো মাংসপেশি ছিঁড়ে যাওয়া, টান খাওয়া বা আঘাতের জন্য রক্ত জমাট বাঁধা। ফুটবলারদের সাধারণত হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি হয়। এই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি হলো হ্যামস্ট্রিং মাংসপেশির আঘাত। মাংসপেশির এই আঘাত খুবই বিরক্তিকর। একজন খেলোয়াড়কে অনেক দিন খেলা থেকে দূরে রাখে। ডা: এ এইচ এম রেজাউল হক
স্পোর্টস ইনজুরির ১০-৩০ শতাংশ হলো মাংসপেশিতে আঘাত। আর ফুটবলের ইনজুরির ৩০ শতাংশ হলো মাংসপেশিতে আঘাত। মাংসপেশিতে আঘাত হলো সরাসরি আঘাতের জন্য অথবা অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য ছিঁড়ে যাওয়া।
রক্ত জমাট হওয়াÑ
ষ মাংসপেশির ভেতরে
ষ মাংসপেশির মধ্যবর্তী স্থানে
যখন মাংসপেশিকে এমন কাজ করতে হয়, যা মাংসপেশির স্বাভাবিক ক্ষমতার চেয়ে বেশি তখনই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। সাধারণত যেসব মাংসপেশি ছিঁড়ে যায়, যারা দুটি জয়েন্টকে যেমনÑ হ্যামস্ট্রিং, বাইসেপস।
মাংসপেশি ছিঁড়া গুরুত্ব অনুসারে তিন প্রকার
প্রথমÑ ৫ শতাংশ মাংসতন্তু ছিঁড়ে যায়। শক্তি ও অস্থিসন্ধি নাড়াতে ব্যথা হবে এবং শক্তিও কম থাকবে।
দ্বিতীয়Ñ ৫ শতাংশের অধিক মাংসতন্তু ছিঁড়ে যায়। অস্থিসন্ধি নাড়াতে ব্যথা হবে এবং শক্তিও কম থাকবে।
তৃতীয়Ñ সম্পূর্ণ মাংসপেশি ছিঁড়ে যায়।
লক্ষণÑ
মাংসপেশিতে ব্যথা হবে।
মাংসপেশিতে নাড়াচাড়ায় ব্যথা বাড়বে এবং বিশ্রামে ব্যথা কমবে।
পার্শ্বিয়াল ছেঁড়াতে একটা গর্ত পাওয়া যাবে এবং সম্পূর্ণ ছেঁড়াতে মাংস ফুলা তৈরি হবে। পার্শি¦য়াল ছেঁড়াতে ব্যথার জন্য নাড়াতে পারবে না আর সম্পূর্ণ ছেঁড়ার কারণে নাড়াতে পারবে না। আঘাতের স্থানের রঙ পরিবর্তন হবে ও ফুলে যাবে।
মাংসপেশিতে রক্ত জমাট বাঁধাÑ
ষ খেলাধুলার সময় মাংসপেশিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।
ষ আঘাতে এই মাংসপেশিতে কী পরিমাণ রক্তক্ষরণ হবে তা নির্ভর করবে কী পরিমাণ রক্ত মাংসপেশিতে চলাচল করছিল, এই মাংসপেশি কেমন টানে ছিল।
ষ আঘাতের পরবর্তী ফলাফল নির্ভর করবে কোথায় এবং কী পরিমাণ আঘাত পেয়েছিল।
ষ মাংসপেশির ভেতরে
ষ মাংশপেশির মধ্যবর্তী স্থানে
রক্তক্ষরণ মাংসপেশির ভেতরে ছিঁড়ে যাওয়া বা চাপের কারণে হতে পারে।
জমাট রক্ত মাংসপেশির ভেতরে চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়।
মাংসপেশিতে ব্যথা ও কার্যকারিতা কমে যায়।
মাংসপেশির মধ্যবর্তী স্থানে রক্তক্ষরণ হয় পার্শ্ববর্তী রক্তনালী যখন ছিঁড়ে যায়Ñ একটা ফোলআপ তৈরি হয় রক্ত জমাট রাখার জন্য। সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর। কার্যকারিতাও তেমন হারায় না। সহজে আরোগ্য লাভ করে।
যে যে কারণে মাংসপেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়-
পর্যাপ্ত পরিমাণ ওয়ার্মআপ না হলে
ষ আগে আঘাতপ্রাপ্ত মাংসপেশি, যা পরিপূর্ণ চিকিৎসা হয়নি
ষ আগে আঘাতপ্রাপ্ত মাংসপেশি দিয়ে সেরেছে
ষ অতিরিক্ত ব্যবহৃত বা অবসন্ন মাংসপেশি
ষ টেন্স মাংসপেশি, যা সম্পূর্ণরূপে নাড়াচড়া করা যায় না।
ষ অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় মাংসপেশি, যা স্বাভাবিক সম্প্রসারণ করা যায় না।
চিকিৎসাÑ
সুস্থতা ও পুনর্বাসন নির্ভর করে কোন ধরনের, কী পরিমাণ এবং কোথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তার ওপর।
আঘাতপ্রাপ্ত মাংসপেশিতে রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য নিম্নলিািখত পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।
ষ বিশ্রাম
ষ ঠাণ্ডা সেঁক
ষ ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ
ষ আহত অঙ্গ উঁচুতে রাখবেন
ষ আহত অঙ্গ কোনো ধরনের চাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে (ক্র্যাচ/অ্যালবো ব্যাগ)
ষ ১ ঘণ্টা পর নিম্নলিখিত বিষয় পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
ষ ফোলা কমে গেছে কি না
ষ ফোলা ছড়িয়ে পড়েছে কি না
ষ আঙুল নাড়াতে পারে কি না।
এই সময় রোগ নির্ণয় খুব জরুরি। কেননা যদি মাংসের ভেতরে রক্তক্ষরণ অথবা সম্পূর্ণ মাংসপেশি ছিঁড়ে যায়। সম্পূর্ণ চিকিৎসার আগে ব্যায়াম শুরু করলে স্থায়ী ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। যদি অল্প আঘাত হয়, তাহলে ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ, গরম সেঁক ও ব্যায়াম করলেই সেরে যায়।
পরবর্তীকালেÑ
ঝঃধঃরপ ঊীবৎপরংব
ঈড়-ড়ৎফরহধঃরড়হ ঞৎধফরহম
ধীরে ধীর কাজের গতি ও পরিমাণ বাড়াতে হবে।
খেলার ধরন অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
যদি আশানুরূপ উন্নতি না হয় তবে বুঝতে হবে মাংসের ভেতরে ছিঁড়েছে। সার্জারি করতে হবে।
ষ জমাট রক্ত বের করতে
ষ ছেঁড়া মাংসপেশি জোড়া লাগাতে, তাহলে স্কার টিস্যু কম তৈরি হবে।
পুনর্বাসনÑ
অপারেশনের পর কখন ব্যায়াম ও কাজ শুরু করবে তা নির্ভর করে কোন মাংসপেশি এবং কত গভীরভাবে ছিঁড়েছে তার ওপর। যত আগে ব্যায়াম ও পুনর্বাসন শুরু করবে তত তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে।
যখন মাংসপেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণের সময় ব্যথা পাওয়া যায় না তখন বুঝতে হবে যা শুকিয়ে গেছে। যখন মাংসপেশি স্বাভাবিক কাজ ও স্বাভাবিক নাড়াচড়া করবে তখন থেকে ট্রেনিং প্রোগ্রাম শুরু করতে পারে। মাংসপেশির আঘাত সারাতে ৩ থেকে ১৬ সপ্তাহ লাগে।
কন্ডিশনিং ব্যায়াম ধীর ধীরে শুরু করতে হবে।
যত দিন ব্যায়াম করার সময় ব্যথা লাগে ততদিন প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশগ্রহণ করবে না।
মাংসপেশির আঘাত থেকে মুক্তির উপায়Ñ
ষ পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রস্তুতি। শারীরিক ও মানসিক।
ষ খেলার আগে ওয়ার্মআপ করে নিতে হবে।
ষ অতিরিক্ত গরম, ঠাণ্ডা, শুষ্ক আবহাওয়া ও উঁচু স্থানে খেলার শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
ষ নির্দিষ্ট মাংসপেশির নির্দিষ্ট ব্যায়াম করে প্রতিটি মাংসপেশির সম্প্রসারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
ষ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ষ ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাধ্যমে মাংসপেশির ক্ষমতা বাড়াতে হবে।

লেখক : কনসালট্যান্ট, অর্থোপেডিক্স বিভাগ
ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা।


আরো সংবাদ



premium cement
যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলি হামলায় আহত শিশুর মুখে ২০০ সেলাই বিষখালীতে মৎস্য বিভাগের অভিযান : জেলে নিখোঁজ, আহত ২ দক্ষিণ এশিয়ার যে শহরগুলোর তাপমাত্রা এখন সর্বোচ্চ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে অটোরিকশার ধাক্কায় হতাহত ৫ চৌগাছায় সিদ কেটে স্বর্ণের দোকানে চুরি দুর্নীতির মামলায় কৃষিমন্ত্রীকে আটক করল ইউক্রেন

সকল